ভীষণ নার্ভাস ছিলেন তামিম
>বিপিএলে একেবারেই রান পাচ্ছিলেন না তামিম ইকবাল। পরপর দুটি শূন্য মেরেছিলেন ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো। তবে খুলনার বিপক্ষে কাল রাতের ম্যাচে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন। ইনিংসটি খেলার আগে নাকি ভীষণ নার্ভাস ছিলেন তামিম
অবশেষে রান পেলেন তামিম ইকবাল। এবারের বিপিএলে প্রচণ্ড রান-খরায় ভুগছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টানা দুই ম্যাচে ‘শূন্য’ মেরেছিলেন আগের ম্যাচেই। সে কারণে শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল অনেকটাই অগ্নিপরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় তামিম উতরে গেছেন রীতিমতো লেটার মার্কস নিয়ে। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বললেন, ব্যাটিংয়ে নামার আগে নাকি ভীষণ নার্ভাস ছিলেন।
ফর্ম না থাকলে যেকোনো ব্যাটসম্যানই প্রচণ্ড স্নায়ুর চাপে ভোগেন। কিন্তু তামিম জানালেন এমনটা নাকি তাঁর আগে কখনোই হয়নি,‘আমার মনে হয় না গত সাত-আট বছরে আমি এত নার্ভাস ছিলাম কোনো খেলার আগে। আমি স্যারকে বলছিলাম (কুমিল্লা কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন), “স্যার আমার খুব ভয় লাগছে।” তিনি তাঁর মতো করে আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন। এমনকি শহীদ আফ্রিদি এসে তাঁর গল্পগুলি বলছিল। ওরাও বুঝেছিল আমার অবস্থা। আমি একদমই স্বাভাবিক ছিলাম না। আমার মনে হয় না কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচেও আমি এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি।’
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের আগের ম্যাচেই সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তামিম ইকবাল। খুব ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন সেদিন তিনি। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পরপর দুটি ম্যাচে ‘শূন্য’ মারার পরেও তাঁর ফুরফুরে মেজাজ দেখে সবাই বেশ অবাকই হয়েছিলেন। বিপিএলে সেদিন পর্যন্ত নিজের বাজে ফর্ম স্বীকার করে নিয়ে বাংলাদেশ ওপেনার বলেছিলেন , তিনি তাঁর রান-খরা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন। কারণ তিনি জানেন, কেবল একটি ইনিংসই পুরো পরিস্থিতি পাল্টে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট! সে আরাধ্য ইনিংসটি তিনি পরের ম্যাচেই খেললেন। কিন্তু সেটি খেলার আগে স্নায়ুচাপ যে তাঁকে এভাবে আক্রমণ করবে তা কিন্তু তিনি ভাবেননি।
খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে ব্যাটের দাপটে সেই চিরাচরিত তামিমকেই খুঁজে পাওয়া গেল। তামিমের মতো ব্যাটসম্যান যখন রান পান, তখন দল তো হারতে পারে না। সিলেটে শুক্রবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে তাই তামিমের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস জিতল বেশ সহজেই। তামিমের ৪২ বলে ৭৩ রানের দারুণ ইনিংসটি যে এই জয়ের মূল সেটি বলতে তো আর খুব বড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার পড়ে না। তবে তামিম যদি আরও একটু সময় ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেতেন, তাহলে বোধ হয় কুমিল্লাকে এত কষ্ট করে ম্যাচটা জিততে হতো না। একটা সময় তো পেন্ডুলামের মতো ম্যাচটা একবার কুমিল্লার দিকে হেলছিল তো আরেকবার যাচ্ছিল খুলনার দিকে।
ফর্মে ফেরার ইনিংসটি খেলার একপর্যায়ে তামিমের ভয়টা কেটে যায়। তবে মাঠ নেমেও তিনি স্নায়ুচাপটা প্রথমে কাটিয়ে উঠতে পারেননি, ‘প্রথম ছক্কাটা মেরেই সাহসটা আসে। প্রথম বাউন্ডারিটাও মনে হয়েছে হঠাৎ করেই হয়ে গেল। ছক্কাটা মারার পর সাহস এল। পরে একটা দুইটা সিঙ্গেল আসার পর ভালো বোধ করা শুরু করলাম। আসলে আমি যে ধরনের ব্যাটসম্যান, তাতে রানটা খুব বড় ব্যাপার। আমি কতটুকু বল খেলেছি এটার চেয়েও আমি কত রান করলাম, সেটা গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। পাঁচ বল যদি ২০ রান করে ফেলি, সেই বিশটি রানই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
আগের ম্যাচের পর বলেছিলেন একটা ভালো ইনিংস দরকার তাঁর ফর্মে ফেরার জন্য। তবে ফর্ম নিয়ে তাঁর অনুধাবনের জায়গাটা আর দশজনের মতো নয়, ‘আমার মনে হয় একজন ব্যাটসম্যান যখন খারাপ ফর্মে, দুই-তিনটা ইনিংসে সে খারাপ ফর্মে নাও চলে যেতে পারে। আবার হঠাৎ করেই একটা ইনিংস খেলে সে ভালো ফর্মে চলে আসে না। এই মুহূর্তে আমি নিজেকে মনে করব না যে ফর্মে চলে এসেছি। তবে আমি হারানো বিশ্বাসটা খুঁজে পেয়েছি পরের খেলার জন্য। ফর্মে এসেছি কিনা সেটা বলতে পারব না।’