মৃত্যুর ২ বছর পর বাবার প্রিয় আইপিএল দলে ছেলে
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ তখনো শেষ হয়নি। এমন সময়ে হঠাৎ রবিচন্দ্রন অশ্বিন ঘোষণা করলেন, আইপিএলে ভারতের যুব দলের এক খেলোয়াড়কে নিয়ে টানাটানি হবে। যুব দল নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন ইউটিউবে। সেখানে আলাদা করে বলেছিলেন, ‘এই খেলোয়াড় নিশ্চিতভাবেই আইপিএলের নিলামে ডাক পাবে। কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি নেবে বলতে পারছি না, কিন্তু তাকে নিশ্চিতভাবেই কিনবে কোনো দল। ওর নাম রাজবর্ধন হাঙ্গারগেকার।’
অশ্বিনের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে নিয়ে বেশ কয়েকটি দলই আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত ১ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে অশ্বিনের সাবেক দল চেন্নাই সুপার কিংস পেয়েছে হাঙ্গারগেকারকে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে গতিতে মুগ্ধ করা পেসারের জন্য এটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ঘটনা। প্রয়াত বাবার প্রিয় দল চেন্নাইয়ে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন হাঙ্গারগেকার।
বোলিংয়ে ভালো গতি, নিয়ন্ত্রণ আছে, সঙ্গে আছে ব্যাটিং–দক্ষতা। হাঙ্গারগেকারের প্রতি আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। এর মধ্যেও চেন্নাইয়ে সুযোগ পেয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘আমার বাবা চেন্নাই সুপার কিংসকে খুব ভালোবাসতেন এবং ওদের সব খোঁজখবর রাখতেন। তিনি যদি এ দিন দেখার জন্য বেঁচে থাকতেন! যেখানেই থাকুন না কেন, উনি আমাদের চেয়েও অনেক খুশি হয়েছেন। আমার আর বলার ভাষা নেই।’
২০২০ সালে করোনা মহামারিতে বাবাকে হারিয়েছেন হাঙ্গারগেকার। এরপরও ক্রিকেট যাত্রায় ছেদ টানেননি। ভারতের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলি ঠিক যেভাবে বাবার মৃত্যুর শোক চেপেই ক্রিকেট ক্যারিয়ার গড়েছেন, হাঙ্গারগেকারও তেমন দৃঢ়তা দেখাচ্ছেন। তবে কোহলি নয়, মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে এক ড্রেসিংরুমে থাকবেন, এটা ভেবে উচ্ছ্বসিত এই পেসার। কারণ, তাঁর বাবার প্রিয় ক্রিকেটার যে ধোনি।
মহারাষ্ট্রের এই তরুণের কাছে এ কারণেই আইপিএলে কত দাম পেলেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, ‘টাকার চেয়ে আমার কাছে খেলাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি পারফর্ম করি, টাকা এমনিতেই আসবে। আমার মূল লক্ষ্য থাকবে ভালো খেলা। আমি তাঁর (ধোনির) পরামর্শ নেব এবং তাঁর কাছ থেকে শেখার মতো জিনিসের তো অভাব নেই।’
হাঙ্গারগেকারের কোচ মোহান যাদবও চান ধোনির কাছ থেকে শিখুক তাঁর শিষ্য, ‘আইপিএলে খেলা সব ক্রিকেটারের স্বপ্ন। রাজবর্ধনকে একটাই পরামর্শ দেব, ধোনিকে দেখ এবং শেখ। আমি জানি, সুযোগ পেলে সে তার প্রতিভা দেখাবে। স্নায়ুর চাপ থাকবে, কিন্তু মানসিকভাবে সে শক্ত। ২০২০–এর জুনে করোনায় বাবাকে হারানোর পর আমি ওকে মানুষ হিসেবে অনেকে উন্নতি করতে দেখেছি।’