সকাল থেকেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে উৎসবের আমেজ। শেখ জামাল একাডেমির খুদে ক্রিকেটার, সমর্থক, কর্মকর্তারা মাঠে এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে শেখ জামালের ম্যাচটি কখন শেষ হবে, সে জন্যই সবার অপেক্ষা।
এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে শেখ জামাল। তাই রূপগঞ্জের ম্যাচটি তাদের জন্য শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। জয়-পরাজয় যা–ই হোক, খেলা শেষে ট্রফি হাতে নিয়ে উল্লাস-উদ্যাপনের জন্যই শেখ জামালের আজ মাঠে আসা।
সমর্থকদের অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষা অবশ্য করতে হয়নি, দুপুরেই যে ম্যাচ শেষ। উৎসবের আমেজে থাকা শেখ জামাল যে ৩৪.৪ ওভারেই অলআউট ১১৬ রানে। রানটা ২৫.১ ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে পেরিয়ে গেছে রূপগঞ্জ।
শেখ জামালের ১১৬ রানের ৭৫-ই এসেছে অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। ৭৫ বলে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেছেন ইমরুল। আজও উইকেটে থিতু হয়ে আউট হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। মাশরাফি বিন মুর্তজার একমাত্র শিকার হয়ে ফেরার আগে ৪৮ বল খেলে ২৫ রান করেছেন তিনি। শেখ জামালের বাকি ব্যাটসম্যানরাও ছিলেন আসা–যাওয়ায় ব্যস্ত।
রূপগঞ্জের বোলার আল আমিন হোসেনকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। ৩১ রান দিয়ে ৬ উইকেট শিকার করেছেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা এ পেসার। এরপর রানতাড়ার আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন দুই অভিজ্ঞ রকিবুল হাসান (৪০*) ও নাঈম ইসলাম (২৩*)।
আজকের জয়ে প্রিমিয়ার লিগের রানার্সআপ হিসেবে লিগ শেষ করল মাশরাফির রূপগঞ্জ। ওদিকে হারলেও আগেই শিরোপা নিশ্চিত হওয়া শেখ জামালের ক্রিকেটাররা মেতেছেন শিরোপার উল্লাসে।
জয় দিয়ে লিগ শেষ করেছে আবাহনী ও প্রাইম ব্যাংকও। বিকেএসপিতে আজ দুই দলই জিতেছে স্বাচ্ছন্দ্যে। ৩ নম্বর মাঠে আজ গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩৫৫ রান করে প্রাইম ব্যাংক। গাজী গ্রুপকে ২৭৭ রানে অলআউট করে ৭৮ রানে জিতেছে তারা।
আগের ম্যাচে শতক করা তামিম ইকবাল আজও শতকের দেখা পেয়েছেন। ১৩২ বল খেলে তামিম ১৩৭ রান করেছেন ১৩টি চার ৬টি ছক্কায়। তামিমের সঙ্গী এনামুল হক করেছেন ৮৫ বলে ৯৬ রান। ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় এনামুল তাঁর এবারের লিগের শেষ ইনিংসটি সাজিয়েছেন। ১৫ ম্যাচ খেলে ১১৩৮ রান করে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করেছেন এনামুল। গাজী গ্রুপের আল আমিন জুনিয়রের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৮৭ রান। এ ছাড়া এস এম মেহরবের ৭১ রানের ইনিংসটি ছিল উল্লেখযোগ্য।
পাশের মাঠে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৬৩ রানে হারিয়েছে আবাহনী। আগে ব্যাট করে আফিফ হোসেন ও সাইফউদ্দিন আবাহনীকে ৯ উইকেটে ২৭৫ রান এনে দেন। আফিফ আবাহনীর হয়ে প্রথমবারের মতো তিনে ব্যাট করতে নেমে ৯১ বলে ৭৮ রান করেছেন। ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি তিন অঙ্কে নিতে পারতেন এ বাঁহাতি। কিন্তু আবদুল গাফফারের অফ স্পিনে কাভারের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে নাসুম আহমেদের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। শেষের দিকে আবাহনীর রান বাড়িয়েছেন সাইফউদ্দিন। ৪১ বলে অপরাজিত ৬২ রান করেছেন সাইফউদ্দিন।
পরে বোলিংয়ের সময় ৪ উইকেট নিয়েও দলের জয়ে অবদান রাখেন সাইফউদ্দিন। টাইগার্সের হয়ে আরিফুল হক ৭৩ বলে সর্বোচ্চ ৯৫ রান করেন। বাকিদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ২১২ রানে অলআউট হয় দলটি। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন সাইফউদ্দিন।