স্টোকস-রোচ যৌথ 'প্রযোজনা'য় ভয়ংকর সুন্দর আউট
কেমার রোচ ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের পেলে সাধারণত বল ভেতরে ঢোকান। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে সাধারণত বল বের করেন। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ঢোকান ভেতরেও। দ্বিতীয় সেশনের অষ্টম ওভারে বেন স্টোকসকে ফাঁকি দিয়ে বল ভেতরে ঢোকান রোচ। তা হয়ে রইল দ্বিতীয় সেশনের সেরা দৃশ্য।
টেস্টে বোলাররা অনেক সময় ব্যাটসম্যানদের ফাঁদে ফেলে আউট করেন। স্টোকস যখন ভীষণ অবাক হয়ে সাজঘরে ফিরছেন ধারাভাষ্যকারের বিশ্লেষণ, ফাঁদ-ই ছিল! আগের দুটো ডেলিভারিতে বল তুলে স্টোকসকে অন্যমনস্ক করেছে। ইংলিশ অলরাউন্ডারের ভাবনাতেও ছিল না অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে অতটা ঢুকবে। সামনের পায়ে বলটা ঠেকানোর চেষ্টা করেও ব্যাটে নিতে পারেননি আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। আউটটা ছিল দেখার মতো। বোকা বনে পিচে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন স্টোকস। যেন কিছু বুঝতেই পারেননি!
ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে আজ প্রথম দিনে চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ইংল্যান্ডের স্কোর ৪ উইকেটে ১৩১। পরিসংখ্যান বিচারে দ্বিতীয় সেশনে প্রায় প্রথম সেশনের ব্যাটিংয়েরই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে ইংল্যান্ড। এই সেশনেও ২ উইকেট হারানোর পাশাপাশি তারা তুলেছে ৬৫ রান। প্রথম সেশন শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৬৬। তবে উইকেট কামড়ে পড়ে থাকা ওপেনার ররি বার্নসকে (৫৭) মধ্যাহ্নভোজের পর হারানো এবং স্টোকসের (২০) উইকেটটি যথেষ্ট ভাবনায়ই ফেলেছে স্বাগতিকদের। এখন ব্যাট করছেন ওলি পোপ ও জস বাটলার।
বার্নসকেও ফাঁদে ফেলে আউট করেছেন রোস্টন চেজ। প্রথম দিনেই বাঁক পাচ্ছেন এ স্পিন অলরাউন্ডার। বার্নসের বিপক্ষে মাঝ স্টাম্প থেকে বল বের তাঁকে স্কয়ার কাট খেলার হাতছানি দিচ্ছিলেন চেজ। ওদিকে স্লিপ ও গালিতে রেখেছিলেন ফিল্ডার। টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেললেই ক্যাচ ওঠার আশায় এই আয়োজন। বার্নস সেই ফাঁদেই পা দিয়েছেন। একটু দূর থেকে কাট করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন রাকিম কর্নওয়ালকে। বেশ গতি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলটা দারুণ ক্ষিপ্রতায় ধরে ফেলেন ‘মাউন্টেন ম্যান।’
ম্যানচেস্টার টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে চা বিরতির আগ পর্যন্ত ২ উইকেট নিয়েছেন রোচ। আর ১ উইকেট পেলেই টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন ডানহাতি এ পেসার। টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোন বোলার সর্বশেষ ২০০ উইকেটের দেখা পেয়েছেন? জবাব খুঁজতে ফিরতে হবে সে সময়ে যখন টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড ছিল স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্সের দখলে। ওয়ানডেতে তখনো সেঞ্চুরিবঞ্চিত ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার, মাঠে ছিলেন কপিল দেব।
তারিখটা ১৭ মার্চ, ১৯৯৪। বোলার কার্টলি অ্যামব্রোস।