'মাশরাফি পারফরম্যান্স দিয়েই ফিরবে'
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক পেসার ও নির্বাচক গোলাম নওশের আশাবাদী মানুষ। তিনি বাকি পাঁচটি ম্যাচে বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। তিনি মনে করেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সফল হলে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বাকি ম্যাচগুলোয় সবার মুখে হাসি ফোটাতে পারবেন
বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নিয়ে এত সমালোচনা কেন? ইংল্যান্ডের সঙ্গে একটি ম্যাচেই কি সব শেষ হয়ে গেছে? যে দল বিশ্বকাপ শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে, যে দলটি দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে প্রায় হারিয়েই দিচ্ছিল, সে দলকে নিয়ে বোধ হয় এখনই ‘গেল গেল’ রব তোলা ঠিক নয়। আর মাশরাফি বিন মুর্তজার পারফরম্যান্স খারাপ হচ্ছে? এ নিয়ে আমরা খুব তাড়াতাড়িই ধৈর্য হারিয়ে ফেলছি কি না!
অবতরণিকায় যা লেখা হয়েছে, সেগুলো গোলাম নওশেরের বক্তব্য। টেস্টপূর্ব যুগে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বটা ছিল যাঁর হাতে, সাবেক এ বাঁহাতি পেসার জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্বও পালন করেছেন একসময়। তাঁর মতে, ‘আমরা খুব দ্রুত ধৈর্যহীন হয়ে পড়েছি। এখন পর্যন্ত আমাদের চারটি ম্যাচ হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতেছি, নিউজিল্যান্ডকে প্রায় হারিয়েই দিচ্ছিলাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের বোলিংটা বড্ড বাজে হয়েছে—এটা তো সমস্যা! এমন একটা ভাব করছি যেন সব আশা–ভরসা শেষ হয়ে গেছে আমাদের।’
গোলাম নওশের বাংলাদেশ দলকে নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী, ‘আমাদের এখনো পাঁচটি খেলা বাকি আছে। আমি তো আশার অনেক কিছুই দেখি। হ্যাঁ এটা ঠিক, ম্যাচগুলো কঠিন। কিন্তু অতীতে আমাদের দল তো এমন অনেক কঠিন ম্যাচই জিতেছে। দলের সে সামর্থ্য অবশ্যই আছে। কেবল দরকার ম্যাচ বাই ম্যাচ সুন্দর পরিকল্পনা।’
বোলিং নিয়ে খুব চিন্তিত না হলেও গোলাম নওশের তাঁর উত্তরসূরিদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, ‘আমি মনে করি ইংল্যান্ডে যে উইকেটগুলোতে খেলা হচ্ছে, সেখানে জোরে বোলারের খুব প্রয়োজন। এই জায়গাটায় আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। রুবেল হোসেনকে অবশ্যই একাদশে রাখা উচিত। রুবেল কাঁধ ব্যবহার করে বোলিং করে। ইংল্যান্ডের উইকেটে এমন বোলার প্রয়োজন।’
মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে প্রতিটি ম্যাচেই বোলিং আক্রমণ শুরুর পক্ষে সাবেক এই বাঁহাতি পেসার, ‘মোস্তাফিজ ১৩০ কিলোমিটার বেগে বোলিং করে। নতুন বলে ওকে দিয়ে বোলিং আক্রমণটা শুরু করলে বাংলাদেশ দল সুবিধা পেতে পারে। শুরুতে ওর বলে ব্যাটসম্যানদের কানায় লেগে বল উইকেটকিপার বা স্লিপে যেতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঠিক এ ব্যাপারটিই ঘটেছে। ওপেনিং বোলিংয়ে সে একেবারে আদর্শ বোলার।’
মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে সমালোচনার কোনো কারণ দেখেন না গোলাম নওশের, ‘দেখুন, মাশরাফি যে শতভাগ ফিট হয়ে খেলে না, সেটা তো নতুন কোনো বিষয় নয়। প্রচণ্ড সাহসী ছেলে সে। দুই হাঁটুতে সাতটা সার্জারি নিয়ে সে সাফল্যের সঙ্গেই খেলে গেল এতগুলো বছর। মাত্র দুই-একটা ম্যাচে পারফরম্যান্স বাজে হয়েছে বলে মাশরাফির ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু বলে ফেলা খুবই বোকামি। আমি সবাইকে তার সমালোচকদের একটু অপেক্ষা করতে বলব। সে পারফরম্যান্স দিয়েই ফিরবে।’