শহীদ আফ্রিদি, হাসান রাজা, মোহাম্মদ সামি থেকে শুরু করে হালের নাসিম শাহ কিংবা মোহাম্মদ শেহজাদ—পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের অধিকাংশ তারকার বয়স নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে, উঠছে। অধিকাংশ ক্রিকেটারই এসব অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেন না। যদিও শহীদ আফ্রিদির মতো কেউ কেউ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার পর নিজের আত্মজীবনীতে বয়স লুকানোর কথা বড় গলায় স্বীকারও করেছেন।
অভিযুক্ত ক্রিকেটার স্বীকার করুন বা না করুন, তাতে বয়স নিয়ে কানাকানি থামে না মোটেও। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সন্দেহের তিরটা আসে অন্য দেশের ক্রিকেটারদের কাছ থেকেই।
এবার সে ধারার ব্যতিক্রম দেখা গেল। পাকিস্তান দলেরই সাবেক এক ক্রিকেটার প্রশ্ন তুলেছেন এখনকার কিছু তারকার বয়স নিয়ে। তিনি আর কেউ নন, মোহাম্মদ আসিফ।
সাবেক উইকেটরক্ষক কামরান আকমলের ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে এসে এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আসিফ। তাঁর মতে, পাকিস্তান দলের বর্তমান পেসারদের বয়স ১৭-১৮ বলা হলেও আসলে তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ২৭ কিংবা ২৮।
কিন্তু কী কারণে এমনটা মনে হলো আসিফের?
সাবেক সতীর্থের ইউটিউব চ্যানেল ‘ক্যাচ অ্যান্ড ব্যাট উইথ কামরান আকমল’-এ সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন আসিফ। এখনকার ‘তরুণ’ পেসাররা আগের যুগের পেসারদের মতো টানা লম্বা স্পেলে বল করে যেতে পারেন না, ম্যাচে ১০ উইকেট নিতে পারেন না, বুড়ো মানুষদের মতো হাঁপিয়ে যান। এত কিছু দেখেই আসিফের মনে এই সন্দেহের জন্ম নিয়েছে।
আসিফকে আকমল প্রশ্ন করেছিলেন, কেন পাকিস্তান এখন প্রতিপক্ষের দুই ইনিংস মিলিয়ে পুরো ২০ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ জিততে পারে না।
এর জবাবেই প্রসঙ্গটা তুলে এনেছেন ২০১০ সালে লর্ডসে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া আসিফ, ‘এখনকার বাচ্চারা জানে না কীভাবে একটা টেস্ট ম্যাচে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলে নিতে হয়। তারা জানে না কীভাবে নিজের ঝুলিতে ১০ উইকেট ভরতে হয়। তারা জানে না কীভাবে একজন ব্যাটসম্যানকে ফ্রন্টফুটে রেখে খেলাতে হয়। তারা জানে না কীভাবে ব্যাটসম্যানদের খুচরো সিঙ্গেল না দিয়ে উইকেট বরাবর বল করতে হয়। উইকেট বরাবর বল করলেই ব্যাটসম্যান লেগ সাইডে বল ঠেলে দিয়ে রান নেয়। রান আটকাতে পারে না তারা।’
নাসিম-হাসনাইন কিংবা শাহিন শাহদের এই ব্যর্থতাই মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে আসিফের। বয়স যদি কমই হয়, তাহলে টানা বল করতে গিয়ে তারা হাঁপিয়ে যাবে কেন?
‘তাদের বয়সও অনেক বেশি। বলা হয়, তাদের বয়স ১৭-১৮, কিন্তু আসলে তাদের একেকজনের বয়স অন্তত ২৭-২৮। তারা টানা ২০-২৫ ওভার বল করে যেতে পারে না। হাঁপিয়ে যায়। তারা জানে না কীভাবে বল করতে গিয়ে শরীরকে বাঁকাতে হয়। তাদের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। ৫-৬ ওভারের স্পেল করেই তারা কেউ মাঠেই ফিল্ডিং করার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না,’ বলেছেন আসিফ।
আগের যুগের পেসারদের কথা মনে করে একটু হতাশাও প্রকাশ করেছেন আসিফ, ‘আমার মনে হয় সর্বশেষ সেই ৫-৬ বছর আগে কোনো পেসারকে দেখেছিলাম টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেট নিতে। আগে নিউজিল্যান্ডের মতো সবুজ পিচ পেলে আমাদের লালা ঝরত। বল করা ছাড়তেই চাইতাম না। পাঁচ উইকেট না পাওয়া পর্যন্ত বল করা থামাতাম না।’