২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

হ্যাটট্রিক করার পরের ওভারেই ছয় ছক্কা!

এক ওভারে ছয় ছক্কা মেরে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন পোলার্ডছবি: টুইটার

‘গিবস ও যুবরাজ, তোমাদের এক সঙ্গী জুটে গেল!’

কথাটা ইয়ান বিশপের। এন্টিগায় কাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ–শ্রীলঙ্কা টি–টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে কাইরন পোলার্ডের ওভারে ছয় ছক্কা মারার পর। শ্রীলঙ্কার ১৩১ রান তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ৪.৬ ওভার থেকে ৬.৫ ওভারের মধ্যে কী নাটকটাই না হলো!

এই ১২টি ডেলিভারির মধ্যে ছয় ছক্কার সঙ্গে ছিল তিনটি উইকেট, এর মধ্যে আবার টানা দুই বলে পড়েছে দুই উইকেট। এখানেই শেষ নয়। ছয় ছক্কা হজম করার আগের ওভারে লঙ্কান স্পিনার আকিলা ধনঞ্জয়া করেছেন হ্যাটট্রিকও! শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪১ বল হাতে রেখে জিতেছে ৪ উইকেটে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর আগে শুধু হার্শেল গিবস ও যুবরাজ সিং এক ওভারে ছয় ছক্কা মারতে পেরেছিলেন। ২০০৭ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে ছয় ছক্বা মেরেছিলেন যুবরাজ।

সে বছরই ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের ডানে ফন বাঞ্জের এক ওভারে ছয় ছক্কা মারেন সাবেক প্রোটিয়া গিবস। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এক ওভারে ছয় ছক্কা মারার কীর্তি পোলার্ডের। পেশাদার ক্রিকেটে এটাই প্রথম ম্যাচ যেখানে হ্যাটট্রিকের সঙ্গে ছয় ছক্কাও দেখা গেল।

ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক ওভারে ছয় ছক্কা মারলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। ১৯৬৮ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম এ নজির গড়েন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি স্যার গারফিল্ড সোবার্স।

১৯৮৫ সালে একই সংস্করণে তার পুনরাবৃত্তি ঘটান ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার ও বর্তমান কোচ রবি শাস্ত্রী। এরপর ২০০৭ থেকে এ সময় পর্যন্ত মোট ১৪ বছরের মধ্যে ছয়বার এক ওভারে ছয় ছক্কা দেখা গেল।

গিবস–যুবরাজের পর ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টি–টোয়েন্টিতে এ নজির গড়েন রস হোয়াইটলি। পরের বছর ঘরোয়ায় ওভারে ছয় ছক্কা মারেন আফগানিস্তানের হজরতউল্লাহ জাজাই। গত বছর নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া টি–টোয়েন্টিতে ছয় ছক্কা মারেন লিও কার্টার, এরপর কাল পোলার্ড।

বেচারা ধনঞ্জয়া! টি–টোয়েন্টিতে কুশলী বোলার হিসেব তাঁর খ্যাতি কম নয়। কিন্তু হ্যাটট্রিকের আনন্দটা শেষ পর্যন্ত তাঁর থাকেনি। অবশ্য ইনিংসের শুরু থেকেই খুনে মেজাজে ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা।

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের করা প্রথম ওভারেই তিন ছক্কা মারেন ওপেনার এভিন লু্ইস। পরের ওভারে ধনঞ্জয়া এসে ছক্কা হজম করেন লেন্ডল সিমন্সের কাছে। তৃতীয় ওভারে দুষ্মন্ত চামেরাকে যৌথ প্রযোজনায় মেরেছেন লুইস ও সিমন্স। ৩ ওভারে ৪৮ রান উঠে যাওয়ার পর চতুর্থ ওভারে এসে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বলে লুইস (১০ বলে ২৮), ক্রিস গেইল ও নিকোলাস পুরানকে তুলে নেন ধনঞ্জয়া।

নিজের দ্বিতীয় ওভারে শ্রীলঙ্কার তৃতীয় বোলার হিসেবে টি–টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক তুলে নেন ধনঞ্জয়া। লাসিথ মালিঙ্গার একারই আছে দুটি হ্যাটট্রিক, আরেকটি থিসারা পেরেরার।

কিন্তু তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখতে হয় লঙ্কান এ স্পিনারকে। লং অন, লং অফ, স্ট্রেট ও মিডউইকেট দিয়ে ছয় ছক্কা তুলে নেন পোলার্ড। পরের ওভারে আবার নাটক—১১ বলে ৩৮ রান করে আউট পোলার্ড।

এর পরের বলেও আউট! ফাবিয়েন অ্যালেনকে তুলে নিয়ে ইনিংসে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন হাসারঙ্গা ডি সিলভা। সেটি যেমন হয়নি তেমনি জেসন হোল্ডারের (২৯*) দৃঢ়তায় জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

পাগলাটে এই ম্যাচ শেষে পোলার্ড জানান, ধনঞ্জয়ার সেই ওভারে টানা তৃতীয় ছক্কা পেয়ে যাওয়ার পর বাকি তিন বলেও ছক্কা মারার ভাবনাটা পেয়ে বসেছিল তাঁকে, ‘তৃতীয়টা পেয়ে যাওয়ার পর আরও কয়েকটি মারার কথা মাথায় আসে। পাঁচ নম্বরটা পেয়ে যাওয়ার পর বোলারের চাপটা বুঝেছি। তখন সিদ্ধান্ত নেই এটাও মারব।’