মুসলিম ক্রিকেটারের গায়ে মদ ঢালা নিয়ে বিতর্ক
বব উইলিস ট্রফির ফাইনালে সমারসেটের মুখোমুখি হয়েছিল এসেক্স। পাঁচ দিনের এ ম্যাচটি রোববার ড্র হয়। কিন্তু প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার সুবাদে শিরোপা তুলে দেওয়া হয় এসেক্সকে। ট্রফি নিয়ে লর্ডসের বারান্দায় উল্লাস করছিলেন এসেক্স ক্রিকেটাররা। তখনই ছবিটা ধরা পড়ে ক্যামেরায়। ফিরোজ খুশির ওপর বিয়ার ঢালছেন তাঁর সতীর্থ অতিরিক্ত উইকেটরক্ষক উইল বাটলম্যান। ছবিটা অনেকেরই ভালো লাগেনি। ওঠে সমালোচনার ঝড়।
ফিরোজ খুশি মুসলিম ক্রিকেটার। এসেক্সে জন্ম নেওয়া ২১ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যানের ওপর মদ-জাতীয় পদার্থ ঢালা ভালো চোখে দেখেনি ব্রিটেনের এশিয়ান সমাজ। পূর্ব লন্ডনে জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রতিষ্ঠাতা সাজিদ প্যাটেল সমালোচনা করেন এসেক্স ক্রিকেটারদের এমন আচরণের, ‘বেচারা (ফিরোজ খুশি) বারান্দার কোনায় দাঁড়িয়ে ছিল। নড়তেও পারছিল না। একটা কাজই সে করতে পারত—লাফ দেওয়া। তার গায়ে কারও অ্যালকোহল জাতীয় পদার্থ ঢালার ছবিটা—নারকীয় দৃশ্য।’ তবে বলা হচ্ছে, ফিরোজ খুশির ওপর বিয়ার ঢালাটা স্রেফ আনন্দের আতিশয্যে, এর মধ্যে নেতিবাচক কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।
ফাইনালে ‘দ্বাদশ খেলোয়াড়’ ছিলেন ফিরোজ খুশি। ২১ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান গ্রুপপর্বে ৪ ম্যাচ খেলেছেন এসেক্সের হয়ে। এসেক্সের পক্ষ থেকে ঘটনাটার জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। শিরোপাজয়ের উৎসবটা দেশের ‘মূল্যবোধ’-এর সঙ্গে মানানসই ছিল না বলে মনে করছে কাউন্টি দলটি। ব্রিটেনের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ওপর খেলোয়াড়দের আরও সচেতন করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে এসেক্স। ক্লাবটির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বহুদিন ধরেই জাতিগত বৈচিত্র্য, আলাদা আলাদা ধর্মের ক্রিকেটাররা খেলছেন দলে। ক্লাব এই জাতিগত বৈচিত্র্য নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কঠোরভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তবে খেলায় জাতিগত বৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য নিয়ে খেলোয়াড়দের সচেতন করতে আরও কাজ করতে হবে।’
সাজিদ প্যাটেলের দাবিও ঠিক একইরকম, ‘এর সঙ্গে জড়িত খেলোয়াড়কে জিজ্ঞাসা করতে হবে। সাংস্কৃতিক বিষয়ে খেলোয়াড়দের আরও সচেতন করা উচিত ক্রিকেটারদের সব সংগঠনকে। এসেক্সের শিরোপাজয় দেখাটা দারুণ ব্যাপার। কিন্তু একই সঙ্গে এটা দেখাও ভীতিকর।’ এসেক্সের ঘটনাটা ঘটল এমন এক সময়ে যখন ক্রীড়াঙ্গনে এমনিতেই অস্থিরতা। ব্রিটিশ ক্রিকেটে বর্ণবাদের অভিযোগ উঠছে অহরহ। ইংলিশ পেসার জফরা আর্চারের অভিযোগ নিয়ে কিছুদিন আগে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। কাউন্টির আরেক দল ইয়র্কশায়ারও বর্ণবাদ নিয়ে তদন্ত করছে অভ্যন্তরীণভাবে। তাদের সাবেক স্পিনার আজিম রফিক কিছুদিন আগে বোমা ফাটান, ইয়র্কশায়ারে ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বর্ণবাদী’ আচরণ করা হয়েছে। এখন ব্রিটেনে প্রথম শ্রেণির ১৮টি কাউন্টি দল মিলিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান ও সংখ্যালঘু ক্রিকেটার মাত্র ৩৩জন।