মুশফিককে টপকে রানে শীর্ষে তামিম, পাঁচ বছর পর ওপেনিংয়ে শতরানের জুটি
শ্রীলঙ্কা অলআউট হওয়ার শেষ সেশনে কাল বাংলাদেশ যখন ব্যাটিংয়ে নামছিল ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে তখন থেকেই। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মুকুটটি দীর্ঘদিন ধরেই হাতবদল হচ্ছে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের মধ্যে।
এই টেস্টে তামিম তো অন্য টেস্টে মুশফিক। এবার যেমন তামিমের মাথায় মুকুটটি দেখার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই।
চট্টগ্রাম টেস্ট খেলতে নামার আগে ৬৫ টেস্টে তামিমের রানসংখ্যা ছিল ৪৮৪৮। তাঁর চেয়ে ৮৪ রানে এগিয়ে ছিলেন মুশফিক (৮১ টেস্টে ৪৯৩২ রান)। তামিম কাল ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেন। আজ সকালের সেশনে মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে তাঁর শুরুটাও ছিল জমাট। কোনো সুযোগ দেননি, অযথা ঝুঁকি নেননি। তবে রান তোলার সুযোগ পেলে, স্ট্রোক খেলার বল পেলে তিনি ছাড়েননি।
এভাবে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩২তম অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পথে এ সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিকও হয়ে যান তামিম।
২৪তম ওভারে রমেশ মেন্ডিসকে চার মেরে অর্ধশতক তুলে নেন তামিম। পরের ওভারে ওপেনিং জুটিতে শতরানের দেখাও পেয়ে যান তামিম–মাহমুদুল। গত ৫ বছরের মধ্যে ৬২ ইনিংস পর টেস্টে এটাই প্রথম শতরানের জুটি বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০১৭ সালে গলে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ওপেনিং জুটিতে ১১৮ রান তুলেছিলেন সৌম্য সরকার ও তামিম।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪৩ ওভারে বিনা উইকেটে ১৫২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। তামিম ৮৫ রানে অপরাজিত। টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নিয়ে অন্য প্রান্তে ৫৭ রানে ব্যাট করছেন মাহমুদুল। ৩৮.২ ওভারে ব্যক্তিগত ৫১ রানে পুল করতে গিয়ে ‘জীবন’ পান এই ওপেনার। ফাইন লেগে তাঁর সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি লাসিথ এম্বুলদেনিয়া।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে তামিম যেভাবে ব্যাট করছেন, তাতে শতকের সুবাস পাওয়া যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার কোনো স্পিনার ধনঞ্জয়া, এম্বুলদেনিয়া কিংবা মেন্ডিসদের আজ প্রায় কোনো সুযোগই দেননি তামিম। ব্যক্তিগত ৮৫ রানে মুশফিককে পেছনে ফেলে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক হন তিনি। লঙ্কান স্পিনার এম্বুলদেনিয়াকে ফাইন লেগে এক রান নিয়ে মুশফিককে পেছনে ফেলেন তিনি।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৬৬ টেস্টে তামিমের রানসংখ্যা ৪৯৩৩। মুশফিকের (৩৬.২৬) চেয়ে ব্যাটিং গড়ে এগিয়ে তামিম (৪০.০১)। শতক ও অর্ধশতকসংখ্যায়ও এগিয়ে। ৬০ ম্যাচে ৪০২৯ রান নিয়ে তিনে সাকিব আল হাসান। তামিম আজ টেস্টে সর্বোচ্চ রানে মুশফিকে পেছনে ফেললেও ব্যবধানটা যেহেতু খুব বেশি নয়, তাই কে জানে এই টেস্ট কিংবা পরের টেস্টেই হয়তো আসন ফিরে পেতে পারেন মুশফিক।
তবে দুজনের এই প্রতিযোগিতা যে জমেছে ভালো, তা বলাই বাহুল্য।