যাঁকে জড়িয়ে না ধরলে রুবেলের দিন সম্পূর্ণ হয় না
সৃষ্টিকর্তার আদেশে পৃথিবীতে এসে তিনটি প্রশ্নের জবাব আবিষ্কার করেছিলেন দেবদূত। এই তিনটি প্রশ্ন মানুষের জীবনে প্রতিমুহূর্তের প্রশ্ন, সারা জীবনের প্রশ্ন। মানুষের কী আছে? মানুষের কী নেই? মানুষ কী নিয়ে বাঁচে? দেবদূত জেনেছিলেন, মানুষের মধ্যে প্রেম আছে। মানুষ হয়তো আগামী এক বছরের কথা ভেবে রাখবে, কিন্তু সে জানে না হয়তো সন্ধ্যা পর্যন্তও তাঁর আয়ু নেই। আর মানুষ বেঁচে থাকে প্রেমে, মায়ার টানে।
রাশিয়ার খ্যাতনামা লেখক লিও তলস্তয়ের ‘মানুষ কী নিয়ে বাঁচে’ গল্প থেকে নেওয়া এ তিনটি প্রশ্ন। জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখলে শেষ প্রশ্নটি অনেকের মনে পড়তে পারে। এই পৃথিবীতে মানুষ তো মায়ার টানেই বেঁচে আছে! বর্তমান পরিস্থিতিতে বিষয়টি রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভব করার কথা। করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুর মিছিল চলছে গোটা বিশ্বে। এমন সময়ে মায়া-মমতার বাঁধনে জড়িয়ে রাখার ভালোবাসার মানুষদেরই তো বুকে জড়িয়ে রাখতে ইচ্ছে হয়। কার জীবন কখন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে, সে তো কেউ নিশ্চিত না। আর তাই নিজের 'পৃথিবী'কে জড়িয়ে না ধরলে রুবেল হোসেনের দিনটা সম্পূর্ণ হয় না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অফিশিয়াল পেজে কাল এমনই এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন রুবেল হোসেন। নিজের সন্তান আয়ান হোসেনের ছবি পোস্ট করে রুবেল লিখেছেন, ‘আমার দিনটি সম্পূর্ণ হয় না, যতক্ষণ না আমি আমার পৃথিবীটাকে বুকে জড়িয়ে না ধরি।’ গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাবা হন জাতীয় দলের এ পেসার।
করোনাভাইরাসে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮২ জন। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৩০। দিন দিন মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তলস্তয়ের দেবদূত বুঝতে পেরেছিলেন মানুষের মৃত্যুচিন্তা নেই। চারপাশের পরিস্থিতি অবশ্য এর উল্টোটাই ভাবাচ্ছে মানুষকে। রুবেলও ঘুরপাক খাচ্ছেন এই ভাবনার মধ্যে। সন্তানকে নিয়ে ফেসবুকে ওই পোস্টের আগে কাল আরও একটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে লিখেছেন, ‘ভুল করে থাকলে ক্ষমা করে দিবেন। এই মৃত্যুর মিছিলে হয়তো আমিও চলে যেতে পারি।’