হলো না স্বপ্নপূরণ
স্বপ্নটা ছিল আকাশছোঁয়াই। কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবের জমিনে নামিয়ে নিয়ে আসার অনুষঙ্গগুলো সব প্রস্তুতই ছিল। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার স্বপ্নটা তাই ছড়িয়ে পড়েছিল এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের সর্বত্রই। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে নিজেদের প্রমাণ করতে না পারায় স্বপ্নটাকে অধরা রেখেই দেশে ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। ভারতের বিপক্ষে মেলবোর্নের কোয়ার্টার ফাইনালে আজ বাংলাদেশ হেরেছে ১০৯ রানে। ব্যাটিং ব্যর্থতার চূড়ান্ত প্রদর্শনী বিশ্বকাপের সার্বিক অর্জনটাকে ফিকেই করে দিল।
প্রথমে ব্যাট করে ভারতের বেঁধে দেওয়া ৩০৩ রানের লক্ষ্যমাত্রাটা হয়তো কঠিনই ছিল! কিন্তু এই লক্ষ্যের পেছনে ছোটার সামর্থ্যটা অবশ্যই ছিল। এবারের বিশ্বকাপেই ভালো ব্যাটিংয়ের বেশ কয়েকটি উদাহরণ সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের। ব্যাটসম্যানরাও ছিলেন দারুণ ফর্মে। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা প্রত্যাশার ধারেকাছেও নিজেদের রাখতে পারলেন না। ১৯৩ রানে অলআউট হয়ে অসহায় আত্মসমর্পণের লজ্জাটাই মাথায় নিতে হলো বাংলাদেশকে।
উদ্বোধনী জুটিতে এসেছিল ৩৩। তামিম ইকবালের (২৫) ব্যাট প্রত্যাশা জাগিয়েছিল। কিন্তু তাঁর ‘টিকতে না পারার’ রোগটি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতেই যাওয়া-আসার মিছিল শুরু বাংলাদেশ দলের। এনামুল হকের চোটের কারণে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাওয়া ইমরুল কায়েস যে নিজেকে ঘোরের মধ্য থেকে বের করতে পারেননি-সেই প্রমাণ রেখেছেন আজও। মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব কিংবা মোহিত শর্মাদের বলে একের পর এক খাবি খেয়ে। শেষ অবধি উইকেটে তাঁর ‘নরক-যন্ত্রণা’র অবসান হয় রানআউটের কোপে।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ সংগ্রহ নাসির হোসেনের। নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে তিনি এদিক-ওদিক খেলে ৩৫ রান করে দলের সংগ্রহটাকে একটু স্ফীত করতে সহায়তা করেন আর কি! ব্যর্থতার ঘানি টেনেছেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। মাহমুদউল্লাহ ভালোই খেলছিলেন কিন্তু মোহাম্মদ শামির বলে লং লেগে শিখর ধাওয়ানের সেই জাগলিং ক্যাচের শিকার হন তিনি। ক্যাচ ধরার সময় ধাওয়ানের পা বাউন্ডারি রোপের বিজ্ঞাপন-কার্ডে স্পর্শ করেছিল কি না, এটা নিয়ে আছে বিতর্ক। তবে পুরো বিষয়টিতে সূক্ষ্ম প্রমাণ বের করা এতটাই কষ্টকর যে, এ ক্ষেত্রে বিতর্ক মাটি চাপা দেওয়াই যায়। তবে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ বলে যে একটা ব্যাপার আছে, সে ক্ষেত্রেই তো খচখচানিটা থাকছে। তৃতীয় আম্পায়ার কি আরও একটু মনোযোগী দৃষ্টি দিতে পারতেন না এখানে! আউট হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহ করেছিলেন ২১।
বাংলাদেশের গোটা ইনিংসে জুটি বলতে মাত্র তিনটি। তা-ও একটি ৩৩ রানের (উদ্বোধনী জুটি), একটি ৪০ রানের আর অপরটি ৫০ রানের। সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহর জুটিটি ছিল ৪০ রানের, নাসির, সাব্বির যুগল যোগ করেছিল সর্বোচ্চ ৫০ রান। ৩০৩ রান তাড়া করতে নেমে বড় কোনো জুটি না থাকলে বোধ হয় জেতার আশাটা একটু বাড়াবাড়িই।
ভারতের উমেশ যাদব আজ ভয়ংকর হয়ে উঠেছিলেন। ৩১ রানে তাঁর সংগ্রহ ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট শামি ও জাদেজার। মোহিত শর্মার সংগ্রহ একটি উইকেট।
আরও পড়ুন: