মাইক্রোফোন তুলে রাখলেন মাইকেল হোল্ডিং
খেলোয়াড়ি জীবনে তাঁর নাম ছিল ‘হুইস্পারিং ডেথ’। ধারাভাষ্য ক্যারিয়ারে তাঁর একটা নাম ছিল - ক্রিকেটের মরগান ফ্রিম্যান। সেই পরিচিত কণ্ঠ, মার-প্যাঁচ ছাড়া কাউকে আঘাত না করেও নিজের মতটা সরাসরি তুলে ধরা, দারুণ বিশ্লেষণ তাঁকে করে তুলেছিল একটা প্রজন্মের কাছে ক্রিকেট ধারাভাষ্যের অন্যতম আকর্ষণ। সেই মাইকেল হোল্ডিং এবার মাইক্রোফোন তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন। ক্রিকেট ধারাভাষ্যকে বিদায় বলে দিলেন সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলার।
১৯৮৭ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর রেডিও জ্যামাইকায় ধারাভাষ্য শুরু করেন হোল্ডিং। ১৯৯০ সালে টেলিভিশনে আসেন তিনি। ইংল্যান্ড-ভিত্তিক স্কাই স্পোর্টসে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।
গত বছরই অবশ্য অবসরের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন হোল্ডিং, ‘২০২০ সালের পর কতদিন ধারাভাষ্য চালিয়ে যাব সেটা নিশ্চিত নই। এই বয়সে খুব বেশিদূর এগোতে পারব বলে মনে হয় না। এখন আমার বয়স ৬৬—৩৬, ৪৬ বা ৫৬ নয়।’
স্কাইকেও তখন নিজের ভাবনার কথা জানিয়ে রেখেছিলেন তিনি, ‘আমি স্কাইকে বলেছি, একসঙ্গে এক বছরের বেশি সময় চুক্তি করতে পারব না। এ বছর (২০২০ সালে) যদি খেলা আর না হয়, তাহলে হয়তো ২০২১ সাল নিয়ে আবারও ভাবতে হবে। কারণ স্কাই থেকে হুট করে চলে যেতে পারি না, এ কোম্পানি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে।’
গত বছর করোনাভাইরাসের সময় শুরু হয়েছিল ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনে স্কাইয়ে সরব হয়ে উঠেছিলেন হোল্ডিং, পেয়েছেন প্রশংসা। এ বছর ‘হোয়াই উই নিল, হোয়াই উই রাইজ’ নামে একটা বইও লিখেছেন তিনি, সেটিও সমাদৃত হয়েছে।
হোল্ডিংয়ের অবসরের ঘোষণা ছড়িয়ে পড়ার পর সরব হয়েছে টুইটারও। আরেক ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ লিখেছেন, ‘তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার প্রথম দিন থেকেই তিনি ছিলেন স্নেহশীল, সমঝদার, আমাকে উৎসাহ দিতেন, এমনকি আমি তালগোল পাকিয়ে ফেললেও। তাঁকে বন্ধু ও মেন্টর বলতে পারাটা আমার জন্য সৌভাগ্যের। আমাকে যে শিক্ষা তিনি দিয়েছেন, আমি সেটার জন্য কৃতজ্ঞ থাকব। সেটা উদ্যাপন করে যাব আমি।’
কিউই অলরাউন্ডার জেমস নিশাম লিখেছেন, ‘আইকনিক! আধুনিক যুগে বাম্বলের (ডেভিড লয়েড) পাশাপাশি আমার প্রিয় ধারাভাষ্যকার। আশা করি অবসর উপভোগ করবেন।’
আর সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক ও এখনকার আরেক ধারাভাষ্যকার মাইকেল ভন টুইট করেছেন, ‘মাইকেল হোল্ডিং কিংবদন্তি বোলার… ধারাভাষ্যকার… আন্দোলনকারী। তবে এর চেয়েও বড় মানুষ, যাঁকে কমেন্ট্রি বক্সে দারুণ মিস করব। অবসর জীবন ভালো কাটুক, মাইকি!’