করোনায় ধুঁকছে ভারত। দেশে ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকায় আইপিএল শেষ না করে এরই মধ্যে ভারত ছেড়েছেন বেশ কয়েকজন বিদেশি ক্রিকেটার। তাঁদের মধ্যে আছেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা, অ্যান্ড্রু ট্রাই ও কেইন রিচার্ডসন। তুলনামূলক কম পারিশ্রমিক পাওয়া সত্ত্বেও স্টিভ স্মিথ আইপিএলের মায়া ত্যাগ না করায় বিস্মিত হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক মার্ক টেলর।
আইপিএলে এখনো ১৪ জন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার আছেন বিভিন্ন দলে। এ ছাড়া কোচ, ধারাভাষ্যকার ও বিশেষজ্ঞ মিলিয়ে আইপিএলের সঙ্গে যুক্ত আছেন প্রায় ৩০ জন অস্ট্রেলিয়ান। করোনায় ধুঁকতে থাকা ভারতে এত অস্ট্রেলিয়ানকে দেখে অবাক হচ্ছেন টেলর। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টেলর বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার এত ক্রিকেটার ওখানে যাওয়ায় আমি কিছুটা অবাক হয়েছিলাম। আপনি যদি প্যাট কামিন্স হন, যে কিনা ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ১৫ কোটি রুপি পাচ্ছে, তাহলে মানা যায়। কারণ, ছয় সপ্তাহের জন্য এত অর্থের টান ফিরিয়ে দেওয়া কঠিন।’
এরপরই স্টিভ স্মিথের ব্যাপারে নিজের বিস্ময় লুকাতে পারেননি টেলর, ‘স্টিভ স্মিথের ব্যাপারটি একটু মজার। কারণ, তাঁর চুক্তি মাত্র সাড়ে তিন লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ২ কোটি ২০ লাখ রুপি)। এটা সামান্য নয়। কিন্তু স্টিভ স্মিথের জন্য এই অঙ্কটা যতটা হওয়া উচিত, ঠিক ততটা বড়ও নয়। ও যেতে রাজি হয়েছে দেখে আমি বিস্মিত হচ্ছি।’ দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলছেন এই ব্যাটসম্যান। এখন পর্যন্ত ৪ ইনিংসে ৮০ রান করেছেন।
আইপিএলে খেলতে থাকা অস্ট্রেলিয়ান আরেক ক্রিকেটার ক্রিস লিনের একটি কথাতেও অবাক হয়েছেন টেলর। ভারতের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার আকাশপথ বন্ধ থাকায় আইপিএল শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিশেষ বিমান চেয়েছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের এই ব্যাটসম্যান। লিনের এই প্রত্যাশা শুনে শ্লেষের সুরে টেলর বলেছেন, ‘আমি মনে করি ক্রিস লিন খুবই দামি কথা বলেছে।’
আইপিএলে থাকা অন্য অস্ট্রেলিয়ানদের ব্যাপারেও নিজের মতটা জানিয়েছেন, ‘পন্টিং ওখানে আছে। ওয়ার্নার, ব্রেট লি আছে। আমার ভালো বন্ধু ব্র্যাড হ্যাডিন, ট্রেভর বেলিস সেখানে কোচিং করাচ্ছে। ওরা টুর্নামেন্ট শেষ করে আসতে চায়, এর বাইরে তেমন কিছু শুনিনি। তারা টুর্নামেন্ট শেষ করবে। অনেক খেলোয়াড় বলেছে, তারা জৈব সুরক্ষাবলয়ে ভালো আছে। কিন্তু টুর্নামেন্ট শেষে তারা কী করবে?’
টেলরের ধারণা মুখে যতই আইপিএলের জৈব সুরক্ষাবলয় নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানাক না কেন, সবাই আসলে দেশে ফিরতে চাইছেন মনে মনে, ‘আমার ধারণা অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় ও কোচরা যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরার আশা করছে। এখন তারা মানসিকভাবে এই অবস্থাতেই আছে।’
সবকিছু ঠিক থাকলে ৩০ মে পর্যন্ত আইপিএল চলবে। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ও কোচরা কি তত দিন মানসিকভাবে নিজেদের শক্ত রাখতে পারবেন?