শূন্যের যে রেকর্ডে তামিমই থাকছেন বারবার
ঢাকা টেস্টে স্পিনাররা রাজত্ব করবেন—এটা এখন সবার জানা। ম্যাচপূর্ব সব আলোচনাতেও তাই এ নিয়েই আলোচনা। টসে জেতা দল ব্যাটিং বেছে নেবে, এটাও জানা ছিল। মিরপুরের উইকেটে সেধে কে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে চায়? বাংলাদেশও চায়নি। মুমিনুল হক টসে জিতে তাই দুবার ভাবেননি, বেছে নিয়েছেন ব্যাটিং।
কিন্তু শ্রীলঙ্কা যা দূরকল্পনাতেও আশা করেনি, সেটাই ঘটেছে মিরপুরে। প্রথম দিনের প্রথম ঘণ্টায় স্পিনারদের বল হাতে নিতে হয়নি। দুই পেসার কাসুন রাজিতা ও আসিতা ফার্নান্দো উইকেট তুলে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। ২৪ রানের মধ্যেই প্রথম ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। উইকেটবৃষ্টির শুরুটা হয়েছে মাহমুদুল হাসান ও তামিম ইকবালের বিদায়ের মধ্য দিয়ে। তাতে শূন্যের এক বাংলাদেশি রেকর্ডে তামিম ইকবাল নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করেছেন।
দিনের দ্বিতীয় বলেই ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। কাসুন রাজিতার বল উইকেটে পড়ে ভেতরে ঢুকছিল। সেটা মাহমুদুল হাসানের ব্যাট ও প্যাডের মাঝ দিয়ে ঢুকে স্টাম্প ভেঙে দিয়েছে। টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম ইনিংসে চতুর্থ শূন্য নিয়ে ফিরেছেন মাহমুদুল। ৭ বল পর শূন্য হাতে ফেরার পালা তামিম ইকবালের। আসিতা ফার্নান্দোর মিডল স্টাম্পে পড়া বল লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন তামিম। লিডিং এজ। পয়েন্টে থাকা প্রবীণ জয়াবিক্রমা ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বলটা ধরে ফেললেন। ৪ বল খেলা তামিম ফিরলেন ড্রেসিংরুমে।
একদিক থেকে এটাই মাইলফলক। নবম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে অন্তত ১০ বার শূন্য রানে আউট হলেন তামিম। সবচেয়ে এগিয়ে মোহাম্মদ আশরাফুল (১৬)। এরপরই আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা (১২), মুশফিকুর রহিম (১২), খালেদ মাসুদ (১১), মাহমুদউল্লাহ (১১), মুমিনুল হক (১১), মঞ্জুরুল ইসলাম (১০), শাহাদাত হোসেন (১০)। এই তালিকার নবতম সংযোজন তামিম।
এই তালিকার নতুন সদস্য হলে আরেকটি জায়গায় তামিমই সর্বেসর্বা। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে এখন পর্যন্ত ১৬ জন ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ বার শূন্য রানে আউট হয়েছেন তামিম। বাকি ১৫ জন মিলে শূন্য রানে আউট হয়েছেন ৩৭ বার। অর্থাৎ, বাংলাদেশের ওপেনারদের টেস্টে এখন পর্যন্ত ৪৭ বার শূন্য রানে আউট হওয়ার নজির আছে। এর মাঝে মাত্র তিনবার একই ইনিংসেই দুই ওপেনার শূন্য রানে আউট হয়েছেন। তিনবারই মিরপুরে, তিনবারই এক প্রান্তে ছিলেন তামিম।
এমনটা প্রথম ঘটেছে ২০১০ সালে, ভারতের বিপক্ষে। ২৪ জানুয়ারি শুরু হওয়া সেই টেস্টের প্রথম দিনে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফিরেছিলেন ইমরুল কায়েস। পরের ওভারেই শূন্য হাতে ফেরেন তামিম। দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ এমন কিছু দেখেছে ২০১৪ সালে। সেবার প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। ২৭ অক্টোবর মাত্র ১০১ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে শুরুটা হয়েছিল ভয়ংকর। তৃতীয় ওভারে দলকে শূন্য রানে রেখে ফিরেছেন তামিম। চতুর্থ ওভারে স্কোরবোর্ডে নড়চড়ের সুযোগ না দিয়েই ফিরেছেন অন্য ওপেনার শামসুর রহমান।
এরপর আবার আজ দুই ওপেনারকে শূন্য রানে হারাল বাংলাদেশ। তবে দুই ওপেনার মিলে সবচেয়ে কম বল আজই খেলেছেন তামিমরা। ২০১০ সালে দুই ওপেনার মিলে খেলেছেন ৯ বল। ২০১৪ সালে ২০ বল খেলেছেন তামিম ও শামসুর। আজ মাহমুদুল ও তামিম মিলে খেলেছেন মাত্র ৬ বল। তিনবারই মিরপুরের উইকেটে প্রতিপক্ষ পেসারদের কাছে বিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার।