অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে কখনো কোনো কোচের বিদায় নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল কি? প্রশ্ন উঠতেই পারে। অবশ্য যে কোচ গত কয়েক মাসে অস্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর অ্যাশেজের স্বাদ পাইয়ে দিয়েছেন, তাঁর পদত্যাগের খবরে টেবিল গরম তো হবেই। চলবে যুক্তিতর্ক।
যে যুক্তিতর্কে যোগ দিয়েছেন দেশ–বিদেশের সাবেক ও বর্তমান সময়ের বেশ কিছু খেলোয়াড়। স্বাভাবিকভাবেই অস্ট্রেলিয়ার সাবেক খেলোয়াড়েরা এ ঘটনায় অনেক বেশি সরব। পক্ষে-বিপক্ষে ক্রমাগত মতামত দিয়ে চলেছেন শেন ওয়ার্ন থেকে শুরু করে রিকি পন্টিং, মিচেল জনসন, ম্যাথু হেইডেনরা। এবার সে আলোচনায় যোগ দিলেন আরেক কিংবদন্তি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
যেভাবে ল্যাঙ্গারকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে, পন্টিং-হেইডেনের মতো ব্যাপারটা ভালো লাগেনি গিলক্রিস্টেরও। পুরো ঘটনায় ল্যাঙ্গারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়টিও কষ্ট দিয়েছে গিলক্রিস্টকে। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, পুরো ব্যাপারটিতে ল্যাঙ্গারকে ‘দানব’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যেন ল্যাঙ্গার খারাপ একজন মানুষ!
অস্ট্রেলিয়ার এসইএন রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গিলক্রিস্ট বলেছেন, ‘কিছু নির্দিষ্ট মানুষ ওকে দানব হিসেবে উপস্থাপন করছে সবার সামনে। জাস্টিন ল্যাঙ্গার এমন নয়। ওর যদি কোনো দোষ আসলেও থেকে থাকে, সে নিজেই সবার আগে সেটি মেনে নেবে। ওর দুর্বলতা থেকে থাকলে ও নিজেই সবার আগে চোখে চোখ রেখে কথা বলবে আর কীভাবে সে সমস্যা ঠিক করা যায়, সে ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করবে। আপনাকে এভাবে উপস্থাপন করলে আপনার নিজের ওপরেও যেমন আঘাত আসবে, আঘাত আসবে পারিবারিক জীবনেও। বিশেষ করে এমন এক মুহূর্তে, যখন ক্রমাগত গুঞ্জন আর ধোঁয়াশার কারণে কী হচ্ছে না হচ্ছে, আপনি বুঝতে পারবেন না।’
ল্যাঙ্গারের আচরণ মাঝেমধ্যেই ‘বেশ কড়া’ বলে তাঁর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান দলের বেশ কয়েক ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফ কাজ করতে চান না বলেও গুঞ্জন ছিল। হয়তো সেটিই শেষমেশ কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ল্যাঙ্গারের জন্য!
আবার চুক্তির মেয়াদ নিয়েও ল্যাঙ্গারের আপত্তি ছিল। চলতি চুক্তিতে আরও চার মাস দায়িত্ব পালন করতে পারতেন, তাই চুক্তিবৃদ্ধির কথাবার্তা চলছিল। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ল্যাঙ্গারের মেয়াদ বাড়াতে চেয়েছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ওপেনার তাতে একমত হতে পারেননি। শেষমেশ দুই পক্ষের দুই পথ দুদিকে চলে গেছে।