বিদায় বলে দিলেন ডি রসি
>বয়স হয়ে গিয়েছে ৩৬। তাঁর জায়গায় এর মধ্যে এসে গিয়েছেন তরুণ তারকারা। সরে তাই দাঁড়াতেই হতো। ইতালির কিংবদন্তি মিডফিল্ডার ড্যানিয়েল ডি রসি বুটজোড়া তুলে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন অবশেষে
অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ইতালির কিংবদন্তি মিডফিল্ডার ড্যানিয়েল ডি রসি। বোকা জুনিয়র্সের হয়ে সবশেষ খেলা এ তারকা গতকাল আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এএস রোমায় ডি রসিকে বলা হতো 'ইল ক্যাপিতানো ফিউতুরো’—আমাদের ভবিষ্যৎ অধিনায়ক।
তাঁর একটু হলেও দুর্ভাগ্য, ফ্রান্সেসকো টট্টির সময়ে জন্মেছিলেন। টট্টিই গত দুই দশকের অধিকাংশ সময় রোমাকে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন, আর তাঁর যোগ্য সহকারী হিসেবে বছরের পর বছর সাহায্য করেছেন ডি রসি। রোমার কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে ক্যারিয়ারের শেষ দিকে মনোমালিন্য করে দু বছর আগে অবসর নিয়েছিলেন টট্টি। টট্টি যাওয়ার পর ডি রসিও বুঝতে পারেন, প্রিয় ক্লাবে আর হয়তো নিজের জায়গা ধরে রাখতে পারবেন না। কিন্তু টট্টির মতো ক্যারিয়ারের শেষ টানার ইচ্ছে তাঁর ছিল না।
১৮ বছরে মোট ৭১৭টা ম্যাচ খেলে রোমা ছাড়েন রসি। এর চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড আছে শুধু টট্টিরই। রোমা ছাড়া জীবনে অন্য কোনো ক্লাবের জার্সি গায়ে জড়ালে সেটা আর্জেন্টিনার ক্লাব বোকা জুনিয়র্সের। ক্যারিয়ারের শেষে সে ইচ্ছেটা পূরণ করেই তবে অবসর নিলেন ডি রসি।
রোমাকে কত ভালোবাসতেন, একটা উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে। গোটা ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। শতাব্দীর শুরুতে টট্টি তো তাও একবার রোমার হয়ে লিগ জিতেছিলেন। ডি রসির কপালে সেটাও জোটেনি। আঠারো বছরের রোমা ক্যারিয়ারে দুবার কোপা ইতালিয়া আর একবার সুপারকোপা ছাড়া আর কিচ্ছু জেতেননি। তবে ক্লাব জীবনে ডি রসির আক্ষেপ একটু হলেও মিটেছে জাতীয় দলে এসে। ২০০৬ সালে ইতালির বিশ্বকাপজয়ী দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন তিনি।
গত জুলাইয়ে রোমা থেকে বোকা জুনিয়র্সে যোগ দিয়েছিলেন। নতুন ক্লাবে শুরুটাও হয়েছিল স্বপ্নের মতো। অভিষেক ম্যাচেই গোল করেছিলেন। কিন্তু গোটা মৌসুমে লিগে পাঁচটার বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। বয়স হয়ে যাচ্ছিল, তা ছাড়া দলে আছেন অগাস্টিন আলমেন্দ্রা, নিকোলাস কাপালদো, হোরমান কামপুজানো, ইভান মারকোনের মতো তরুণ মিডফিল্ডাররা। দলে জায়গা ধরে রাখাটা ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছিল ডি রসির জন্য। তাই অবসরের সিদ্ধান্ত।
অবসরের ঘোষণা দেওয়ার সময়েও সেটাই বলেছেন, ‘আমার বয়স এখন ৩৬, খুব দ্রুতই অবসরে যেতে হতো আমাকে। বয়স যদি ২৫ হতো, তাহলে হয়তো আরও খেলা চালিয়ে যেতাম। আমার এখন পরিবারকে সময় দেওয়া দরকার। আমার মেয়ের আমাকে দরকার। অবসর আমাকে নিতেই হতো, এখনই সে সময়টা সঠিক বলে মনে হয়েছে।’