মাহমুদুলকে দারুণ লেগেছে ওয়াগনারের
অসাধারণ একটা দিন কাটাল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডকে ৩২৮ রানে গুটিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটিংটাও হলো অসাধারণ। দিনের শেষে ২ উইকেটে ১৭৫ রান তোলা বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলারদের সামনে যে লড়াইটা করেছেন, সেটা এককথায় অনবদ্য। বিশেষ করে নাজমুল হোসেন ও মাহমুদুল হাসানের ব্যাটিং বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া ক্রিকেটকে আশা দেখাচ্ছে। বিশেষ করে নাজমুল ও মাহমুদুলরা ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, নিল ওয়াগনর, কাইল জেমিসনদের বিপক্ষে ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে যেভাবে উতরে গেলেন, মাউন্ট মঙ্গানুইতে তা একটা ইতিহাসই হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের লড়াই দেখে অবাক কিউই বোলাররা। সেটি তাঁদের শরীরী ভাষাতেই পড়া যাচ্ছিল। বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান সুযোগ দিচ্ছেন না, দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছেন, মারার বল পেলে মেরে দিচ্ছেন, এটা হতাশারই জন্ম দিচ্ছিল নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলারদের; বিশেষ করে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের শুকনো উইকেট যেখানে বরাবরই ফাস্ট বোলারদের সহায়তা করে। আর ফাস্ট বোলিংয়ের সামনে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা তো সর্বজনবিদিত।
আজ নিউজিল্যান্ডের পক্ষে দুটি সাফল্য নিল ওয়াগনারের। তিনি অবশ্য পুরোপুরি কৃতিত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের, ‘এটা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদেরই কৃতিত্ব। তারা আসলেই খুব দারুণ খেলেছে। তারা লড়াই করেছে। ধৈর্য ধরে ব্যাটিং করেছে। মাঠের লড়াইটা যথেষ্ট কঠিন ছিল। এটা টেস্ট ক্রিকেটে দারুণ একটা লড়াকু দিন।’
ওয়াগনারের বিশেষ চোখ ছিল তরুণ মাহমুদুল হাসানের দিকে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমে মাহমুদুল দিন শেষে অপরাজিত ৭০ রানে। ২১১ বল খেলা মাহমুদুল আসলেই আজ নিউজিল্যান্ডের বোলারদের পরীক্ষা নিয়েছেন। ওয়াগনার আলাদা করেই বলেছেন মাহমুদুলের কথা, ‘তরুণ ব্যাটসম্যানটি (মাহমুদুল) অসাধারণ খেলেছে আজ। খুব ধৈর্য নিয়ে খেলেছে সে। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের কেউই খুব বেশি সুযোগ দেয়নি আমাদের। উইকেটে টিকে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছে তারা। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের খেলা দেখে মনে হয়েছে টিকে থাকার প্রস্তুতি নিয়েই তারা নেমেছিল। প্রচুর বল ছেড়েছে তারা। তাদের ব্যাটিংয়ে আমরা উইকেট নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছি, যেটি তাদের রান করার সুযোগটা বাড়িয়ে দিয়েছে। খুব ভালো খেলেছে বাংলাদেশ। সব কৃতিত্ব তাদের। মারার বলে মেরেছে। ঠেকানোর বলে খুব সাফল্যের সঙ্গে রক্ষণ করেছে।’
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের কন্ডিশনের কারণেই বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের খেলাটা বেশি অবাক করেছে ওয়াগনারকে, ‘কয়েক দিন ধরে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে খুব বাতাস। সাধারণত, এখানকার কন্ডিশন ফাস্ট বোলারদের সহায়তা করে। বাতাসের কারণে উইকেট শুষ্ক। কিছুটা স্পিনের জন্যও উপযোগী এখানকার পরিবেশ।’
বাংলাদেশ দলটা মোটেও হেলাফেলার নয় বলেই ধারণা ওয়াগনারের। বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা উইকেটে গিয়ে প্রচুর শট খেলেন, এটা তিনি জানেন। কিন্তু আজ মাঠে তিনি অন্য এক বাংলাদেশ দলকেই দেখেছেন এই কিউই সিমার, ‘বাংলাদেশ দলটা যথেষ্ট শক্তিশালী। যখনই তারা নিউজিল্যান্ড সফরে আসে, লড়াইটা ভালোই করে। আমাদের কন্ডিশনে তারা ভালো খেলে। সাকিব আল হাসানের মতো ক্রিকেটাররা অন্য মাত্রার খেলা খেলে। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা প্রচুর শট খেলে। উইকেটে এসেই তারা মারতে চায়। সেটিই উইকেট তুলে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু তাদের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।’