কামরুলের দুর্দান্ত ফ্রিকিক গোল, মোহামেডানের জয়

ফ্রিকিকে দুর্দান্ত এক গোল করেছেন মোহামেডানের কামরুল ইসলাম (৩ নং)ছবি: শামসুল হক

বসুন্ধরা কিংস শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছে আগেই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অন্য বড় দলগুলোর মধ্যে এখন দ্বিতীয় সেরা হওয়ার লড়াই। আজ ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় হওয়ার আশার পালে একটু বাতাস লাগিয়েছে মোহামেডান। ২২ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে উঠে এসেছে সাদা-কালোরা। তিনে থাকা ঢাকা আবাহনীর চেয়ে ১ পয়েন্ট পিছিয়ে দলটি। আবাহনী ম্যাচ খেলেছে একটি কম। ২০ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে শেখ জামাল ধানমন্ডি।

এবারের লিগে নিজেদের একাদশ জয়টি সহজে পায়নি মোহামেডান। ২০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে থাকা রহমতগঞ্জ ভালোই ঘাম ঝরিয়েছে মোহামেডানের। ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে মোহামেডানের হয়ে গোল দুটি করেছেন কামরুল ইসলাম ও মুনজির কুলদিয়াতি। রহমতগঞ্জের একমাত্র গোলটি ফেলিক্স চিদি ওদিলের।

এবারের লিগে দুদলের প্রথম দেখায় রহমতগঞ্জকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল মোহামেডান। ম্যাচের শুরুতে মনে হয়েছিল সেই হারের প্রতিশোধটা না আজ নিয়ে নেয় রহমতগঞ্জ। মাত্র ৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে যেন সেই আভাসই দিচ্ছিল পুরান ঢাকার দলটি।

ম্যাচের প্রথম গোলটি করেছিল রহমতগঞ্জ
ছবি: প্রথম আলো

বক্সের মধ্যে বল নিয়ে ঢুকে পড়া ফেলিক্সকে ফেলে দেন মোহামেডানের ডিফেন্ডার আতিকুজ্জামান। রেফারি আনিসুর রহমান সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ফেলিক্স। এবারের প্রিমিয়ার লিগে ফেলিক্সের এটি তৃতীয় গোল। ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল ফেলিক্সের সামনে কিছুক্ষণ পরই। ১৯ মিনিটের সময় ফেলিক্সের সামনে ছিলেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন হোসেন। কিন্তু ডান পায়ে নেওয়া শটটি প্রথম চেষ্টায় ঠেকিয়ে দেন সুজন। ফিরতি শটে আর পারলেন না ফেলিক্স। বাঁ পায়ে এবার দুর্বল শট নিয়ে ভারসাম্য ঠেকাতে না পেরে পড়ে গেলেন মাটিতে।

পিছিয়ে পড়া মোহামেডান এরপর গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে। একের পর এক আক্রমণ শাণিয়েছেন সুলেমান দিয়াবাতে, ইয়াসান আউচিং। কখনো দিয়াবাতের শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়েছেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক আরিফুল ইসলাম। কখনো রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করেছেন বল।

চেষ্টার ফসলটা ৩৮ মিনিটে ঘরে তোলে মোহামেডান। ফ্রিকিক থেকে দুর্দান্ত এক গোল করেন কামরুল। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে যেভাবে বলটা বাঁক খেয়ে জালে ঢুকেছে, সেটা ছিল দেখার মতো। আর গোল খেয়ে হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে রইলেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক।

অবশ্য জয়সূচক গোলটিতে মোহামেডানের ফরোয়ার্ড মুনজির কুলদিয়াতির যতটা না অবদান, এর চেয়েও বেশি দায় রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডারদের। ৭০ মিনিটে হাবিবুর রহমানের কর্নার থেকে একেবারে অরক্ষিত কুলদিয়াতি প্লেসিংয়ে করেছেন গোল। অবশ্য গোলটি বাতিলের জন্য রহমতগঞ্জের অধিনায়ক আলাদিন নাসের রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ডাগআউটে বসা রহমতগঞ্জ কর্মকর্তা, কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানীও রেফারির সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। তাঁদের দাবি, গোলের উৎস কর্নারটি কর্নারই ছিল না। মোহামেডানের ফুটবলারের পায়ে লেগে বল গিয়েছিল বাইরে। যদিও রেফারি সেই দাবি আমলে না নিয়ে খেলা শুরু করেন পরক্ষণেই।

মোহামেডানের দ্বিতীয় গোলটি কুলদিয়াতির
ছবি: প্রথম আলো

একে তো গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েছে রহমতগঞ্জ, এরপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো লাল কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার খুরশেদ বেকনজরভ। মোহামেডানের মিডফিল্ডারকে অনীক হোসেনকে ফাউল করলে লাল কার্ড দেখান রেফারি আনিসুর রহমান। বাকি সময়ে দশজনের দল হয়ে পড়া রহমতগঞ্জ আর লড়াইয়েই ফিরতে পারেনি।