'হোম কোয়ারেন্টিনে' বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার
বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম আর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পেস বোলিং অলরাউন্ডার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন অস্ত্রোপচারের উদ্দেশ্যে। দুজনের অস্ত্রোপচার হয়েছে মেলবোর্নে। সাদমান গিয়েছিলেন কবজির চোটে পড়ে। আর মৃত্যুঞ্জয়ের চোটটা ছিল কাঁধে। সফল অস্ত্রোপচার শেষে দুই ক্রিকেটার দেশে ফিরেছেন গত মঙ্গলবার রাতে। দেশে ফিরেই দুজনই গেছেন ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশ দেওয়া আছে, বিদেশ থেকে ফেরা যেকোনো ব্যক্তির দুই সপ্তাহের ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ যাওয়া বাধ্যতামূলক। সেই নির্দেশনা মেনে নিজেদের আপাতত গৃহবন্দী করে রেখেছেন সাদমান ও মৃত্যুঞ্জয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের হোম কোয়ারেন্টিনের খবর এটাই প্রথম। স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাদমান কাল প্রথম আলোকে বললেন, ‘নির্দেশনা মেনে দুই সপ্তাহের হোম কোয়ারেন্টিনে আছি। জীবনযাত্রা সবই স্বাভাবিক আছে। শুধু কোথাও বের হই না। নিয়ম মেনে দুই সপ্তাহ পর বের হব।’ মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে ব্যাপারটা স্বাভাবিকই, ‘যেহেতু দেশের বাইরে থেকে এসেছি, তাই দুই সপ্তাহ ঘরে এমনিতেই থাকতে হতো। আমি সেটিই করছি।’
সাদমান আর মৃত্যুঞ্জয়ের অস্ত্রোপচারের সময় মেলবোর্নে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরীও। তিনিও দেশে এসে চলে গেছেন হোম কোয়ারেন্টিনে। দেবাশিস বলছিলেন, ‘ঘরের মধ্যে থাকা, মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা—সেলফ কোয়ারেন্টিন আসলে সচেতনতার অংশ। আমরা জানি না জীবাণু বহন করছি কি না। যদি দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশিত না হয়, তাহলে বুঝতে হবে জীবাণু আমাদের মধ্যে নেই।’
এই মুহূর্তে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বিসিবির পরিচালক ও সিসিডিএম চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদও। দুই দিন আগে তিনি দেশে ফিরেছেন ব্যাংকক থেকে। সরকারের নির্দেশনা মেনে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকায় কাল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে পারেননি কাজী ইনাম। সাধারণত হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয় ১৪ দিন। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সময়ে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা যেকোনো ব্যক্তিকে সব সময় বাড়িতেই অবস্থান করতে হয়। পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে নিজেকে কিছুটা আলাদা রাখতে হয়। পরিবারের অন্য সদস্যের ব্যবহৃত গৃহস্থালি জিনিস যেমন থালা–বাসন, কাপড়চোপড় ইত্যাদি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হয়। হাঁচি–কাশির সময় টিস্যু পেপার বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে হয় ইত্যাদি।
চারদিকে যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস, খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কাল শনিবার দুপুর ১২টায় বিশেষ এক সেমিনার আয়োজন করেছে বিসিবি। করোনা মোকাবিলায় কী করণীয়, এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক চন্দন কুমার রায়। সচেতনতামূলক কার্যক্রম আছে মাঠকর্মীদের নিয়েও।