সূর্যের দেখা নেই সারা দিন। ফ্লাডলাইটের আলোয় খেলা শুরু হবে বেলা সাড়ে ১১টায়। পূর্বাভাসে আবার বৃষ্টিও ছিল। দিনটা বোলারদের হবে, এসব তারই ইঙ্গিত।
তামিম ইকবালেরও ভাগ্য ভালো। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এমন দিনেই টসে জিতে ব্যাটিং পাঠান তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান শুরুতে সিম মুভমেন্ট পান। প্রথম স্পেলে শিকার করেন ২ উইকেট।
কথায় আছে না, যেখানে সিম ‘মুভ’ হয়, সেখানে স্পিনও হয়। সাকিব বোলিংয়ে এসে ঠিক তাই করেন। গতি কমিয়ে বল বাতাসে ভাসিয়েছেন। বাকিটা কাজটা করেছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট।
৭.২ ওভারে মাত্র ৮ রানে সাকিব নেন ৪ উইকেট—ওয়ানডেতে যা বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসে সবচেয়ে কিপটে বোলিংয়ের রেকর্ড। ম্যাচ শেষে নিজের বোলিং নিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘আমার নজর ছিল ঠিক জায়গায় বল করা। এরপর পিচ ও বলকে কাজ করতে দেওয়া, আর সেটাই হয়েছে।’
মোস্তাফিজ ও সাকিবের সঙ্গে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের বোলিংয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ফেরার ম্যাচে ক্যারিবীয়রা অলআউট ১২২ রানে।
সেই রান বাংলাদেশ তাড়া করেছে ৪ উইকেট হারিয়ে। বোলিংয়ের মতো ব্যাটিং অবশ্য ভালো হয়নি সাকিবের। অল্প রানের ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারতেন তিনি।
যে বাঁহাতি বোলিং দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের ঘুম হারাম করেন, সাকিব ব্যাটিংয়ে আবার সেই বাঁহাতি স্পিনেই আউট। ক্যারিবীয় দলের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার আকিল হোসেনের বলে কাট করতে গিয়ে বল টেনে আনেন স্টাম্পে।
পরের ম্যাচে একই ভুল করতে চান না সাকিব, ‘আমার মনে হয় এটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, আমি ভালো ব্যাট করেছি। হ্যাঁ, আমি আউট হয়েছি, খেলা শেষ করে আসা যেত। আমি সেটা পরের ম্যাচে চেষ্টা করব।’
ম্যাচ শেষ করতে না পারার আক্ষেপটা খুব একটা গায়ে মাখছেন না সাকিব। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছে। সাকিব নিজেই ফিরেছেন আইসিসির নিষেধাজ্ঞা থেকে। এমন দিনে সাকিবই হলেন ম্যাচসেরা।
পেশাদারি সাকিবের চোখ এখন সামনের ম্যাচে। প্রথম ওয়ানডের জয় ভুলে এখন তিনি তাকাতে চান সামনে, ‘সবাই ১০ মাস পর খেলছে। সবাই কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিল ম্যাচ শুরুর আগে। কিন্তু আমার মনে হয় এটা শেষ এখানেই। পরের ম্যাচে আরও ভালো খেলা হবে।’
অধিনায়ক তামিম ইকবালের জন্যও ম্যাচটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর এটিই ছিল অধিনায়ক তামিমের প্রথম ম্যাচ।
প্রতিপক্ষ দুর্বল হলেও ম্যাচটির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ থেকে বাংলাদেশের অর্জনের ছিল ৩০ পয়েন্ট। প্রথম ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট পকেটে পুরেছে তামিমের বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে দলের সে জন্য বোলারদের মূল কৃতিত্বটা দিলেন তামিম, ‘কোনো অভিযোগ নেই। আমরা খুবই ভালো বোলিং করেছি। শুধু স্পিনাররা না, পেসাররাও। তরুণ হাসানের অভিষেক ছিল দুর্দান্ত। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন ছিল। সারা দিন সূর্য ওঠেনি। এখানে শট খেলা কঠিন। সেদিক থেকে আমরা মাথা খাটিয়েই ব্যাটিং করেছি।’