ভাইকিংস দেখাল, তারাও পারে আশ্চর্য ব্যাটিং

অধিনায়কই একমাত্র ধৈর্যশীল ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছিলেন। ছবি: প্রথম আলো
অধিনায়কই একমাত্র ধৈর্যশীল ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছিলেন। ছবি: প্রথম আলো

বিপিএলের এমন বিজ্ঞাপনই চেয়েছিল দর্শক?

এত এত তারকা হাজির হয়েছেন ষষ্ঠ বিপিএলে। তারকাদের সবার পরিচয় তাঁরা সবাই ব্যাটসম্যান। বিপিএলের উদ্বোধনের আগে তাই বলা হয়েছে, চার-ছক্কার উৎসব শুরু হচ্ছে আজ। তা, বিপিএল শুরু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু চার-ছক্কার উৎসব? সে কথা আর পাতে তোলা যাবে না। বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে এক শ রান তুলতেই ঘাম বেরিয়ে গেল রংপুর রাইডার্স ও চিটাগং ভাইকিংসের। ঘাম ঝরিয়ে দেওয়া এক ম্যাচ শেষে জয়ের হাসিটা জুটেছে চিটাগংয়ের কপালে। ৫ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে গতবারে সবার শেষে থাকা দলটি।

১৫তম ওভারে এসে পঞ্চাশ পেরোনো রংপুর চার-ছক্কার বিজ্ঞাপন করতে পারেনি। ২০ ওভারে গুনে গুনে ১০ বার বল সীমানা পেরিয়েছি। ৮টি চার ও ২ ছক্কায় ২০ ওভারে ৯৮ রান তুলেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এমন স্কোর টি-টোয়েন্টিতে ১০ ওভারেই টপকে যেতে পারে অনেক দল। কিন্তু প্রথম ইনিংসে রাইডার্স ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং দেখে যে অনুপ্রাণিত হয়েছেন ভাইকিংসের ব্যাটসম্যানরাও। মিরপুরের উইকেটের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের দায়ও কম নয়। ইনিংসের প্রথম বল থেকে আত্মহত্যার ইচ্ছা দেখা যাচ্ছিল। প্রথম বলে টপ এজ দিয়েও বেঁচে গেছেন মোহাম্মদ শেহজাদ। পরের ওভারে আবার!

তবে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরার দৌড়ে তাঁকে পেছনে ফেলে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। অনেক আলোচনার জন্ম দিয়ে বিপিএলে খেলতে আসা মোহাম্মদ আশরাফুলও আউট হলেন ওভাবে। লেগ সাইডে ফ্লিক করতে গিয়ে অফ সাইডে ক্যাচ দিলেন শেহজাদ (২৭)। ১৯ রানে দুই উইকেট হারাল চিটাগং। কিন্তু দৃষ্টিকটু ব্যাটিং দিয়েই দলকে রান এনে দিচ্ছিলেন শেহজাদ। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৩২ রানের এক জুটি গড়ে ফিরলেন আফগান ওপেনারও। সিকান্দার রাজা ও মোসাদ্দেক হোসেন উইকেটে নামলেন, কিছু বল নষ্ট করলেন। তারপর দলকে মহা বিপদে ফেলে আউট হয়ে গেলেন দুজন। ১৩তম ওভারে পঞ্চম উইকেট হারানো ভাইকিংসের রান তখন ৬২।

নাঈম হাসান একটু আস্থা দিচ্ছিলেন মুশফিককে। কিন্তু সে আস্থা নিজেই চুরমার করে দিলেন মাত্রই আক্রমণে আসা মাশরাফিকে অযথা মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে। অন্যদের আত্মহত্যা দেখতে দেখতে ক্লান্ত মুশফিকও (২৫) আত্মহত্যা করলেন ১৭তম ওভারে। চট্টগ্রামের জয়ের জন্য তখনো দরকার ১৪ রান, হাতে উইকেট মাত্র ৩। বোলিংয়ের নায়ক রবি ফ্রাইলিং ও সানজামুলের কাঁধেই চলে এল সব দায়িত্ব। জয় থেকে ১০ রান দূরে ক্যাচ দিয়েছিলেন ফ্রাইলিংক। নিজের বলে সোহাগ গাজী সেটা ধরতে পারলেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যেত তখন।

ফ্রাইলিংক এমন সুযোগ আর দেননি। মূল ব্যাটসম্যানরা যা করতে পারেনি, সেটাই করে দেখালেন। শুধু স্ট্রাইক রোটেট করেই ম্যাচটা বের করে নিলেন সানজামুল ও ফ্রাইলিংক। ৯৮ রান তাড়া করতে ১৯.১ ওভার ব্যয় করে জয় দিয়ে বিপিএল শুরু করল চিটাগং ভাইকিংস। চার-ছক্কা মারায় রংপুরের চেয়েও আপত্তি ছিল চিটাগংয়ের। পুরো ইনিংসে মাত্র ৮ চার ও ১ ছক্কা।

বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে মাত্র ১৯টি বাউন্ডারি। চার-ছক্কার ক্রিকেটের খুব ভালো বিজ্ঞাপন বলা যাচ্ছে কি?