সেই ক্যাচ ছাড়ার পর দুই দিন ঘুমোতে পারেননি হাসান আলী
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান সেমিফাইনাল। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার শেষ ১২ বলে দরকার ২২। শাহিন আফ্রিদির করা ১৯তম ওভারে প্রথম ৩ বল থেকে এল ৪ রান।
অস্ট্রেলিয়া এই রানও পেত না যদি না ক্যাচ ছাড়তেন হাসান আলী। ম্যাথু ওয়েডের টানা তিন ছক্কা ও হাসান আলীর ক্যাচ ছাড়া মিলিয়ে সেটি এক অবিশ্বাস্য ওভার।
শাহিন আফ্রিদির করা তৃতীয় বলটি মিডউইকেটে উড়িয়ে মেরেছিলেন ওয়েড। সেখানে ফিল্ডিং করা হাসান আলী বলটা কোথায় পড়বে তা বুঝতে পারেননি। একটু বেশিই জোরে দৌড় দেন।
তাতে বলটা ধরতে ঠিক জায়গায় নিজেকে রাখতে পারেননি। সহজ ক্যাচটা কঠিন বানিয়ে ছেড়ে দেন। ব্যস, তারপর টানা তিন বলে তিন ছক্কায় অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে তোলেন ওয়েড, পরে শিরোপাও জেতে অস্ট্রেলিয়া। অথচ গ্রুপ পর্বে পাঁচ ম্যাচ জেতা পাকিস্তানকেই সেমিফাইনালে ফেবারিট ভেবেছিলেন সবাই। হাসান আলীর সেই ক্যাচ ফসকানো ভাবনাটি ভুল প্রমাণ করে।
সেমিফাইনালে পাকিস্তানের হারের পর স্বাভাবিকভাবেই অনেক ভক্ত মুণ্ডুপাত করেছেন হাসান আলীর। তবে হাসান আলীরই সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাওয়ার কথা। তাঁর ওই ক্যাচ ছাড়ার পরই তো ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়। গত নভেম্বরে সে হারের এত দিন পর মুখ খুললেন হাসান আলী।
ক্যাচটি ছাড়ার পর দুঃসহ সময় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন তিনি, ‘আমার ক্যারিয়ারের খুব কঠিন সময় ছিল এটি। ভুলে যাওয়া কঠিন। আজকের আগে কোথাও এ নিয়ে কথা বলিনি—ক্যাচটি ছাড়ার পর দুই দিন ঘুমোতে পারিনি। আমি ঘুমোতে না পারায় আমার স্ত্রী শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ সফরে আসে পাকিস্তান। বাংলাদেশ সফরের সময় মনটা শক্ত করে ক্যাচ ছাড়ার সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলে থাকার সিদ্ধান্ত নেন হাসান আলী, ‘ক্যাচটা ছাড়ার পর চুপচাপ হয়ে পড়েছিলাম। বারবার ঘটনাটা মনে পড়ত। কিন্তু বাংলাদেশ সফরের সময় নিজেকে বোঝাতে পারি, ক্যাচ ছাড়ার স্মৃতিটা পেছনে ফেলে সামনে এগোতে হবে।’
গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ বল করা শাহিন আফ্রিদি সেমিফাইনালে ওই ওভারে ২২ রান দেন। পাকিস্তানের হারের পর চোখের পানি লুকোতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলী, ‘ম্যাচ শেষে আমি ও শাহিন কেঁদেছি। শোয়েব (মালিক) ভাই এসে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, তুমি তো বাঘের মতো, ভেঙে পড়া যাবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে সমর্থন দিয়েছেন।’