মায়ের পথে হেঁটে মেয়ে জিতল যুব গেমসের সোনা
একসময় নিয়মিত জাতীয় দলে খেলেছেন ভারোত্তোলক শাহরিয়া সুলতানা। ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে জাতীয় প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছেন ১৩টি। বর্তমানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভারোত্তোলনের কোচ হিসেবে চাকরি করছেন শাহরিয়া। এ ছাড়া এশিয়ান ভারোত্তোলন ফেডারেশনের কোচিং অ্যান্ড রিসার্চ কমিটির সেক্রেটারি এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মায়ের দেখানো পথে হেঁটে ভারোত্তোলনে এসেছে শাম্মী সুলতানা। প্রথমবার অংশ নিয়েছে দ্বিতীয় শেখ কামাল যুব গেমসে। আর প্রথম আসরেই সবার আলো কেড়েছে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ভারোত্তোলনে ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে আজ রেকর্ড গড়ে জিতেছে সোনার পদক।
শাম্মী খেলেছে খুলনা বিভাগের হয়ে। সে স্ন্যাচে তুলেছে ৫০ কেজি। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে তুলেছে ৬২ কেজি। দুবারই রেকর্ড গড়ে ওজন তুলেছে। সব মিলিয়ে রেকর্ড ১১২ কেজি ওজন তুলে সোনা জিতেছে শাম্মী। এই ইভেন্টে রুপা জিতেছে রংপুর বিভাগের অনন্যা রায়। সে তুলেছে ৯২ কেজি। খুলনা বিভাগের আয়েশা খাতুন ব্রোঞ্জ জিততে তুলেছে ৮১ কেজি।
মেয়েকে ভারোত্তোলনে আনতেই চাননি শাহরিয়া। কিন্তু মায়ের রক্ত যে মেয়ের শরীরে! ভারোত্তোলনের পরিবেশে বড় হয়েছে। নিজে থেকেই একটু একটু করে অনুশীলন করেছে শাম্মী। এরপর মঞ্চ পেয়েই জ্বলে উঠেছে।
এর আগে গত বছর জাতীয় যুব ভারোত্তোলনে সোনা জিতেছিল শাম্মী। আজ মেয়েকে সোনা জিততে দেখে উচ্ছ্বসিত শাহরিয়া বলছিলেন, ‘নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছে ও। এটা দেখে মা হিসেবে আমার খুব ভালো লাগছে। আমি আসলে ওকে ভারোত্তোলক বানাব, এটা চাইনি। ও নিজে থেকে ভার তোলে। ছোটবেলা থেকে অন্যের অনুশীলন দেখে দেখে ওজন তোলে। তার একটা স্বপ্ন সে অনেক বড় ভারোত্তোলক হবে। অলিম্পিয়ান হবে। ও নিজে থেকে ট্রেনিং করে।’
যখন দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার টেকনিক্যাল কর্মকর্তা হিসেবে যেতে হয় শাহরিয়াকে, তখনো অনুশীলন থেমে থাকে না শাম্মীর, ‘অনেক সময় নানা কাজে দেশের বাইরে থাকতে হয়। ওকে ট্রেনিং করাতে পারি না। এ জন্য কিছু সরঞ্জাম কিনেছি। ফেডারেশন থেকেও কিছু নিয়েছি। এটা দিয়েই সে প্রতিদিন অনুশীলন চালিয়ে যায়।’
যুব গেমসে সোনা জেতা শাম্মী স্বপ্ন দেখে এসএ গেমসেও সোনা জেতার, ‘আম্মু আগে খেলতেন। আমিও তাই ভারোত্তোলনে এসেছি। পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। এসএ গেমসে সোনা জেতার স্বপ্ন দেখি আমি।’