২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

টেন হাগের জন্য এখনই খারাপ লাগছে ইউনাইটেডের সাবেকের

এরিক টেন হাগের হাতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভবিষ্যৎছবি: স্কাই স্পোর্টস

শুরুতেই নেতিবাচক কথা আরকি!

এখনো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দায়িত্বই নেওয়া হলো না এরিক টেন হাগের। আয়াক্সের মৌসুমটা শেষ করে আগামী মৌসুম থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, পল পগবা, মার্কাস রাশফোর্ডদের ক্লাবটির দায়িত্ব নেবেন ৫২ বছর বয়সী ডাচ কোচ। তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জগুলো কী কী, হাতে কী অস্ত্র পাবেন, নতুন কোন খেলোয়াড় কিনবেন, কাকে বাদ দেবেন—অনেক হিসাব-নিকাশই তো চলছে। কিন্তু এর মধ্যে নেতিবাচক কথাও শোনা যাচ্ছে।

টেন হাগ দায়িত্ব নেওয়ার খবরের কিছুক্ষণ পরই ইংলিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানাল, এখনো ক্লাবে যোগ না দেওয়া টেন হাগকে নিয়েই সংশয় আছে ইউনাইটেডের ড্রেসিংরুমে! এর মধ্যে ইউনাইটেডের সাবেক রাইটব্যাক গ্যারি নেভিলও জানিয়ে দিলেন, ইউনাইটেডে যে বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে যত কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে টেন হাগকে, সেটি ভেবে টেন হাগের জন্য খারাপই লাগছে তাঁর।

গ্যারি নেভিল
ছবি: এএফপি

২০১৩ সালে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অবসরের পর থেকে ইউনাইটেডের সময়টা ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি কেটেছে। ডেভিড ময়েসের পর লুই ফন গাল ব্যর্থ, জোসে মরিনিও দু-একটি শিরোপা এনে দিলেও ক্লাবের বোর্ডের কাছ থেকে সেভাবে সমর্থন পাননি বলে অভিযোগ।

এরপর উলে গুনার সুলশারের অধীন ছুটতে শুরু করতেই ইউনাইটেডের চাকা খসে গেল। তাঁর পর রালফ রাংনিক এসেছিলেনই অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে, অসাধারণ কিছু করে আর দায়িত্বটা পাকাপাকিভাবে নেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে টেন হাগে ভরসা খুঁজছে ইউনাইটেড।

কদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল, কাল এসেছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা—টেন হাগই আগামী মৌসুম থেকে ইউনাইটেডের দায়িত্ব নেবেন। চুক্তি প্রাথমিকভাবে তিন বছরের, দুই পক্ষ সন্তুষ্ট থাকলে আরও এক বছর বাড়তে পারে। আয়াক্সে যে অসাধারণ ফুটবলে ইউরোপ রাঙিয়েছেন টেন হাগ, সেটি ইউনাইটেডেও দেখাতে পারলে চুক্তি যে নবায়ন হয়ে যাবে, তা নিয়ে সংশয় সামান্যই।

একটা ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফিরে আসবে, তারা আবার সফল হবে। কারণ, দুনিয়াটা গোল আর এই ক্লাব অনেক বড়, অসাধারণ একটা ক্লাব
ম্যান ইউনাইটেডের সাবেক রাইটব্যাক গ্যারি নেভিল

সংশয় যা, তা এতটুকুই যে টেন হাগ ইউনাইটেডে নিজের কাজের ক্ষেত্রে পুরো স্বাধীনতা পাবেন তো? ক্লাবের বোর্ড তাঁকে সাধ্যমতো সাহায্য করবে তো? তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, ফার্গুসনের অবসরের পর থেকেই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা ইউনাইটেডের ড্রেসিংরুমের দৌরাত্ম্য সামলাতে পারবেন টেন হাগ?

গতকাল টেন হাগ দায়িত্ব নেওয়ার পরই দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে লেখা এল, ৫২ বছর বয়সী ডাচ কোচের ব্যাপারে ইউনাইটেডের ড্রেসিংরুম খুব একটা রোমাঞ্চিত নয়!

এর আগে মরিনিওর সঙ্গে কয়েকজন খেলোয়াড়ের ঝামেলা তো বলতে গেলে প্রকাশ্যই ছিল, সুলশারও ড্রেসিংরুম সমঝে চলেছেন বলে গুঞ্জন। ক্লাবের কিংবদন্তি হওয়ায় তাঁর সুবিধা হয়েছে, পাশাপাশি একটু ছাড় দিয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন সুলশার, এমনই শোনা যেত। কিন্তু শেষ দিকে ক্লপ-গার্দিওলাদের তুলনায় ফুটবল–কৌশলে তাঁর দারিদ্র্যই সুলশারের কাল হয়েছে, ইউনাইটেডের ড্রেসিংরুমও এ নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল বলে শোনা যায়।

আবার রাংনিকের ক্ষেত্রে গুঞ্জন, জার্মান কোচের কোচিং পদ্ধতি ইউনাইটেডের অনেক খেলোয়াড়ের কাছে সেকেলে। এই ড্রেসিংরুমই এখন টেন হাগকে কীভাবে বরণ করে নেয়, টেন হাগই–বা কতটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, সেটি এক বড় প্রশ্ন বটে। ইউনাইটেডে টেন হাগের সাফল্যের সবচেয়ে বড় শর্তও হয়তো সেটিই!

কঠিন এই চ্যালেঞ্জ সামনে বলেই টেন হাগের জন্য হয়তো খারাপ লাগছে নেভিলের। ইউনাইটেডের সাবেক রাইটব্যাক কাল ক্লাবে টেন হাগের নিয়োগের খবরের প্রতিক্রিয়ায় মাঠে ও মাঠের বাইরে ক্লাবের দৈন্যের কথাই প্রথমে তুলে এনেছেন, ‘আমার হিসাবে, এই মুহূর্তে খেলোয়াড়েরা অনেক দিকে আরও ভালো করতে পারত। উলে গুনার সুলশার আরও অনেক কাজ আরেকটু ভালোভাবে করতে পারত, রালফ রাংনিকও হয়তো আরও কিছু কাজ আরও ভালোভাবে করতে পারতেন। তবে একেবারে গোড়া থেকে দেখলে ক্লাবটা মাঠে-মাঠের বাইরে একেবারে পঙ্গু হয়ে গেছে!’

তবে এখান থেকেই ইউনাইটেড উঠে দাঁড়াবে, এ বিশ্বাসও আছে নেভিলের। সেটি ইউনাইটেড এত বড় ক্লাব বলেই। এই শতাব্দীর শুরুর দিকে অনেক পিছিয়ে পড়া লিভারপুল ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীন যেভাবে ফিরে এসেছে, সে উদাহরণও টেনে এনেছেন নেভিল।

‘একটা ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফিরে আসবে, তারা আবার সফল হবে। কারণ, দুনিয়াটা গোল আর এই ক্লাব অনেক বড়, অসাধারণ একটা ক্লাব। দীর্ঘ মেয়াদে তাদের ফিরে আসা নিয়ে আমার সংশয় নেই, তাতে ৫ বছর, ১০ বছর বা ১৫ বছরই লাগুক না কেন। যেমন লিভারপুল যে একসময় ফিরে আসবে, এ নিয়েও আমার সংশয় ছিল না। আমার শুধু তাঁর (এরিক টেন হাগ) জন্য খারাপ লাগছে’ - বলেছেন নেভিল।