এক দেশ, দুটি দল। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ভারতের একটি দল টেস্ট সিরিজ খেলবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাঠে। ঠিক তার আগেই জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের আরেকটি দল খেলবে সীমিত ওভারের সিরিজ। দুই দলের খেলোয়াড় তালিকা বলছে, শ্রীলঙ্কায় অপেক্ষাকৃত দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়েছে ভারত আর এতেই খেপেছেন অর্জুনা রানাতুঙ্গা। এটি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের জন্য অপমান বলে মনে করেন বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক। রানাতুঙ্গার মন্তব্যের পর চুপ করে বসে থাকেনি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডও।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ টেস্ট সিরিজের জন্য বিরাট কোহলির নেতৃত্বে বর্তমানে ইংল্যান্ডে আছেন ভারতের শীর্ষ সারির ক্রিকেটাররা। শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করা দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিখর ধাওয়ান। লঙ্কা সফরে থাকা দলটিতে আছেন পৃথ্বি শ ও হার্দিক পান্ডিয়ার মতো ইংল্যান্ড সফর থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটাররা। সঙ্গে আছে বেশ কিছু নতুন মুখও।
দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন ভারতের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির প্রধান রাহুল দ্রাবিড়। শ্রীলঙ্কা সফরে থাকা এই দলটিকে মেনে নিতে পারছেন না রানাতুঙ্গা। শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বকাপ জেতানো এই অধিনায়ক ভারত দল নিয়ে বলেন, ‘এটি দ্বিতীয় সারির ভারতীয় দল এবং তাদের এখানে আসাটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য অপমানের।’
শ্রীলঙ্কার ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক রানাতুঙ্গা সরাসরি আঙুল তুলেছেন বোর্ডের দিকে, ‘আমি বর্তমান প্রশাসনকেই দোষ দেব, তারা শুধু টেলিভিশন বাণিজ্যের চাহিদা মেটাতেই তাদের সঙ্গে খেলতে রাজি হয়েছে। ভারত তাদের সেরা দলকে পাঠিয়েছে ইংল্যান্ডে, আর এখানে দুর্বল একটা দল। আমি তো বোর্ডকেই দোষ দেব।’ অতীতে শ্রীলঙ্কা বোর্ডে ছিলেন রানাতুঙ্গা। যখন ‘ক্ষমতায়’ ছিলেন, তখন এমন কিছু হয়নি বলেও দাবি তাঁর। বর্তমান বোর্ডকে বাদ দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন একটা কমিটি গঠনের দাবিও তুলেছেন তিনি। এ বছরের মে মাসেই নির্বাচিত হয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের বর্তমান বোর্ড।
১৩ জুলাই থেকে শুরু হবে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের ৩ ওয়ানডের সিরিজ, এরপর তারা খেলবে তিনটি টি-টোয়েন্টি। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কা গেছে ভারত। সে দল নিয়ে রানাতুঙ্গার এমন মন্তব্যের পর চুপ করে বসে থাকেনি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড।
রানাতুঙ্গার দিকে ইঙ্গিত করে ভারতীয় দলটি সম্পর্কে এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘বিভিন্ন পক্ষের দাবি থাকা সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড ঘোষণা করছে যে ভারতের ২০ সদস্যের দলের ১৪ জনের তিন সংস্করণ বা কোনো সংস্করণে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এটি কোনো দ্বিতীয় সারির দল নয়।’ লঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড আরও বলেছে, ‘বিশ্ব ক্রিকেটে এটাই এখন স্বাভাবিক। বিশেষ করে আইসিসির পূর্ণ সদস্যদেশগুলো সব সংস্করণের জন্যই আলাদা দল প্রস্তুত রাখে।’
সাম্প্রতিক সময়ে এমন এক দেশের দুই দলের কাছাকাছি সময়ে দুটি সিরিজ খেলার ঘটনা একেবারেই নতুন নয়। ২০১৭ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর ভারত একই সঙ্গে দুই সিরিজ সবশেষ খেলেছিল ১৯৯৮ সালে—কুয়ালালামপুরে কমনওয়েলথ গেমস ও কানাডায় সাহারা কাপে। শেষ ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার খেলার কথা ছিল একসঙ্গে দুটি সিরিজ—নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। যদিও শেষ মুহূর্তে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর স্থগিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া।