রিয়ালের খেলোয়াড়কে লাল কার্ড না দেখানোয় ক্ষোভ রাকিতিচের
২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পরও তিন গোল খেয়ে হার, কীভাবে সহ্য করা সম্ভব?
ইভান রাকিতিচও সহ্য করতে পারছেন না। কাল নিজেদের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও হারতে হয়েছে রাকিতিচের দল সেভিয়াকে। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গোল করে রিয়ালের হয়ে আরও একবার নায়কের ভূমিকায় করিম বেনজেমা।
নিশ্চিত জয়ের দেখা পেতে পেতে হেরে যাওয়ার বিরক্তি তো আছেই, প্রতিপক্ষের নামটা রিয়াল মাদ্রিদ বলেই কিনা রাকিতিচের কষ্ট হচ্ছে আরও। রাকিতিচ নিজেও যে কয়েক বছর আগে বার্সেলোনাতেই খেলতেন!
রাকিতিচের কাছে মনে হয়েছে, রেফারি কুয়াদ্রা ফার্নান্দেজ এ ম্যাচে নিরপেক্ষ ছিলেন না। রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার এক ঘটনায় ধারণাটা আরও পোক্ত হয়েছে রাকিতিচের। ম্যাচের ৪০ মিনিটে সেভিয়ার ফরাসি ফরোয়ার্ড অ্যান্থনি মার্শিয়ালকে পেছন থেকে বাজেভাবে ট্যাকল করে ফেলে দিয়েছিলেন কামাভিঙ্গা। ট্যাকল করার সময় বলের দখল পেয়েছেন বলে মনে হয়নি। মার্সিয়াল পরে আর খেলতে পারেননি, তাঁর জায়গায় মাঠে নামানো হয় স্প্যানিশ স্ট্রাইকার রাফা মিরকে। এমন ফাউলের পরও কামাভিঙ্গাকে কোনো কার্ড দেখানো হয়নি।
এর আগেই একটি হলুদ কার্ড দেখা রিয়াল মিডফিল্ডারকে তখন হলুদ কার্ড দেখালেই ১০ জনের দল হয়ে যেত রিয়াল। রাকিতিচের কাছে মনে হচ্ছে, অমন জঘন্য ট্যাকলের পর হলুদ তো বটেই লাল কার্ডও দেখানো যেত কামাভিঙ্গাকে, ‘কামাভিঙ্গাকে লাল কার্ড দেখানোর সিদ্ধান্তটা খুবই সহজ হতো। কারণ সে বলের স্পর্শই পায়নি। আমি বুঝলাম না, রেফারির কেন মনে হলো এটা ফাউল নয়। এমন সিদ্ধান্তের কোনো দরকারই ছিল না। আমি বুঝতেই পারছি না। কারণ, আমার মনে হয়, এটা সরাসরি লাল কার্ড দেখানোর মতো অপরাধ।’
হ্যান্ডবলের কারণে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের যে গোলটা বাতিল হলো, সেটা অবশ্য ন্যায্য বলেই মনে হয়েছে এই ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডারের, ‘আর আমার মনে হয়, ভিনিসিয়ুসের হ্যান্ডবলের ব্যাপারটা বেশ স্পষ্ট ছিল। হাতে অল্প লাগল না বেশি লাগল, সেটা ব্যাপার না, ওর হাতে অল্পই বল লেগেছিল।’
রিয়ালের বিপক্ষে গোলের সুযোগ নষ্ট করলে এর মূল্য চোকাতেই হবে, এটা জানেন রাকিতিচ। সেটাই হয়েছে গত রাতে, ‘আমি অনেক রাগান্বিত, কষ্ট পেয়েছি। প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলেছি আমরা। কিন্তু তাই বলে আপনি মাদ্রিদকে এক ইঞ্চি জায়গাও দিতে পারেন না। কারণ, অমনটা করলেই রিয়াল আপনাকে শাস্তি দেবে। ব্যাপারটা লজ্জার। কারণ, আমরা ম্যাচটা প্রায় নিজেদের পকেটে পুরে ফেলেছিলাম।’
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রিয়াল এক গোল করলেও ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল সেভিয়া, ‘আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবেই হচ্ছিল সব। স্কোরলাইন যখন ২-১ ছিল, তখন বেশ কিছু প্রতি–আক্রমণের সুযোগ নষ্ট করেছি। আর অমন সুযোগ নষ্ট করলে রিয়াল আপনাকে শাস্তি দেবেই। আমার রাগ লাগছে। কারণ, আমরা ম্যাচ জেতার জন্য অনেক কিছুই করেছিলাম। আমরা বেশ ভালোভাবে প্রেস করেছি, কিন্তু এটা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। পরের ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করতে হবে।’
এ জয়ে ৩২ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগে শীর্ষস্থান আরও শক্ত করেছে রিয়াল। হেরে তিন নম্বরে নেমে গেছে সেভিয়া, রিয়ালের সমান ম্যাচ খেলে এখন তাদের পয়েন্ট ৬০। ৩০ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা।