মেসি শুধু আর্জেন্টিনার নয়, বিশ্বের সম্পদ
শিরোপার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, তবে শিরোপা তো শিরোপাই! চার দিন আগে ইতালিকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ‘লা ফিনালিসিমা’ জিতেছে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার পর ১১ মাসে দুই শিরোপা হয়ে গেল। উন্মাদনার রেশ থাকতে থাকতেই কাল আরেকবার আর্জেন্টাইনদের উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছেন লিওনেল মেসি।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১১০তম এস্তোনিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ নিয়ে আর্জেন্টিনায় এমনিতে হয়তো তেমন রোমাঞ্চ থাকত না, কিন্তু আর্জেন্টিনার ৫-০ গোলের জয়ে পাঁচটি গোলই করে ম্যাচটাকে আলোচিত করে রেখেছেন মেসি। এমন ম্যাচের পর তো মেসি-বন্দনাই হওয়ার কথা! হচ্ছেও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তো হচ্ছেই, আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিও মেতেছেন মেসির প্রশংসায়।
গতকালই নিজের ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেন ও সব মিলিয়ে ২২তম গ্র্যান্ড স্লাম জেতা ৩৬ বছর বয়সী নাদালের সঙ্গে মেসির তুলনা টেনেছেন স্কালোনি। আর প্রশংসায় হয়ে পড়েছেন ভাষাহীন। আর মেসি কী বললেন? ইনস্টাগ্রাম পোস্টে নিজের ব্যাপারে কিছুই বললেন না আর্জেন্টিনা অধিনায়ক, তাঁর যত তৃপ্তি শুধু দলের পারফরম্যান্স নিয়ে।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনঃ
আর্জেন্টিনা দলে বিশ্রাম নেই শুধু মেসির
ইউরো জিতেও ইতালির বিশ্বকাপে জায়গা না পাওয়া ‘পাগলামি’
‘আমাদের জন্য মৌসুমের শেষটা এর চেয়ে ভালো হতে পারত না। ফিনালিসিমা জয়ের পর বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে আরও কিছু মিনিট যোগ হলো। মাঠে যাঁরা এসেছেন এবং দূর থেকে সমর্থন দিয়ে গেছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। আপাতত কিছুদিনের বিরতিতে যাচ্ছি আমরা, শিগগিরই ফিরে আসব। সবাইকে আলিঙ্গন’—ম্যাচ নিয়ে মেসির ছোট্ট পোস্ট।
মেসি আর আর্জেন্টিনার জন্য মৌসুমের শেষ বটেই। ১১ জুন মেলবোর্নে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের সঙ্গে একটা প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল আর্জেন্টিনার, কিন্তু ফিফা ব্রাজিলের সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের স্থগিত ম্যাচটি আগামী সেপ্টেম্বরে খেলার নির্দেশ দেওয়ায় জুনের প্রীতি ম্যাচটি বাতিল করেছে আর্জেন্টিনা। আগস্টে নতুন ক্লাব মৌসুম শুরু হওয়ার আগে তাই মেসিদের এখন ছুটি।
ছুটিতে যাওয়ার আগে কী দারুণ এক স্মৃতিই না উপহার দিয়ে গেছেন মেসি! হোক না প্রতিপক্ষ এস্তোনিয়া, এক ম্যাচে পাঁচ গোল তো আর প্রতিদিন হয় না! মেসিকে প্রতিদিন অনুশীলনে কাছ থেকে দেখায় অভিজ্ঞ স্কালোনির চোখেও তাই অবিশ্বাস, ঠোঁটেও শব্দ আসে না।
আর্জেন্টিনা কোচ ম্যাচের পর বললেন, ‘আর কী বলব বুঝতে পারছি না। ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা কঠিন। অনেকটা রাফায়েল নাদালের মতো (এই বয়সেও রেকর্ডগড়া গ্র্যান্ড স্লাম জেতার মতো)। এখানে আর কী-ই বা বলতে পারেন আপনি! ওকে বর্ণনা করার কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া কঠিন, বিশেষ করে ও যা করে দেখায় সেটি। এটা অনন্য। ওকে এই দলের সঙ্গে পাওয়া, ওকে অনুশীলন করানো, ওর আচরণ, জাতীয় দলকে ওর প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা এক আনন্দের ব্যাপার।’
শব্দের খোঁজে এরপর যা বলেছেন স্কালোনি, সেটি হয়তো বিশ্বজুড়ে নিখাদ ফুটবলপ্রেমীদেরই মনের কথা, ‘আমরা শুধু ওকে ধন্যবাদই দিতে পারি। আমি মনে করি ও শুধু আর্জেন্টিনার সম্পদ নয়, বিশ্বের সম্পদ। যেদিন থেকে ও আর খেলবে না, ওর জন্য মনে পুড়বে। সে কারণে আমি শুধু চাই, ও আরও খেলে যাক, সবাই ওর খেলা উপভোগ করুক, ওকে আগলে রাখুন। কারণ ওকে খেলতে দেখা এক অপার আনন্দ।’