মাশরাফি টেনে ধরলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে
ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেভাবে এগোচ্ছিল তাতে রানের পাহাড় না হলেও বাংলাদেশকে বিশাল লক্ষ্য দেওয়া কঠিন কিছু ছিল না তাদের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। হতে দেননি আসলে মাশরাফি বিন মুর্তজা। ৪১ ও ৪৩—এই দুই ওভারের ৫ বলের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের চাকা আটকে দিয়েছেন ভালোভাবেই। এ ধাক্কায় স্লগ ওভারটা আর ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫০ ওভারে ক্যারিবীয়দের স্কোর ৯ উইকেটে ২৬১ রান।
৪০ ওভারে ২ উইকেটে ১৯৭ রান করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ১০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছে ৬৪ রান। অথচ আজও দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যেমনটা হয়েছিল, তেমনটা হয়নি। ক্যারিবীয়দের উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছে ৮৯ রানে। মিরাজের বলে ৩৮ রান করা আমব্রিস আউট হওয়ার পরপরই সাকিব আল হাসান ফিরিয়ে দিয়েছেন ড্যারেন ব্রাভোকে (১)। ১ রানের মধ্যে ২ উইকেট ফেলে মিরাজ ও সাকিব এ দুই স্পিনারই যা একটু চাপ দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এ চাপ ভালোভাবেই সামলেছেন শাই হোপ-রোস্টন চেজ। দুজন মিলে তৃতীয় উইকেটে ১১৫ রান যোগ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় স্কোর এনে দেওয়ার আশা দিচ্ছিলেন।
বাংলাদেশকে যেন প্রিয় প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছেন হোপ! গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ হারালেও হোপ ছিলেন দুর্দান্ত। ৪৩, ১৪৬*, ১০৮*—অসাধারণ তিন ইনিংসের পর এই ত্রিদেশীয় সিরিজেও দ্যুতি ছড়াচ্ছেন ক্যারিবীয় ওপেনার। আগের ম্যাচে আইরিশদের বিপক্ষে ১৭০ রানের পর আজও পেয়েছেন সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরির ‘হ্যাটট্রিক’ করে ফেলেছেন ক্যারিবীয় ওপেনার। ভেঙে দিয়েছেন ভিভ রিচার্ডসের একটি রেকর্ড। কিংবদন্তি রিচার্ডসকে ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সবচেয়ে দ্রুততম ২০০০ রানের রেকর্ডটি এখন হোপের। ২০০০ রান করতে রিচার্ডসের লেগেছিল ৪৮ ইনিংস, হোপের লাগল সেখানে ৪৭টি।
হোপের মতো তিন অঙ্ক ছোঁয়া না হলেও ২০ রানে জীবন পাওয়া চেজ পেয়েছেন ফিফটি। দারুণ গতিতে ছুটতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আটকাতে হলে সাকিব-মিরাজের সঙ্গে ডাবলিনের মেঘলা আবহাওয়ায় আলো ছড়ানো দরকার ছিল পেসারদের। ৪০ ওভার পর্যন্ত সেটি যেন হচ্ছিল না। ৪১তম ওভারের পঞ্চম বলে চেজকে (৫১) ফিরিয়ে মাশরাফি এনে দিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। নিজের পরের ওভারের প্রথম তিন বলে ফেরালেন হোপ ( ১০৯) আর হোল্ডারকে (৪)। ১০ ওভারে ৪৯ রানে ৩ উইকেট—আজ বাংলাদেশের সেরা বোলার মাশরাফিই। ভালো বোলিং করেছেন সাকিব, মিরাজ ও সাইফউদ্দীনও। শুধু মার খেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১০ ওভারে ৮৪ রান দিলেও বাঁহাতি পেসারের প্রাপ্তি অবশ্য ২ উইকেট। ৪৭ রান দিয়ে সাইফউদ্দীন পেয়েছেন ২ উইকেট। সাকিব-মিরাজ দুজনে পেয়েছেন ১টি করে উইকেট।
উইকেট জমিয়ে রেখে স্লগ ওভারে চড়াও হতে চেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের বোলাররা সেটা হতে দেননি। এখন ব্যাটসম্যানদের কাজ হবে বোলারদের চেষ্টা বৃথা যেতে না দেওয়া।