২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

অনেক ভাষায় কথা বলতে পারেন যাঁরা

একাধিক ভাষা জানেন এমন ক্রীড়াবিদ কম নয়ফাইল ছবি

খেলোয়াড়দের মাঠের কৃতিত্ব নিয়ে আমরা কথা বলি। ফুটবলার হলে কে কয়টা গোল করেছেন, ক্রিকেটার হলে কার রান কত, উইকেট কত, ব্যাটিং বা বোলিং গড় কত! কিন্তু একজন খেলোয়াড়ের কৃতিত্বের অনেক দিক থাকতে পারে, যেগুলো অনেক সময়ই দৃশ্যমান হয় না সাধারণ মানুষের সামনে।

দুনিয়াতে এমন অনেক ক্রীড়াবিদই আছেন, যাঁরা একাধিক ভাষায় কথা বলতে পারেন। সেগুলো তাঁরা আয়ত্ত করেছেন অনেকভাবেই। হয়তো নিজেদের কৌতূহল থেকে, হয়তো কোনো ভাষার প্রতি ভালোবাসা থেকে। নিরন্তর এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছুটতে ছুটতেও অনেকে ভিনদেশি ভাষা শিখে ফেলেছেন।

২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি ভাষাশহীদদের স্মরণ করছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের দিনটি এখন আর কেবল বাঙালি বা বাংলাভাষাভাষীর নেই, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মোড়কে দিনটি এখন দুনিয়ার সব ভাষার মানুষেরই। আজকের এদিনে খেলার দুনিয়ার এমন কয়েক বিখ্যাত ক্রীড়াবিদকে আমরা সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দেব, যাঁরা নিজেদের মাতৃভাষা ছাড়াও অনর্গল বেশ কয়েকটি ভাষায় কথা বলতে পারেন।

জোকোভিচ জানেন ১১টি ভাষা
ছবি: এএফপি

নোভাক জোকোভিচ

টেনিসের সর্বকালের সেরাদের তালিকা করলে তাঁর নাম আসবেই। ২০টি গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন। কিছুদিন আগেই করোনার টিকা নেওয়া না-নেওয়া নিয়ে সমস্যাটা না বাঁধলে হয়তো ২১তম গ্র্যান্ড স্লামও নিজের করে নেওয়ার পথে এগোতে পারতেন। যা-ই হোক, সার্বিয়ান এই টেনিস তারকা ১১টি ভাষায় কথা বলতে পারেন।

এ মুহূর্তে বিশ্ব ক্রীড়ায় জোকোভিচই খুব সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ভাষা জানেন। নিজের মাতৃভাষা সার্বিয়ান ছাড়াও তিনি জানেন ইংরেজি, জার্মান, ইতালীয়, ফরাসি, চীনা, স্প্যানিশ, আরবি, রুশ, পর্তুগিজ ও জাপানি ভাষা।

এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো, কেউ যদি মনে করেন, জোকোভিচ তাঁর মাতৃভাষা সার্বিয়ানের মতো করেই অনর্গল বাকি ভাষাগুলোতে কথা বলতে পারেন, তাহলে কিছুটা ভুলই হবে। তিনি বাকি ভাষাগুলোর কোনোটা একটু বেশি জানেন, কোনোটা কম। কিছু কথাবার্তা তিনি হয়তো চালিয়ে নিতে পারেন, তবে অনর্গল অবশ্যই নয়। তবে এটা ঠিক, জোকোভিচ তাঁর জানা কিছু ভাষায় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কাজ চালানোর মতো কথা বলতে পারেন।

লুকাকু বিদেশি ভাষা শিখতে পছন্দ করেন
ফাইল ছবি

রোমেলু লুকাকু

ইন্টার মিলানে যখন ছিলেন, বেলজিয়ান তারকা রোমেলু লুকাকু ইতালীয় ভাষাটা মোটামুটি রপ্ত করেছেন। আগেও মাতৃভাষা ফরাসি ছাড়াও আরও ছয়টি ভাষা শিখেছেন তিনি। বিভিন্ন ভাষা শেখার ব্যাপারে এ তারকার নিজস্ব একটা চিন্তাভাবনা আছে, ‘আমার কাছে সতীর্থদের সঙ্গে মনপ্রাণ খুলে কথা বলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাদের বোঝার জন্যও তাদের ভাষা শেখাটা জরুরি। প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব কিছু মজা আছে, মনের ভাব প্রকাশের নিজস্ব কিছু ধরন আছে। সাবটাইটেল দিয়ে সবকিছু বোঝা সম্ভব নয়।’

লুকাকু ফরাসি ও ইতালীয় ছাড়াও কঙ্গোলিজ ভাষা, ফ্লেমিশ (ডাচের একটি উপভাষা), ইংরেজি, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ ও জার্মান ভাষায় কথা বলতে পারেন। নিজের পরিবারের সঙ্গে তিনি কঙ্গোলিজ ভাষাতেই কথাবার্তা বলেন।

ইব্রা সুইডিশ ভাষার সঙ্গে বসনিয়ান ভাষাতেও অনর্গল, ভালো জানেন ইংরেজিও
ছবি: রয়টার্স

জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ

সুইডিশ এই ফুটবল তারকা বসনিয়ান বংশোদ্ভূত। সে কারণে বসনিয়ান ভাষাটাও খুব ভালো বলতে পারেন। সেই সঙ্গে সুইডেনের নাগরিক হওয়ার সুবাদে সুইডিশ ভাষা তো আছেই। এসি মিলানের এই তারকা খেলেছেন ইউরোপের বিভিন্ন লিগে, খেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের লিগেও। ইংরেজি ভাষাটা যথেষ্টই আয়ত্তে তাঁর। এ ছাড়া ইতালীয়, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষায় টুকটাক কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। একটি তথ্য এখানে দেওয়া যায়, ইব্রা বিশেষায়িত ইশারার ভাষাতেও (সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ) পারদর্শী।

আর্তেতার বেশ কয়েকটি ভাষা এক সঙ্গে মিলিয়ে বলার একটা ক্ষমতা আছে
ছবি: রয়টার্স

মিকেল আর্তেতা

সাবেক স্প্যানিশ ফুটবল তারকা আর্তেতার একটা দারুণ ‘দক্ষতা’ আছে। তিনি এক ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষা লাগিয়ে একটা জগাখিচুড়ি তৈরি করে কথা বলতে পারেন। ফুটবল মাঠে এটি দারুণ কাজে দেয় প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করতে। আর্সেনালের কোচ হিসেবে ডাগআউট থেকে এভাবেই তিনি নিজ দলের খেলোয়াড়দের দিকনির্দেশনা দেন। স্প্যানিশ ছাড়াও তিনি কাতালান, ইংরেজি, বাস্ক ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন। ফরাসি, ইতালীয় ও পর্তুগিজেও তিনি পারদর্শী।

ফরাসি ভাষা ছাড়াও ওয়েঙ্গার কথা বলতে পারেন ইংরেজি, জার্মান, স্প্যানিশ, ইতালীয় ও জাপানি ভাষায়।
ফাইল ছবি

আর্সেন ওয়েঙ্গার

আর্সেনালের সাবেক ফরাসি কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার ফুটবলের আরেক বহুভাষাবিদ। তিনি এ মুহূর্তে ফিফার বৈশ্বিক ফুটবল উন্নয়ন বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। ফরাসি ভাষা ছাড়াও ওয়েঙ্গার কথা বলতে পারেন ইংরেজি, জার্মান, স্প্যানিশ, ইতালীয় ও জাপানি ভাষায়।

২০১৩ সালে ওয়েঙ্গার দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার পাঠকদের ভোটে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের প্রথম পাবলিক ল্যাঙ্গুয়েজ চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হন।