২-৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ না হয়ে ধোনি পার পেয়ে গেছেন!
যতই আচরণবিধির শিকল পরিয়ে রাখা হোক, মনের ভেতরে আবেগের বিস্ফোরণ ঘটলে থামিয়ে রাখা তো কঠিন। তা সে তিনি মহেন্দ্র সিং ধোনিই হোন না কেন! তবে ধোনি যে কাণ্ডটা করলেন, ক্রিকেটে এমন দৃশ্য বিরল তো বটেই। রাগ সামলাতে না পেরে ধোনি যে ঢুকে পড়লেন মাঠের ভেতরেই! আর এমন ঘটনা ঘটানোর পরও ধোনির মাত্র ৫০ শতাংশ জরিমানা হয়েছে। বীরেন্দর শেবাগ মনে করেন, ধোনি পার পেয়ে গেছেন। অন্তত ২ কি ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়া উচিত ছিল চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়কের।
শেবাগ বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, ধোনি অল্পতেই পার পেয়ে গেছে। অন্তত ২-৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল। কারণ, ও যেটা করেছে, কালকে আরেক অধিনায়কও একই কাজ করে বসতে পারে। তাহলে আর মাঠের আম্পায়ারের মূল্য কী থাকল? দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ওকে কয়েক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল। ওর উচিত ছিল মাঠের বাইরেই থাকা, বড়জোর ওয়াকিটকিতে চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে পারত। আমার মনে হয়, মাঠে যেহেতু সিএসকেএর দুই সদস্য (দুই ব্যাটসম্যান) ছিলই, ওর ভেতরে চলে আসা ঠিক হয়নি। ওই দুজন তো এটা নো বল কি না, তা নিয়ে কথা বলছিলই।’
আইপিএলে চেন্নাই বনাম রাজস্থান রয়্যালসের গত ম্যাচে ঘটেছিল ঘটনাটি। ৩ বলে ৮ রান লাগে এমন সমীকরণ নিয়ে ব্যাট করছিল চেন্নাই। এ সময় বেন স্টোকসের একটি বিমার ছুটে এলে বোলারের প্রান্তে থাকা আম্পায়ার উলহাস গান্ধে হাত উঁচিয়ে নো বল ডাকেন। কিন্তু লেগ আম্পায়ার ব্রুস অক্সেনফোর্ড জানিয়ে দেন, বলটা নিচু হয়ে আসছিল, এর আগেই ব্যাটসম্যান বলটা খেলেছেন। লেগ আম্পায়ারের মনে হয়েছে, বলটা কোমরসমান উচ্চতার নিচে নেমে যেত। মূল আম্পায়ার নো ডেকেছেন, লেগ আম্পায়ার বলছেন নো নয়—আসল সিদ্ধান্ত কী?
ম্যাচের যে পরিস্থিতি ছিল, তাতে ওই নো বল হয়ে উঠেছিল হীরার চেয়ে দামি। ওই ওভারেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরা ধোনি তখন ছিলেন সাইডলাইনে। এই পরিস্থিতিতে মাঠে ঢুকে পড়েন তিনি। মাঠে আম্পায়ারদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ যুক্তিতর্ক চলেছে চেন্নাই অধিনায়কের। তবে শেষ পর্যন্ত বলটিকে আর নো ডাকা হয়নি। চেন্নাইয়ের সমীকরণ কঠিন হয়ে গেলেও শেষ বলের ছক্কায় শেষ পর্যন্ত ধোনির দলই জেতে।
আম্পায়ার উলহাস গান্ধের হাত উঁচিয়ে আমার দ্বিধাগ্রস্তভাবে নামিয়ে ফেলা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। প্রশ্ন করা যায় আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়েও। কিন্তু তাই বলে অধিনায়কের মাঠের বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকে বাহাস করা বেশির ভাগ ক্রিকেটবোদ্ধাই মেনে নিতে পারেননি।
এর মধ্যে শেবাগ আবার খোঁচাও দিয়েছেন এই বলে, ভারতের হয়ে ধোনিকে এতটা উত্তেজিত হতে কখনো দেখেননি তিনি, ‘ভারতের হয়ে ও যদি কখনো এমন করত, আমি খুশিই হতাম। ভারতীয় দলের অধিনায়ক থাকার দিনগুলোতে ওকে কখনো এতটা উত্তেজিত হতে দেখিনি। আমার মনে হয়, ও চেন্নাইয়ের হয়ে খেলার সময় একটু বেশিই আবেগ নিয়ে খেলে।’