ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনি, যুবরাজ সিং, বীরেন্দর শেবাগরা মিলে অপূর্ণতা ঘুচিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকারের ক্যারিয়ারের।
২০১১ বিশ্বকাপজয়ী সেই দলের ছবি দেখে এখন নস্টালজিক হতে পারেন ভারতের ভক্তরা। কিন্তু হরভজন সিংয়ের মন খারাপ হয়। মন খারাপ হয় এই ভেবে যে বিশ্বকাপ জয়ের পর সে দলের খেলোয়াড়েরা মিলে ভারতের হয়ে আর একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাননি।
টেন্ডুলকারের ক্যারিয়ারে গোধূলিলগ্নে সে দলে ছিলেন শেবাগ, গৌতম গম্ভীর, যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, জহির খানদের মতো প্রতিষ্ঠিত তারকারা। বিরাট কোহলিও ছিলেন, তিনি তখন উঠতি তারকা।
ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ১৯৮৩ সালের পর বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় ভারত। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন যুবরাজ, ফাইনালে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন গৌতম গম্ভীর।
হরভজন প্রশ্ন তুলেছেন, শেবাগ, যুবরাজ ও গম্ভীরদের তখন তেমন বয়সও হয়নি। তাহলে ২০১৫ বিশ্বকাপে ভারতের দলে নির্বাচকেরা কেন তাঁদের রাখলেন না? কেন তাঁদের বিশ্বকাপের পরপরই ছুড়ে ফেলা হলো?
টি–টোয়েন্টি ও ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী হরভজন গত বছরের ডিসেম্বরে অবসর নেন। ‘টার্বুনেটর’খ্যাত স্পিনার অবসর নেওয়ার আগে কখনো এসব নিয়ে মুখ খোলেননি। ভারতের সংবাদকর্মী ও লেখক বোরিয়া মজুমদারের ‘ব্যাকস্টেজ উইথ বোরিয়া’ অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে মন খুলে কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সাত শর বেশি উইকেট নেওয়া সাবেক এই অফ স্পিনার।
বোরিয়াকে তিনি বলেছেন, ‘আপনি জানেন, তখন (বোর্ডের) অফিশিয়ালরা কী করছিলেন, ভারতীয় ক্রিকেটে তখন কী ঘটছিল, কারা এসবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং কাদের ছুড়ে ফেলা হয়েছে। আমরা ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের পরও কেন তারপর সবাই মিলে একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাইনি? বিষয়টি কি এমন, সেই দলটা বিশ্বকাপ জিতলেও তার পরপরই পারফরম্যান্স নেমে গিয়েছিল?’
হরভজন প্রশ্ন তোলেন, ‘২০১১ বিশ্বকাপে খেলা ৩১ বছরের হরভজন সিং, ৩০ বছরের যুবরাজ সিং, ৩২ বছরের বীরেন্দর শেবাগ ও ২৯ বছর বয়সী গৌতম গম্ভীর কি ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলার মতো ভালো ছিল না? কেন তাদের একজন একজন করে দল থেকে ছেঁটে ফেলা হলো? “ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলো”—কেন তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হলো? এটা ভারতীয় ক্রিকেটের দুঃখজনক গল্প। এখন কী ঘটছে, তা জানি না, তবে ২০১১ পর্যন্ত আমি অনেকের সাহায্য পেয়েছি, অনেকে উল্টোটাও করেছে। তবে ২০১২ সালের পর তারা আমাকে ছুড়ে ফেলতে সমর্থ হয়।’
২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের পর জাতীয় দলে খেলোয়াড় ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে খেলানোর পদ্ধতি চালু করে বিসিসিআই। এতে ‘ক্লাস অব ২০১১’–র খেলোয়াড়দের জায়গায় ধীরে ধীরে অধিষ্ঠিত হন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, ভুবনেশ্বর কুমার, শিখর ধাওয়ানরা। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়ের পর হরভজন, গম্ভীর, শেবাগ, যুবরাজরা ভারতের হয়ে আর একসঙ্গে খেলার সুযোগ পাননি। এই চার ক্রিকেটারের ২০১৫ বিশ্বকাপ দলেও জায়গা হয়নি।