১১২ ম্যাচ কম খেলেই ভারতকে পেছনে ফেলল পাকিস্তান
ভারতের টেস্ট অভিষেক ১৯৩২ সালে। প্রতিবেশী পাকিস্তানের টেস্ট আঙিনায় পা পড়েছে ২০ বছর পর ১৯৫২ সালে। স্বাভাবিকভাবে ভারত টেস্টও খেলেছে পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। নিজেদের ৮৯ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ভারত খেলেছে ৫৪৬ ম্যাচ। ৬৯ বছরে পাকিস্তান খেলেছে ৪৩৪ ম্যাচ। টেস্টে জয়, হার, ড্র ও খেলোয়াড়সংখ্যাতেও স্বাভাবিকভাবে অনেক পেছনে পাকিস্তান। কিন্তু আজ একটি হিসাবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে দিল পাকিস্তান। ১১২ ম্যাচ কম খেলেও আজ টেস্টে অধিনায়কের সংখ্যায় ভারতীয়দের পেছনে ফেলে দিয়েছে প্রতিবেশী দেশটি।
আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করাচি টেস্টে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে বাবর আজমের। সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান পাকিস্তানের ৩৪তম টেস্ট অধিনায়ক। ভারত এ পর্যন্ত খেলেছে ৩৩ অধিনায়কের নেতৃত্ব।
ঘন ঘন অধিনায়ক পাল্টানোর বদনাম কামানো পাকিস্তান ভারতকে টপকে টেস্ট ইতিহাসে মোট অধিনায়কের সংখ্যায় উঠে এসেছে ৫ নম্বরে। সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলা ইংল্যান্ডের অধিনায়কও সবচেয়ে বেশি। ১০৩০ ম্যাচে ৮১ অধিনায়ক পেয়েছে দলটি। ৮৩৪ ম্যাচে ৪৬ অধিনায়ক নিয়ে এরপরই আছে অস্ট্রেলিয়া। সমান ৩৭ অধিনায়ক নিয়ে এরপরই আছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টেস্টে সবচেয়ে বেশি অধিনায়ক (শীর্ষ ৫)
মোট অধিনায়কের হিসাবের মতো গড়ে প্রতি কত টেস্টে দলগুলো অধিনায়ক পরিবর্তন করেছে, সেই হিসাবেও পাকিস্তান আছে পাঁচে। পাকিস্তানিরা প্রতি ১২.৭৬ ম্যাচে নতুন অধিনায়ক পেয়েছে। গড়ে প্রতি ৯.১৭ টেস্টে অধিনায়ক পাল্টে সবার ওপরে সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে। এ পর্যন্ত ১১০ টেস্ট খেলা জিম্বাবুয়ে খেলেছে ১২ অধিনায়কের নেতৃত্বে। খুব একটা পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। ১১৯ টেস্টে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ অধিনায়ক পেয়েছে ১১ জন। গড়ে প্রতি ১০.৮২ ম্যাচে অধিনায়ক পাল্টেছে বাংলাদেশ। টেস্ট খেলুড়ে প্রথম ১০ দলের মধ্যে গড়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ পেয়েছেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়কেরা। প্রতি ১৮.১৩ ম্যাচে নেতৃত্ব বদলিয়েছে দলটি।
অধিনায়ক বদলানোয় শীর্ষ পাঁচ (ম্যাচ/অধিনায়ক)
শুরুতে অবশ্য এত অস্থিরতা ছিল না পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব নিয়ে। ১৯৫২ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত প্রথম ৪০ বছরে মাত্র ১৪ অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলেছে দলটি। পরিস্থিতি বদলে যায় গত শতকের শেষ দশকে। ‘নব্বইয়ে’ ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদসহ মোট ১০ অধিনায়ক টস করেছেন পাকিস্তানের হয়ে। এ সময়ে দলটির অধিনায়ক ছিলেন ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, সেলিম মালিক, রমিজ রাজা, সাঈদ আনোয়ার, আমির সোহেল, রশিদ লতিফ ও মঈন খানের মতো তারকারা। ‘নব্বইয়ে’ সর্বোচ্চ ২৫ টেস্টে অধিনায়ক ছিলেন ওয়াসিম আকরাম, সবচেয়ে কম ৫ ম্যাচ রমিজ রাজা।
একুশ শতকে এসেও খুব একটা বদলায়নি ধারাটি। গত ২১ বছরে ১৬ জন অধিনায়ক দেখেছে দলটি। এ সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ জন অধিনায়ক ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ইনজামাম–উল–হক ও মিসবাহ–উল–হক লম্বা সময় অধিনায়কত্ব করার সুযোগ না পেলে অবশ্য পাকিস্তানের রেকর্ড আরও খারাপ হতো। ইনজামাম ৩১ ও মিসবাহ পাকিস্তানি রেকর্ড ৫৬ টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছেন।
মাত্র এক টেস্টে পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন দুজন—শহীদ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ হাফিজ। পাকিস্তানের প্রথম ৩৩ অধিনায়কের ১৮ জনই ১০ ম্যাচের কম টিকেছেন।
বাবর আজম কত ম্যাচ টিকবেন কে জানে!