শিশুদের ভালোবাসার প্রতিদান পাচ্ছেন রাশফোর্ড
করোনার মধ্যে শিশুদের ভালোবাসতে শিখিয়েছিলেন মার্কাস রাশফোর্ড। ব্রিটেনের রানীর কাছ থেকে তাঁর প্রতিদান পেতে যাচ্ছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড। রাশফোর্ডকে এমবিই (মেম্বার অব দ্য মোস্ট এক্সিলেন্ট অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার) সম্মাননায় ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন।
করোনা মহামারির মধ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কথা ভেবেছিলেন রাশফোর্ড। এসব শিশুরা স্কুলে পড়াশোনা করতে যাওয়ার বিনিময়ে দুপুরের খাবার পেত। তখন স্কুল বন্ধ থাকায় বন্ধ হয়ে যায় দরিদ্র শিশুদের খাবারের উৎস। এগিয়ে এসেছিলেন রাশফোর্ড।
২২ বছর বয়সী এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড ফেয়ারশেয়ার দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ম্যানচেস্টার এলাকায় ওই সব শিশুদের খাবার বিতরণ করেন। শুধু কী তাই? গত জুনে নিম্ন আয়ের পরিবারের বিদ্যালয় পড়ুয়া শিশুদের বিনা মূল্যে খাবার দেওয়ার প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিল বরিস জনসন প্রশাসন। আবেগঘন এক চিঠিতে এমন সিদ্ধান্ত কতটা অযৌক্তিক ও অমানবিক—রাশফোর্ড তা বুঝিয়ে বলার এক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত পাল্টায় ব্রিটিশ সরকার।
সাম্প্রতিক সময়ে আরও একটি পদক্ষেপ নেন রাশফোর্ড। ইংল্যান্ডের বড় বড় খাবারের ব্র্যান্ডের সঙ্গে জুটি বেঁধে নানা জায়গায় শিশুদের দারিদ্রতা মোচনে কাজ করছেন।
সম্মানসূচক উপাধি পাওয়ায় রাশফোর্ড খুশি হলেও আসল কাজটাই বাকি বলে মনে করেন তিনি। সেটি হলো, শিশুদের খাবারের সমস্যা ও দারিদ্রতা। এ জন্য ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চান রাশফোর্ড। বিবিসি ব্রেকফাস্টকে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে এটা খুশির উপলক্ষ্য। তবে আমি মনে করি নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে যাত্রাটা কেবল শুরু করেছি। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাই, অন্তত অক্টোবর পর্যন্ত (স্কুলে পড়ার বিনিময়ে খাবারের প্রকল্প) এর মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ করব। পরিবারগুলোর এটা দরকার।’
গত মৌসুমে ৪৪ ম্যাচে ২২ গোল করা রাশফফোর্ড এ মৌসুমেও ভালো শুরু পেয়েছেন। মাঠ ও মাঠের বাইরে এ বয়সেই তিনি ব্রিটিশদের অন্যতম ‘রোল মডেল।’ গত মাসে পেশাদার ফুটবলারদের সংগঠন থেকে পুরষ্কার পান তিনি।
শৈশবে তাঁর রোল মডেল ছিলেন ওয়েন রুনি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরা। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে পাল্টেছে রোল মডেল, ‘টিভি খুলে শুধু ফুটবল দেখতাম। ফুটবলাররাই ছিল আমার নায়ক। কৈশোরে পা রাখার পর ধীরে ধীরে মা হয়ে গেল আমার রোল মডেল। আমি মনে করি ফুটবলের বাইরে মানুষের কথা শোনা গুরুত্বপূর্ণ। মনে হয় প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখছি।’
বাকিংহাম প্যালেসে সম্মানসূচক উপাধিতে ভূষিত হওয়ার সময় রাশফোর্ডের সঙ্গে তাঁর মা–ও থাকবেন। ইউনাইটেড তারকা মজা করে বলেন, মা ছাড়া অন্য কাউকে সঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত নিলে ‘বড় বেকায়দায়’ পড়ে যেতেন। রাশফোর্ড কিংবা তাঁর মা কষ্মিকনকালেও ভাবেননি এমন কোনো সম্মান পাবেন তাঁরা। অকষ্মাৎ পেয়ে বসায় আরও ভালো লাগছে তাঁদের।