‘এ রেকর্ড শুধুই আমার’
দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল দুটি মাস। সেই যে ইউরোতে ফ্রান্সের বিপক্ষে বুদাপেস্টে জোড়া গোল করলেন, এরপর জাতীয় দলের জার্সিতে আর গোল নেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। বেলজিয়ামের বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ছিলেন নিষ্প্রভ। আরেকটা গোল পেয়ে গেলে হয়তো তখনই আলী দাইয়িকে সরিয়ে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলের রেকর্ডটা নিজের করে নিতে পারতেন পর্তুগিজ তারকা।
ইউরোতে না পারলেও সবাই নিশ্চিত ছিলেন, আজ হোক কাল হোক রেকর্ডটা রোনালদোর হাতে ধরা দেবেই। আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে বলা হবে রোনালদোরই নাম। রোনালদো নিজেও যে রেকর্ডটাকে লক্ষ্য বানিয়েছেন, সেটি এর আগে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছে। অবশেষে রেকর্ডটা যখন হাতে ধরা দিল, রোনালদোর উচ্ছ্বাস যে বাঁধ মানবে না, এটিই তো স্বাভাবিক!
গত রাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রোনালদোর পর্তুগাল। রেকর্ডটাও ধরা দিয়েছে রোনালদোর হাতে। আর ধরা দিয়েছেও রোনালদো–সুলভ ভঙ্গিমাতেই। ক্যারিয়ারে কতশত ম্যাচে যে দলকে হারের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন, রোনালদো হয়তো নিজেও গুনে শেষ করতে পারবেন না। গত রাতেও ঠিক অমন পরিস্থিতিরই উদ্ভব হয়েছিল।
শুরুতে ডিফেন্ডার জন এগানের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আইরিশরা। এরপর একেক মিনিট যায়, পর্তুগালের সমতাসূচক গোল আর আসে না। রোনালদোদের একেক চেষ্টা বাধাগ্রস্ত হয় আইরিশ রক্ষণে ধাক্কা খেয়ে। কিন্তু তাতে কি রোনালদো থেমে গেছেন কখনো যে কাল যাবেন? শেষ মুহূর্তে দুই গোল করে আবারও দলকে উদ্ধার করেছেন। সঙ্গে মহার্ঘ রেকর্ডটাকেও নিজের করে নিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে তাই রোনালদোর কণ্ঠে ঝরে পড়েছে উচ্ছ্বাস, ‘আমি অনেক খুশি। দরকার ছিল এক গোলের, আমি করেছি দুটো। আমি খুবই খুশি এই দুই গোলের জন্য, যা একই সঙ্গে আমাকে রেকর্ডটা এনে দিয়েছে ও দলকে জয় এনে দিয়েছে।’
কিছুদিন আগেই জুভেন্টাস ছেড়ে নিজের সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন রোনালদো। যে ইউনাইটেডেই রোনালদোর রোনালদো হয়ে ওঠা। এ যেন আক্ষরিক অর্থেই প্রিয় সন্তানের ঘরে ফেরার মতো ঘটনা। রেকর্ড গড়ার এই মাহেন্দ্রক্ষণে নিজের ঘরে ফেরার আনন্দটাও ভাগাভাগি করতে ভোলেননি এই তারকা, ‘রেকর্ডটা এখন আমার, এটা অনন্য এক রেকর্ড। আমি অনেক খুশি, আমার ক্যারিয়ারের আরেকটা রেকর্ড এটা। ফুটবল খেলার জন্য এখনো আমার মধ্যে যে আগ্রহ ও ইচ্ছা আছে, এটা তার প্রতিফলন। এ ছাড়া সর্বশেষ যে চুক্তি করেছি আমি, সেটার জন্যও আমি খুশি। আমি ঘরে ফিরতে পেরে খুশি।’
আর দশটা রেকর্ডের মতো এই রেকর্ডও নিজের ভক্তদের জন্য উৎসর্গ করেছেন রোনালদো, ‘যদি প্রতিদিন এই লক্ষ্য নিয়ে সকালে ওঠা যে প্রতিনিয়ত ভালো করতে হবে, আমাদের সন্তানদের ও ভক্তদের খুশি করতে হবে, এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সংগ্রহে রাখার মতো একটা রেকর্ড পেয়েছি।’