শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান করার উপায় বললেন আশরাফুল
মোহাম্মদ আশরাফুল শুরু করেছিলেন। মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা সেই ধারা বজায় রেখেছেন। গত দশ বছরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রায় প্রতি টেস্ট সিরিজেই এদের কেউ না কেউ বড় রান করেছেন। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজে আবার সেই সুযোগটা পাচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা।
আশরাফুল যেমন টেস্টের সবচেয়ে ভালো সময় কাটিয়েছেন এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। টেস্ট ক্যারিয়ারের ৬ সেঞ্চুরির ৫টিই এসেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ২০০১ সালে টেস্ট অভিষেকেই তাঁর করা সেঞ্চুরিটি এখনো টিকে আছে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড হিসেব। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩ টেস্ট আশরাফুল ৪৫.৪১ গড়ে রান করেছেন ১০৯০। ২০১৩ সালের সফরের গল টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা সর্বোচ্চ ১৯০ রানের ইনিংসটিও এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
একই টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুশফিকুর রহিম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যানও তিনি। ১৩ টেস্ট খেলে ৪৮.৩২ গড়ে ৮৯৫ রান করেছেন মুশফিক। গলের ডাবল সেঞ্চুরি ছাড়া মুশফিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬টি ফিফটি করেছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালের চট্টগ্রাম টেস্টের ৯২ রানের ইনিংসটি সেঞ্চুরি হতে পারত।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান করায় বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক আছেন এরপরই। লঙ্কানদের বিপক্ষে ৭ টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি ৩টি ও ফিফটিও ৩টি। ৫৪.৪১ গড়ে রান করেছেন ৬৫৩ রান। এবারও বড় কিছু করতে চাইবেন টেস্ট অধিনায়ক। সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ শর বেশি রান করেছেন। দুজনেরই খেলার কথা এবারের সিরিজে।
ওদের ধৈর্য খুব বেশি। আমাদের ওদের সঙ্গে ধৈর্যের পরীক্ষাটাই বেশি দিতে হবে।
এবারও সফল হতে হলে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের লঙ্কান বোলারদের ধৈর্য নিয়ে খেলতে বলেছেন শ্রীলঙ্কান বোলারদের বিপক্ষে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান আশরাফুল, ‘ওদের ধৈর্য খুব বেশি। আমাদের ওদের সঙ্গে ধৈর্যের পরীক্ষাটাই বেশি দিতে হবে।’
শ্রীলঙ্কান নির্বাচক ও ম্যানেজার অশান্ত ডি মেল আবার বাংলাদেশকে পেস দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। জাতীয় দলের বাইরে থাকা আশরাফুলও লঙ্কান চ্যালেঞ্জ দেখার অপেক্ষায় আছেন, ‘শুনেছি এবার পেস দিয়ে দল সাজাবে। যেহেতু শ্রীলঙ্কার আগের মতো স্পিন শক্তি নেই। তাই পেস বোলিং দিয়ে দল সাজাবে।’
আশরাফুল অবশ্য নিজের ক্যারিয়ার জুড়ে বাঘা বাঘা লঙ্কান স্পিনারদের সামলেছেন। হাত থেকে পড়ে মুত্তিয়া মুরালিধরন, অজন্তা মেন্ডিসদের সামলেছেন, ‘ছোট থেকেই স্পিনারদের হাত থেকে বুঝে খেলা শিখেছি। তাই সমস্যা হয়নি। ওদের স্পিনাররা দুই দিকে বল ঘোরাত পারত। অনেকে বল উইকেটে পড়ার পর বল বুঝত। আমি হাত থেকে পড়ার চেষ্টা করতাম। আগেই বুঝতে পারতাম কী হতে যাচ্ছে। আর শ্রীলঙ্কানরা টেস্টে বেশির ভাগ সময় আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং রাখত। সেই সুযোগে রানও করার সুযোগ থাকত।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে আবার নিয়মিত রানের পাহাড় গড়তেন লঙ্কান কিংবদন্তিরা। কুমার সাঙ্গাকারা যেমন ১৫ টেস্টে ১৮১৬ রান করেছেন, গড় প্রায় এক শ (৯৫.৫৭)! ক্যারিয়ার সেরা ৩১৯ রান এসেছে বাংলাদেশের বিপক্ষেই। মাহেলা জয়াবর্ধনেও কম যান যান। ১৩ টেস্টে ৭৬.৪০ গড়ে ১১৪৬ রান করেছেন মাহেলা। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ২০৩ রানের ইনিংস আসে মাহেলার। তিলকরত্নে দিলশানও বড় রান করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। ১১ টেস্টে ৭২ গড়ে করেছেন ১০০৮ রান, সর্বোচ্চ ১৬৮। ৪ সেঞ্চুরি, ৪ ফিফটি করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। এই তিনজনই এখন অবসরে।
বর্তমান দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন দীনেশ চান্ডিমাল। ৮ টেস্টে খেলে ৪ সেঞ্চুরিতে ৭০০ রান করেছেন চান্ডিমাল।