মাঞ্জরেকার 'পক্ষপাতদুষ্ট' 'অপেশাদার', আইসিসিতে চিঠি
>সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য যে ভারত ঘেঁষা, এ ‘অভিযোগ’ আজকের নতুন নয়। সে অভিযোগটাই এবার আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসির কাছে করেছেন এক অস্ট্রেলিয়ান! মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য একেবারে ‘অপেশাদার’ আদি কুমারের অভিযোগ এমনই!
বিশ্বকাপে ধারাভাষ্য দিতে এসে বিপাকে পড়েছেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। দলকানা ধারাভাষ্য দেওয়ার অভিযোগে এক অস্ট্রেলিয়ান তাঁর নামে নালিশ করেছে আইসিসির কাছে।
ধারাভাষ্যকারদের হতে হয় নিরপেক্ষ। খেলার গূঢ় তথ্য ও তত্ত্বটা দর্শকদের সামনে তুলে ধরার গুরুদায়িত্বটা থাকে তাদের ওপর। দলকানা হওয়ার সুযোগ থাকে সামান্যই। তারপরেও অনেক ধারাভাষ্যকারই মাইক্রোফোনের পেছনে বসে ‘দেশপ্রেমিক’ বনে যান। নিজের দলের গুণকীর্তন হয়ে ওঠে তাদের মূল দায়িত্ব। এমন দেশপ্রেমী ধারাভাষ্য যে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে বিরক্তির উদ্রেক করে—এটা বলা বাহুল্য। এবারের বিশ্বকাপে অনেক ধারাভাষ্যকারই যেন নিজ নিজ দেশের ‘মুখপাত্র’। দলকানা ধারাভাষ্যের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের বিরুদ্ধে। তাঁর ধারাভাষ্য নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আইসিসিকে চিঠি লিখেছেন এক অস্ট্রেলীয় নাগরিক।
মাঞ্জরেকারকে নিয়ে অভিযোগ চিঠি আকারে আইসিসির কাছে গেলেও তাঁর বিরুদ্ধে দলকানা ধারাভাষ্যের অভিযোগ অনেক পুরোনো। সাবেক এ ভারতীয় ক্রিকেটারের ধারাভাষ্য যে নিরপেক্ষ হয়, তা তাঁর পরম বন্ধুটিও মনে হয় স্বীকার করবেন না। বিশেষ করে ২০১৯ বিশ্বকাপে মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য শুনতে শুনতে খেলা দেখাটা যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের কাছে। খেলা দেখতে এসে সারাক্ষণ ভারতের গুণকীর্তন কে-ই বা শুনতে চায়? আইসিসিকে চিঠি লিখে অস্ট্রেলীয় নাগরিক আদি কুমার অভিযোগ করেছেন, মাঞ্জরেকার ধারাভাষ্যকার হিসেবে চরম ‘অদক্ষ’ ও ‘অপেশাদার’
আদি থাকেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। থাকতে না পেরে দুবাইতে আইসিসির অফিস বরাবর চিঠি লিখেছেন তিনি। বলেছেন, ‘সিডনি থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, আইসিসি। সঞ্জয় মাঞ্জরেকার সম্পর্কে আমার কিছু মতামত আছে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ধারাভাষ্য প্যানেলের যে অন্যতম অংশ। তার ধারাভাষ্য আমার কাছে চূড়ান্ত অপেশাদার ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়। এটা ছাড়া, অসাধারণ বিশ্বকাপ আয়োজন করছ তোমরা, ধন্যবাদ।’
মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য কেন বিরক্তিকর, তার দুই-একটা উদাহরণও দিয়েছেন আদি কুমার, ‘ভারতের উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনির সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ধোনিকে দর্শকদের সামনে “উইকেটের পেছনে আমাদের অতন্দ্র প্রহরী” বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন মাঞ্জরেকার। এটা উচিত হয়নি। আপনি একজন ধারাভাষ্যকার। আপনার কোনো পক্ষ থাকতে পারে না। আপনি ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় “আমি”, “আমরা”, এসব শব্দ ব্যবহার করতে পারেন না।’
চিঠি লিখে সে চিঠির একটা ছবি তুলে টুইটও করেছেন আদি কুমার। সঙ্গে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য শুনে আমি বিরক্ত। তাই আইসিসির কাছে নালিশ করেছি।’
দেখা যাক, আদি কুমারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসি কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা, বিশ্বকাপে পক্ষপাতদুষ্ট ধারাভাষ্য বন্ধ হয় কিনা!