সাকিব–হোল্ডার নন, হ্যাডলির চোখে স্টোকস সেরা অলরাউন্ডার
আইসিসি র্যাঙ্কিং বলছে, টেস্ট ক্রিকেটের সেরা অলরাউন্ডার ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডার। অনেক দিন ধরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার ব্যাট আর বলে অসাধারণ ছন্দে আছেন। অনেক দিন মাঠের বাইরে থাকার পরও ওয়ানডে ক্রিকেটের অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টিতে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ অলরাউন্ডার আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী।
টি-টোয়েন্টিতে অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার সাকিব আছেন দ্বিতীয় স্থানে। টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর অবস্থান পঞ্চম স্থানে। পেস বোলিংয়ের সঙ্গে সমানতালে ব্যাটিং করা ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার বেন স্টোকস টেস্ট ও ওয়ানডে অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে আছেন দ্বিতীয় স্থানে। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ের সেরা দশেও নেই তিনি। তবে র্যাঙ্কিং-ট্যাঙ্কিং নয়, খেলা দেখে এবং দলের জয়ে প্রভাব বিশ্লেষণ করে স্টোকসকেই এগিয়ে রাখছেন নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার রিচার্ড হ্যাডলি।
হোল্ডার ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর সাকিব বাংলাদেশ দলের খেলায় যতটা প্রভাব রাখেন, স্টোকস এর চেয়ে বেশি প্রভাব রাখেন ইংল্যান্ডের খেলায়। হ্যাডলি অন্তত এটাই মনে করেন। ২০১৯ বিশ্বকাপ এবং বিশ্বকাপের পর অ্যাশেজ সিরিজে তাঁর পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে অনেকেই হ্যাডলির সঙ্গে একমত হতে পারেন।
ইংল্যান্ডকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতাতে ব্যাট হাতে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন স্টোকস। নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তাঁর অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসেই ম্যাচটি টাই করে ইংল্যান্ড। এরপর সুপার ওভারেও দলকে জেতাতে ব্যাট হাতে বড় ভূমিকা রাখেন ম্যাচসেরা স্টোকস।
বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজ ড্র করতেও মূল ভূমিকা ছিল স্টোকসের ব্যাটের। এজবাস্টনে প্রথম টেস্ট বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্ট ড্র করে ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১১৫ রান করেছেন স্টোকস। হেডিংলিতে পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১ উইকেটে জেতাতে মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলেন তিনি। দলকে জেতাতে দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন অপরাজিত ১১৫ রান।
২০১৯ সালে বিবিসির বর্ষসেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের খেতাব জেতা স্টোকসকে নিয়ে হ্যাডলি বলেছেন, ‘সময়ের সব অলরাউন্ডারকে দেখে আমি বেন স্টোকসকেই ১ নম্বরে রাখব। সে একজন দুর্দান্ত প্রতিদ্বন্দ্বী, একজন মানসম্পন্ন ব্যাটসম্যান ও অসাধারণ একজন বোলার। সে একাই ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জেতাতে পারে।’
এই মুহূর্তে বিশ্বের আর সব অলরাউন্ডারকে নিয়েও কথা বলেছেন হ্যাডলি। সাকিব-হোল্ডারদের নিয়ে বলেছেন, ‘রবীন্দ্র জাদেজা, সাকিব আল হাসান, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মঈন আলী, ক্রিস ওকস আর জেসন হোল্ডাররাও সবাই নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।’
এই সময়ে অলরাউন্ডার তালিকায় শীর্ষে থাকার লড়াইটা যেমন জমজমাট, এমনটা ছিল সত্তর ও আশির দশকেও। সেই সময়ে ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, কপিল দেবদের সঙ্গে নিজের লড়াই নিয়ে হ্যাডলি বলেছেন, ‘সত্তর ও আশির দশকে অলরাউন্ডারদের লড়াইটা বিশেষই ছিল। আমরা প্রত্যেকেই একে অন্যের সঙ্গে লড়াই করতাম। আমাদের মধ্যে সাফল্য পাওয়ার তীব্র ইচ্ছা ও প্রতিজ্ঞা ছিল। দলে আমার ভূমিকা ছিল ইমি (ইমরান), বিফি (বোথাম) ও ক্যাপসকে (কপিল) ছন্দহীন করে দেওয়া।’