মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন ফাফ ডু প্লেসি
ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। কখনো কখনো খুব কঠিন ম্যাচও কত সহজভাবেই না জিতে যায় কোনো দল। কখনো আবার খুব সহজ ম্যাচও জিততে পারে না। কিন্তু সমর্থকের মন সেটা মানতে পারে না! কখনো কখনো প্রিয় দল হেরে যাওয়ার পর মাথা ঠিক থাকে না অনেক সমর্থকের, উল্টাপাল্টা কত কী করে ফেলেন। তাই তো আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের হারের পর আসে আত্মহত্যার খবর!
কোনো কোনো সমর্থক আবার নিজের ক্ষতি করার কথা ভাবেন না। হারের দায় চাপান দলের ওপর, দলের খেলোয়াড়দের ওপর। এমন একটি ঘটনা একবার ঘটেছে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসির সঙ্গেও। দল হেরে যাওয়ায় এমনিতেই মন খারাপ ছিল তাঁর। এর ওপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যুর হুমকিও পেয়েছিলেন ডু প্লেসি আর তাঁর স্ত্রী। বিষয়টিতে খুব হতাশ হয়েছিল ডু প্লেসি পরিবার।
ঘটনাটা ২০১১ বিশ্বকাপের। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪৯ রানে হেরে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২২২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭২ রানে অলআউট হয়ে যায় প্রোটিয়ারা। গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বে সেই ম্যাচে ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ডু প্লেসি ৪৩ বলে করেছিলেন ৩৬ রান। কিন্তু তাঁর সেই ইনিংসটি বিফলে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা আরও একবার বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে চাপে ভেঙে পড়ায়।
সেই ম্যাচ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাফ ডু প্লেসি আর তাঁর স্ত্রীকে নানাভাবে হেনস্তা করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ডু প্লেসি এবং তাঁর স্ত্রীকে হত্যার হুমকিও দেন। সেই হুমকি পাওয়ার পর নিজেদের অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলেন ডু প্লেসি ও তাঁর স্ত্রী। এমনকি তাঁরা কাছের বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিলেন।
২০১১ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর কেটে গেছে ১০ বছর। এত দিন পরও দুঃসহ সেই স্মৃতি যেন তাড়া করে ফেরে ডু প্লেসিকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘ওই ম্যাচের পর আমি মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলাম। আমার স্ত্রীকেও মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকলেই আমাদের উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। বিষয়টি একেবারেই ব্যক্তিগত হয়ে যায়।’ সেই সময়টাতে সমর্থকেরা এমন কিছু আচরণ করেছিলেন যা এখন ভাষায়ও প্রকাশ করতে পারছেন না ডু প্লেসি, ‘খুব আক্রমণাত্মক কিছু ব্যাপার ছিল। সেগুলো আমি আর বলতে চাই না।’
সমর্থকদের ওই হুমকিগুলো কীভাবে ডু প্লেসি আর তাঁর পরিবারের সাধারণ জীবনযাপন ব্যাহত করেছিল, সেটাও বলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক, ‘এসব ঘটনা আপনাকে আত্মকেন্দ্রিক করে ফেলবে। আপনি নিজের চারপাশে একটা দেয়াল তৈরি করতে চাইবেন। এ ঘটনা আমাদের গণ্ডিটা ছোট করে দিতে বাধ্য করেছিল।’