শেন ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর যেভাবে মিলেছিল
এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না কারও। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় অন্যলোকে চলে গেছেন শেন ওয়ার্ন—এ খবরে শোকের চেয়েও অবিশ্বাস্যের রেণুই উড়ছিল বেশি। দিনের শুরুটা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি রড মার্শের মৃত্যুর খবরে। সে খবরে শোকাহত ক্রিকেট দুনিয়া। কিন্তু রড মার্শের সে খবরের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন সবাই। হার্ট অ্যাটাক করে কয়েক দিন ধরে হাসপাতালেই ছিলেন মার্শ। কিন্তু শেন ওয়ার্ন? মাত্র ৫২ বছরে পা রাখা লেগ স্পিন কিংবদন্তির তো এ–সংক্রান্ত কোনো খবর কখনো আসেনি।
কদিন আগেই নিজেকে আরও ফিট করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে কাজও শুরু করেছেন। সে মানুষটা আচমকা হার্ট অ্যাটাক করে কাউকে কোনো সুযোগ না দিয়ে অন্যলোকে চলে যাবেন, এটা শুনলে অবিশ্বাস তো জাগবেই। তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে হার্ট অ্যাটাকের কথাই বলা হয়েছে। শেষ মুহূর্তে শেন ওয়ার্নকে যাঁরা দেখেছিলেন, তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিংবদন্তির মৃত্যু বিষয়ে জন্ম নেওয়া বিভ্রান্তির ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁরা।
হেরাল্ড সান জানিয়েছে, ওয়ার্নকে থাইল্যান্ডে তাঁর রুমে অচেতন অবস্থায় পেয়েছিলেন তাঁর কাছের বন্ধু ও সহকারী অ্যান্ড্রু নিওফিতু। কিছুদিন আগেই বের হওয়া তথ্যচিত্র ‘শেন’–এর নির্বাহী প্রযোজক ছিলেন নিওফিতু। ওয়ার্নের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে তাঁকে সিপিআর দিয়েও কোনো ফল পাননি।
ওয়ার্নের ম্যানেজমেন্ট সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘শেনকে অচেতন অবস্থায় তাঁর ভিলায় পাওয়া গেছে। মেডিকেল স্টাফের সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। পরিবার এ সময়ে গোপনীয়তা রক্ষার অনুরোধ জানিয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’ থাই আন্তর্জাতিক হাসপাতাল এএফপিকে জানিয়েছে, কোহ সামুইয়ের বিলাসবহুল সামুজানা ভিলা থেকে ওয়ার্নকে তাদের কাছে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় নেওয়া হয়েছিল।
ওয়ার্নের ম্যানেজার জেমস এরকসাইন জানিয়েছিলেন, ফক্স ক্রিকেটের সঙ্গে পুরো গ্রীষ্ম অ্যাশেজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর তিন মাসের ছুটি পেয়েছিলেন ওয়ার্ন। ছুটি কাটাতেই গিয়েছিলেন ওয়ার্ন। ফক্স ক্রিকেটকে এরকসাইন বলেছেন, ‘শেন তিন মাসের ছুটি কাটাচ্ছিল, আর এখানেই ছুটির শুরু। ওরা তো আগের দিন রাতেই মাত্র পৌঁছেছে।’
শেন ওয়ার্নের মৃত্যুর খবরটা কীভাবে পেয়েছেন, সেটাও জানিয়েছেন এরকসাইন, ‘বিকেল পাঁচটায় তাদের ঘুরতে বেরোনোর কথা ছিল। নিওফিতু ৫টা ১৫ মিনিটে তার দরজায় নক করছিল, কারণ ওয়ার্নি সব সময় ঘড়ি ধরে চলে। নক করে বলছিল, “আরে বের হও, দেরি করে ফেলছ।” তখনই বুঝল কোনো একটা সমস্যা হয়েছে।’
এরকসাইন বলেন, নিওফিতু এরপর সিপিআর দিয়ে ওয়ার্নকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স এনে তাঁকে হাসপাতালেও নেওয়া হয়েছে, কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। কিংবদন্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য অন্য এক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।