টেস্টে দিনের খেলার শেষ আধঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে এবং তাতে ম্যাচের মোড়ও ঘুরে যায়। উপমহাদেশের মাটিতে টেস্টের তৃতীয় দিনে হলে তো কথাই নেই। উইকেটে ফাটল ধরা জায়গায় টানা বল ফেলে থাকেন স্পিনাররা।
কিস্তানের স্পিনার ইয়াসির শাহ এবং নোমান আলী আজ করাচি টেস্টে তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে ঠিক এ চেষ্টাই করে গেলেন। তাতে পাকিস্তানকে যেমন খালি হাতে ফিরতে হয়নি, তেমনি কালকের লড়াইয়ের জন্যও মনস্তাত্ত্বিকভাবে এগিয়ে থাকল স্বাগতিক দল।
পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৩৭৮ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসের চেয়ে এগিয়ে ছিল ১৫৮ রানে। আজ তৃতীয় দিনের খেলা শেষে এই ঘাটতি পুষিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯ রানের লিড নেয় সফরকারী দল। ৪ উইকেটে ১৮৭ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে কুইন্টন ডি ককের দল।
আপাতদৃষ্টে স্কোরটা মোটামুটি ভালো মনে হলেও শেষ বিকেলের ঘূর্ণি মনস্তাত্ত্বিকভাবে এই ম্যাচে পিছিয়ে দিয়েছে প্রোটিয়াদের।
দ্বিতীয় সেশনে ডিন এলগারকে (২৯) হারিয়ে চা–বিরতিতে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। উইকেটে ততক্ষণে বল ভালোই বাঁক নিচ্ছিল। এলগারকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান ইয়াসির। দ্বিতীয় উইকেটে রাসি ফন ডার ডুসেনের সঙ্গে ১২৭ রানের জুটি গড়ে প্রোটিয়াদের তখন মানসিকভাবে এগিয়ে রেখেছিলেন এইডেন মার্করাম। কিন্তু শেষ সেশনে ৬৮তম ওভার থেকে ৭৩তম ওভারের মধ্যে ইয়াসির–নোমানের ঘূর্ণিপাকে বিপদে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ইয়াসিরের মোচড় দিয়ে ওঠা লেগ স্পিন আলতো করে খেলতে গিয়েও নিচে রাখতে পারেননি ফন ডার ডুসেন (৬৪)। সিলি মিড অফে আবিদ আলীকে ক্যাচ দেন তিনি। প্রোটিয়াদের সংগ্রহ সে সময় ২ উইকেটে ১৭৫।
এরপর ছোট্ট একটা ঝড়ের মুখে পড়ে তারা। পরপর দুই ওভারে ফিরে যান ফাফ ডু প্লেসি ও মার্করাম। ডু প্লেসিকে তুলে নেন ইয়াসির। ৭৪ রান করা মার্করাম শিকার হন নোমানের। দলীয় ১৮৫ রানে এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারানো কালকের লড়াইয়ের জন্য মানসিকভাবে পিছিয়ে দেয় প্রোটিয়াদের।
উইকেটে রয়েছেন অধিনায়ক ডি কক ও কেশব মহারাজ। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান বলতে বাইরে শুধু টেম্বা বাভুমা। জর্জ লিন্ডের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনটি সেঞ্চুরি থাকলেও ক্রমেই ‘মাইনফিল্ড’ হয়ে ওঠা করাচির উইকেটে কাল ব্যাটিং করা নিশ্চিতভাবেই আরও কঠিন হয়ে উঠবে। যেখানে পাকিস্তান দলে রয়েছেন দুজন পরীক্ষিত স্পিনার—ইয়াসির ও নোমান। ৫৩ রানে ৩ উইকেট নেন ইয়াসির। ১ উইকেট নিয়েছেন নোমান। দুজনের বলই আজ শেষ বিকেলে বাঁক নিয়ে সাপের মতো ছোবল মেরেছে। কাল কী হবে, কে জানে!
এদিকে প্রোটিয়াদের লিডও বেশি নয়, কাল তাই বড় পরীক্ষাই দিতে হবে কেশব ও কককে।
রাতে ঘুমটা ঠিকঠাক হবে তো কেশব-ককদের?