ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তামিম
>টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ‘ডাক’ মারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ৭৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন তামিম ইকবাল। ম্যাচসেরা এই ব্যাটসম্যান জানালেন, আগের ম্যাচের ভুল থেকে শিখেছেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে নির্ভেজাল শূন্য। পরের ম্যাচে দ্যুতিময় ৭৪। শূন্য থেকে শিখরে (পড়ুন সেঞ্চুরি) উঠতে না পারলেও তামিম ইকবাল যে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তার প্রমাণ এ দুটি সংখ্যা—০ ও ৭৪।
৪৪ বলে ৭৪ রানের ইনিংসটি খেলে তামিম আউট হয়েছেন ১৬তম ওভারের শেষ বলে। তার আগের ৫ বল থেকে নিয়েছেন ২২ রান। বোঝাই যাচ্ছিল, ধীরে ধীরে চড়ে বসতে শুরু করেছেন ক্যারিবীয় বোলারদের ওপর। শেষ পর্যন্ত খেলতে পারলে হয়তো সেঞ্চুরিটাও তুলে নিতে পারতেন। তা না পারলেও বাংলাদেশের ইনিংসের সুর-তাল-লয় বেঁধে দিয়েছে তামিমেরই ব্যাট। আগের ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তামিম নিজের ইনিংসটা টেনেছেন যত দূর সম্ভব। তাতে অবশ্য এ বছর একটি মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেললেন তামিম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০০ রানের মাইলফলক।
দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামার আগে এই মাইলফলক থেকে ৬৫ রান দূরে ছিলেন তামিম। ১৬তম ওভারের চতুর্থ বলে রাসেলকে চার মেরে টপকে যান ১০০০ রানের মাইলফলক। এ বছর চার টেস্টে তামিমের রানসংখ্যা ১৬৩। ১২ টি-টোয়েন্টিতে ৩০৭ আর ৮টি ওয়ানডে খেলে করেছেন ৫৩৯ রান। মাইলফলকের সঙ্গে জয়ের মুখও দেখায় চনমনে তামিম জানালেন, ‘চাপটা এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপর। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আমরা হয়তো সেভাবে খেলতে পারিনি কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে সব সময় আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’
সেন্ট কিটসে প্রথম ম্যাচের কথা মনে করে দেখুন। সমর্থকেরা থিতু হয়ে না বসতেই তামিম আউট! ইনিংসের প্রথম বলেই ডাউন দ্য উইকেট এসে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার। তামিম দ্রুতই ফিরে গেলে বাংলাদেশের ইনিংসও যে বেশি বড় হয় না তার আরেকটি নজির ছিল সেই প্রথম ম্যাচ—৯ উইকেটে ১৪৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। আর আজ শুরু থেকেই তামিম থিতু হয়ে খেলায় এবং শেষ দিকে সাকিবের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে স্কোরটা ১৭০ টপকেছে।
বোলাররা এই সিরিজে ফেরার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ করলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার তামিমের হাতেই উঠেছে। প্রথম ম্যাচে ‘ডাক’ মারার পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে এই ওপেনারের মানসিকতাই বেশি কাজ করেছে। ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রতিজ্ঞা থেকেই এমন দারুণ একটি ইনিংস খেলেছেন তামিম। জয়ের পর তাঁর ভাষ্য, ‘সেন্ট কিটসে যে শট খেলে আউট হয়েছিলাম, সেটি আসলে ব্যাট লাগবে বলে ভেবেছিলাম। আজ শুরুতে নিজেকে সময় দিয়ে পরে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
তামিম যে সেই চেষ্টায় সফল তা বলাই বাহুল্য। তাঁর এই চেষ্টাকে শেষ পর্যন্ত স্বার্থকতায় রূপ দিয়েছেন তাঁর-ই সতীর্থ সাকিব। ৩৮ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সতীর্থের প্রশংসা করে তামিম বলেন, ‘সাকিব অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছে। সে আমার ওপর থেকে চাপ কমিয়েছে। শুরুতে তাঁর বাউন্ডারিগুলোয় রানের চাকা সচল ছিল।’
বাংলাদেশ দলের মতো তামিমও লডারহিলের উইকেটে প্রথমবারের মতো ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলেন। এখানে প্রথম ম্যাচেই রান পাওয়ায় ‘উইকেটটা পছন্দ হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন তামিম। কাল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটাও গড়াবে এই একই মাঠে। তাহলে তামিমের কাছ থেকে আরও বড় ইনিংস তো আশা করাই যায়!