০০০, ০০০০, ০০০০০, ০০...
ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে অলআউট (২০৫) হয়েছে আগেই। ঋষভ পন্তের ঝড়ের পর ওয়াশিংটন সুন্দরের দৃঢ়তায় ভারত প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৩৬৫। অর্থাৎ চলতি আহমেদাবাদ টেস্টে এখনো দুটি ইনিংস বাকি। এ দুই ইনিংসে তো রেকর্ডটি হয়েও যেতে পারে!
ব্যাটসম্যানদের কথা ভাবলে অবশ্যই গৌরবের কিছু নয়। ব্যাটিং অর্ডারের শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউ নিশ্চয়ই শূন্যের রেকর্ড বুক ফুলিয়ে বলবেন না। কিন্তু ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজের গতি তো সেই পথেই বেগবান। রেকর্ডটি ভাঙতে দরকার আর মাত্র ৪টি ‘ডাক’—মানে, শূন্য রানে আউট হওয়া আরকি।
মাত্র? লেজের ব্যাটসম্যানদের জন্য শূন্য রানে আউট হওয়া যেনতেন বিষয় হতে পারে, কিন্তু চোস্ত ব্যাটসম্যানদের জন্য পুরোটাই উল্টো। ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদিনী’—মানসিকতায় রানের খাতা খোলার, রান তোলার চেষ্টা থাকে তাঁদের।
কিন্তু এই সিরিজে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা বেশ ভালোই খাবি খাচ্ছেন এবং সেটি দুই দলেরই। চার টেস্টের এ সিরিজে এখন পর্যন্ত, অর্থাৎ আজ ভারতের প্রথম ইনিংস পর্যন্ত, দুই দলের ব্যাটিং অর্ডারে শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যান বিবেচনায় ১৪টি ‘ডাক’-এর দেখা মিলেছে।
তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নটা ওঠে। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে শূন্যের এই ছেলেখেলায় সিরিজটি যে পথে এগোচ্ছে, তার শেষ কিংবা শীর্ষবিন্দু কোনটি? অর্থাৎ ন্যূনতম চার টেস্টের সিরিজে দুই দলের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান মিলে সর্বোচ্চ সংখ্যকবার শূন্য রানে আউট হওয়ার নজির দেখা গেছে কবে?
ফিরতে হবে ৬৬ বছর আগে। ১৯৫৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটি ছিল পাঁচ টেস্টের সিরিজ। সেই সিরিজে দুই দলের ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান মিলে মোট ১৭টি ডাক মেরেছিলেন।
এটি এখনো রেকর্ড—যা ভেঙে নতুন করে লেখাতে আর তিনটি ডাক দরকার ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের। অবশ্য তার আগে চলমান সিরিজটিকে ১১৭ বছর আগের এক সিরিজের নজির টপকাতে হবে।
১৯০৪ অ্যাশেজে ভিক্টর ট্রাম্পার-ক্লেম হিলদের অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল পেলহাম ওয়ার্নার-টিপ ফস্টারদের ইংল্যান্ড। পাঁচ টেস্টের সেই সিরিজে ১৫ বার শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন দুই দলের শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যান।
ভারত-ইংল্যান্ডের সিরিজে শূন্যের ‘উন্নতি’র ধারাও বেশ দারুণ! চেন্নাইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাটিং অর্ডারে শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে ৩টি ডাক দেখা গেছে। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ড্যান লরেন্স, দ্বিতীয় ইনিংসে ররি বার্নস ও ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে আউট হন অজিঙ্কা রাহানে।
সেই চেন্নাইয়েই পরের টেস্টে স্পিনবান্ধব উইকেটে শূন্য রানে আউট হওয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। এবারে ৪টি। ভারতের প্রথম ইনিংসে কোনো রান না করে আউট হন শুবমান গিল ও বিরাট কোহলি। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে আবারও শূন্য রানে আউট ররি বার্নস ও দ্বিতীয় ইনিংসে জ্যাক লিচ।
আহমেদাবাদে আগের টেস্টেও উইকেট ছিল স্পিনবান্ধব। টেস্টের নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র দুই দিনের মধ্যে। অর্থাৎ, ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। তাতে বেড়েছে শূন্য রানে আউট হওয়ার সংখ্যাও। এবারে ৫টি—ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ডম সিবলি ও জনি বেয়ারস্টো, ভারতের প্রথম ইনিংসে চেতেশ্বর পূজারা ও ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে জ্যাক ক্রলি এবং আবারও বেয়ারস্টো।
আহমেদাবাদেই চতুর্থ টেস্টে এ পর্যন্ত ২ বার শূন্য রানে আউট হতে দেখা গেছে (প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে)। সেটি ভারতেরই প্রথম ইনিংসে—শুভমান গিল ও কোহলি। দেখা যাক, শূন্যের এই দৌড় কোথায় গিয়ে থামে!