তেমন কিছুই চাননি তিন আফ্রিকান

বাফুফের সঙ্গে গতকালই প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেছিলেন (বাঁ থেকে) সামাদ, বাঙ্গুরা ও শিগোজি। কাল বাফুফে ভবনে l সৌজন্য ছবি
বাফুফের সঙ্গে গতকালই প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেছিলেন (বাঁ থেকে) সামাদ, বাঙ্গুরা ও শিগোজি। কাল বাফুফে ভবনে l সৌজন্য ছবি

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিলে বিনিময়ে কী পাবেন, তাঁদের ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া কি নেই?
তিন আফ্রিকান কাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় তেমন কোনো দাবি জানাননি। বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার সুযোগটাকেই বড় করে দেখছেন ইসমাইল বাঙ্গুরা, সামাদ ইউসুফ ও কিংসলে শিগোজি। মনের মধ্যে চাওয়া থাকলেও মুখে অন্তত নেই। ফাঁকা সময়ে বাড়ি গেলে বিমানের টিকিট পাবেন কি না, মূলত এটিই তাঁরা জানতে চেয়েছেন।
চাওয়াটা পূরণ করতে তাৎক্ষণিক আশ্বাসও দিয়ে ফেলেছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, ‘ওদের বলে দিয়েছি, বাংলাদেশ দলের হয়ে ভালো খেললে এবং গোলটোল করলে একটি কেন আমরা দুটি টিকিটও দিতে পারি। এটা কোনো ব্যাপারই নয়।’
বাফুফে একটি-দুটি টিকিট হয়তো দেবে, তবে এর বেশি কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি নয়। দেশি খেলোয়াড়েরা যেমনটি, এঁরাও তাই পাবেন। ফেডারেশনের মনোভাব জেনে দর-কষাকষির পথে হাঁটেননি তিন আফ্রিকান। মোহামেডানের গিনিয়ান স্ট্রাইকার বাঙ্গুরা, আবাহনীর ঘানাইয়ান ডিফেন্ডার ইউসুফ ও শেখ রাসেলের নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার শিগোজি নাগরিকত্ব পেলেই খুশি থাকবেন বলে মনে হচ্ছে। তিনজনের সঙ্গে নাগরিকত্ব-বিষয়ক এই আলোচনায় ছিলেন জাতীয় দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুও। বাফুফের পক্ষ থেকে তিন বিদেশি ফুটবলারকে পরিষ্কার জানিয়েও দেওয়া হয়েছে যে বাংলাদেশ দলে খেললে কী সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পাবেন।
স্থানীয় খেলোয়াড়েরা বর্তমানে জাতীয় দলের ক্যাম্পে মাসে হাতখরচ হিসেবে ১৫ হাজার টাকা পান, কখনো ১০ হাজার টাকা। সেটিই পাবেন এই খেলোয়াড়েরা। জাতীয় দল ভালো করলে ঘোষিত বোনাসও পাবেন। বাঙ্গুরা জানতে চেয়েছেন, এ দেশের নাগরিকত্ব নিলে ঘরোয়া ফুটবলে তাঁরা স্থানীয় না বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে গণ্য হবেন? দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখতে পারবেন?
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক জানিয়ে দিয়েছেন, দ্বৈত নাগরিকত্বে কোনো আপত্তি নেই। পাশাপাশি তাঁরা ঘরোয়া ফুটবলে স্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবেই গণ্য হবেন।
তিনজনের মধ্যে আবাহনীর সামাদ ইউসুফ বাংলাদেশের এসেছেন সবার আগে, ২০০৮ সালে। ফিফার নিয়মে কোনো দেশের নাগরিকত্ব পেতে সে দেশে পাঁচ বছর থাকতে হবে। শুধু সামাদের শর্তই এখন পূরণ হয়েছে, বাকি দুজনের হবে সেপ্টেম্বরে। বাফুফের কাছে চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে সামাদ এই প্রতিবেদককে বললেন, ‘আমরা কোনো চাহিদার কথা বলিনি। ব্যক্তিগতভাবে তেমন চাহিদাও নেই আমার। নাগরিকত্বের ব্যাপারটা প্রক্রিয়াধীন। আমরা পাসপোর্টের কপি-টপি দিলাম, এসব নিয়েই কাজটা আগে এগিয়ে যাক।’
সামাদ চুপচাপই ছিলেন। বাঙ্গুরার ছিল নানা প্রশ্ন, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিলে কোনো সমস্যা হবে কিনা, স্ত্রী-সন্তানদের ঢাকায় আনা যাবে কি না? ‘এগুলো কোনো সমস্যাই নয়’—বলেছে বাফুফে। চটপটে শিগোজি জানতে চান বাংলাদেশ দলে খেললে দৈনিক পকেটমানি কত পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশের ফুটবলাররা বিদেশ সফরে থাকলে দৈনিক ২৫-৩০ ডলার করে পান। এটা শুনে শিগোজি জানান, নাইজেরিয়ান জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা আরও অনেক বেশি পান। যদিও এ নিয়ে দর-কষাকষি তিনি করেননি।