লারাকে আউট করার জন্য বোবা বনতেন ভারতের ক্রিকেটারেরা

লারাকে আউট করার সেরা উপায় খুঁজে নিয়েছিল ভারত। ফাইল ছবি
লারাকে আউট করার সেরা উপায় খুঁজে নিয়েছিল ভারত। ফাইল ছবি

প্রজন্মে সেরা ব্যাটসম্যানদের আউট করার জন্য নানা উপায় খুঁজে নিতে হয়েছে প্রতিপক্ষকে। শচীন টেন্ডুলকার কিংবা ব্রায়ান লারাদের জন্য নব্বইয়ের দশকের প্রতিটি দলই কোনো না কোনো উপায় খুঁজে নিতে চেয়েছে। কখনো সফল হয়েছে তারা, কখনো ব্যর্থ। তবে ব্রায়ান লারাকে আউট করতে ভারত যে উপায় বেছে নিয়েছিল, এমনটা শোনা যায়নি কখনো। উইকেটের আশপাশে সবাই বোবা বনে যেতেন লারাকে পেলেই!

সাধারণত ব্যাটসম্যানরা উইকেটে এলে মুখে খই ফোটায় প্রতিপক্ষ। স্লেজিং করে খেপিয়ে তুলতে চায়। কিন্তু লারাকে খেপানোর ব্যাপারে বরাবরই মানা করা হতো। ২০০২ সালে বরং উল্‌টোপথে হেঁটেছিল ভারত। ক্যারিবীয় সফরে গিয়ে মাঠে লারার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল তারা। সাবেক উইকেটরক্ষক দীপ দাসগুপ্ত জানিয়েছেন এই মজার তথ্য।

টোয়েন্টি টু ইয়ার্ন নামের এক অনুষ্ঠানে ২০০২ সালের সেই সফরের গল্প বলেছেন দাসগুপ্ত, '২০০২ সালে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে গেলাম, সবচেয়ে মজার ঘটনা ঘটেছিল। গায়ানাতে প্রথম টেস্ট ছিল। ম্যাচের আগে টিম মিটিংয়ে আলোচনা হচ্ছিল কীভাবে লারাকে সামলানো যায়। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব ছিল, “কেউ ওর সঙ্গে কথা বলো না”। আমি তো অবাক, কী বলে? আমাকে বলা হলো, সে তাহলে একঘেয়েমি সামলাতে না পেরে আউট হয়ে যাবে!'

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরই দাসগুপ্তের শেষ সফর হয়ে আছে। সে সফরের স্মৃতি তাই এখনো তাজা তাঁর মনে। স্পিনাররা যখন বল করতেন, তখন সঙ্গী হিসেবে প্রথম স্লিপে রাহুল দ্রাবিড়কে পেতেন। আর লারা কথা বলার জন্য এ দুজনকে বেছে নিতে চাইতেন, 'যখনই কোনো স্পিনার বল করত, আমি আর রাহুল থাকতাম। লারা একটা বল খেলত। খেলেই আমাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করত। কিন্তু আমরা দুজনই উল্টো দিকে তাকিয়ে থাকতাম। সে আলোচনা শুরু করার চেষ্টা করত, আর আমরা কোনোভাবেই সাড়া দিতাম না।'

অন্য ব্যাটসম্যান যেখানে নিজের মনোযোগ সব ব্যাটিংয়ে দিতেন, সেখানে লারার মনোযোগ থাকত আর বাকি সব কিছুতে, 'লারা সব সময় কথা বলতে চাইত। সে তেমনই ব্যাটসম্যান ছিল। সে নিজের ব্যাটিং নিয়ে, সব কিছু নিয়ে কথা বলতে চাইত।'

সেবার সিরিজ হারলেও লারাকে আটকানোর চেষ্টায় সফল ছিল ভারত। পাঁচ ম্যাচে মাত্র ২০২ রান করেছিলেন লারা। ঘরের মাঠেও মাত্র দুটি ফিফটি আর ২৮.৮৫ গড়ে সিরিজ শেষ হয়েছিল লারার। দাসগুপ্তের কণ্ঠে এখনো সে তৃপ্তি, 'সে বিরক্ত হয়ে যাবে এবং আউট হবে। আসলেই তাই হয়েছিল। সেবার খুব বেশি রান পায়নি লারা।'

মাঠের বাইরে আবার লারার সঙ্গে ঠিকই আড্ডা দিতেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা, 'মাঠের বাইরে যখন দেখা হতো, আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতাম। কিন্তু ব্যাট করতে এলেই সবাই চুপ হয়ে যেতাম।'