সৌরভ যা পেরেছে, কোহলি পারত কি না সন্দেহ
ভারতীয় ক্রিকেটে সফলতম অধিনায়কদের একজন হিসেবেই থেকে যাবে বিরাট কোহলির নাম। তিন সংস্করণেই তাঁর অধীনে ভারত সাফল্য পেয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি ভারতীয় ক্রিকেটে ‘যেকোনো মূল্যে জিততে হবে’ মন্ত্র ঢুকিয়ে দিয়েছেন, যেটি শেষ পর্যন্ত ভারতকে পরিণত করেছে দুনিয়ার অন্যতম শক্ত দলে। তবে এর মধ্যেও অধিনায়কত্ব নিয়ে কোহলির আক্ষেপ আছে। তাঁর অধীনে তিনটি বিশ্বকাপের (দুটি ওয়ানডে ও একটি টি–টোয়েন্টি) সেমিফাইনাল পর্যন্ত গেলেও ভারত শিরোপা জিততে পারেনি।
বীরেন্দর শেবাগ অবশ্য এরপরও কোহলিকে সেরা বলতে নারাজ। এমনকি ভারতকে তিনটি বৈশ্বিক শিরোপা জেতানো (দুটি বিশ্বকাপ ও একটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি) মহেন্দ্র সিং ধোনিকেও সেই কাতারে ফেলতে নারাজ। তাঁর চোখে সব সময়ই সেরা সৌরভ গাঙ্গুলী। শেবাগের কথা, সৌরভ ভারতের জন্য যা করেছেন, কোহলি সেটি করতে পারবেন কি না সন্দেহ।
সৌরভ এমন কী করেছেন! স্পোর্টস ১৮-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেবাগের কথা, ‘সৌরভ ভারতকে একটা নতুন দল দিয়েছেন। তিনি খেলোয়াড়দের খোঁজ–খবর নিয়েছেন। তাঁদের সুখে–দুঃখে, আনন্দ, বেদনায় তাঁদের পাশে থেকেছেন। আমার সন্দেহ আছে, কোহলি তাঁর অধিনায়কত্বের সময় এমন কিছু করতে পেরেছেন কি না!’
সৌরভ গাঙ্গুলী ভারতের অধিনায়ক হওয়ার পর নাটকীয়ভাবে ভারতের সাফল্যের হার বাড়তে থাকে। এর আগে ভারত বেশির ভাগ সাফল্যই পেয়েছে ঘরের মাটিতে। সৌরভের সময় বীরেন্দর শেবাগ, জহির খান, যুবরাজ সিং, ইরফান পাঠানদের মতো ক্রিকেটাররা ভারতের ম্যাচ জেতানো ক্রিকেটার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। একই সঙ্গে তিনি শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলে, ভিভিএস লক্ষ্মণদের মতো বড় তারকাদের কাছ থেকে সেরাটা আদায় করে নিয়েছেন। তাঁর সময়ই ভারত বিদেশের মাটিতে টেস্ট জিততে শুরু করে। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতকে ফাইনালেও তুলেছিলেন সৌরভ। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাঁর, শিরোপা জেতা হয়নি।
শেবাগ মনে করেন এক নম্বর অধিনায়ক তিনিই, যিনি একটা নতুন প্রজন্মকে উপহার দিয়ে যেতে পারবেন। শেবাগের মতে সেটা খুব ভালোভাবেই করেছেন সৌরভ, ‘আমার মতে, এক নম্বর অধিনায়ক তিনিই, যিনি দেশকে নতুন একটা প্রজন্ম উপহার দেবেন, সেই প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে জয়ের আকাঙ্ক্ষা, লড়াকু মনোভাব ঢুকিয়ে দিতে পারবেন। সৌরভ এটা করেছেন। কোহলি কখনো কখনো হয়তো করেছেন, সব সময় করেননি।’
২০২১ সালের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরপরই ভারতের টি–টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব নিজে থেকেই ছেড়ে দেন কোহলি। এরপর তিনি ওয়ানডে অধিনায়কত্ব হারান। যদিও সেটি নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। কোহলি নিজে ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কোহলিকে আর অধিনায়ক হিসেবে রাখতে রাজি ছিল না সৌরভ গাঙ্গুলীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এরপর অনেকটা অভিমান করেই ভারতের টেস্ট অধিনায়কত্বও ছেড়ে দেন কোহলি।