ব্যাটিং নাকি অধিনায়কত্ব, কোনটা বেছে নেবেন মুমিনুল
দল জিতছে না। নিজেও রান পাচ্ছেন না। এই দ্বিমুখী চাপে বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুমিনুল হকের পিষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা। অধিনায়কত্বের বাড়তি চাপ ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলছে কি না, এ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে মুমিনুল তাঁর অধিনায়কত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। টিম ম্যানেজমেন্ট ও বোর্ডপ্রধানের সঙ্গে আরেকবার এ নিয়ে মুমিনুলের বসার কথা।
আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মুমিনুলকে অধিনায়ক করেই টেস্ট দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। এরপর মুমিনুল–অধ্যায় কোন দিকে মোড় নেবে, সেটা জানা যাবে সেই বৈঠকের পর। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস এই আভাসই দিয়েছেন।
সাংবাদিকদের ইউনুস বলেছেন, ‘অধিনায়কত্ব বাড়তি একটা চাপ অবশ্যই। ব্যাটিং করার সময় সে রান না পাওয়ায় হয়তো বাকিদের অনুপ্রাণিত করতে সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু রান করছে না, একটা হীনম্মন্যতা থাকতে পারে। সেটা থেকেই হয়তো চাপ বেশি হয়ে যাচ্ছে। ব্যাটিংয়েও এর একটা প্রভাব পড়তে পারে। হয়তো সে সিদ্ধান্ত নেবে কোনটা হলে ওর ভালো হয়। এটা নিয়েই আমাদের সঙ্গে বসার কথা আছে। প্রেসিডেন্ট সাহেব আসুক, এটা নিয়ে আলাপ করব।’
এ ব্যাপারে মুমিনুলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ মিরপুর টেস্টের দুই ইনিংসে ৯ ও ০ রান করেছেন মুমিনুল। এ নিয়ে টানা সাত ইনিংসে দশের কমেই আউট হলেন এই বাঁহাতি। গত বছর পাকিস্তান সিরিজ থেকে শুরু করে ১৫ ইনিংসে মাত্র তিনবার তিনি দুই অঙ্কে যেতে পেরেছেন।
ব্যাটিং সমস্যার সমাধানের জন্য অবশ্য কঠোর পরিশ্রম ঠিকই করে যাচ্ছেন মুমিনুল। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরে বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা ও কোচ নাজমুল আবেদীনের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা কাজ করেছেন তিনি।
অনুশীলন শেষে নাজমুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুমিনুল বেশ লম্বা সময় ধরেই একটা খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ সময় অনেকে ভালো করতে গিয়ে আরও খারাপ করে ফেলে। এগুলো করতে করতে মূল থেকেই সরে যায়। তাই মৌলিক দিকগুলো নিয়েই একটু কাজ করেছি। আমার মনে হয় একসময় মৌলিক দিকটা ভালো ছিল, এখন সেটা নেই।’
মুমিনুল দ্রুতই সমস্যা কাটিয়ে ছন্দে ফিরবেন, এমনই আশা নাজমুল আবেদীনের, ‘মৌলিক দিকটা নিয়েই কাজ করেছি। আগের চেয়ে দেখতে ভালো লাগছে। আরও দু–এক দিন কাজ করলে ভালো হবে। মৌলিকতা থেকে বাইরে চলে গেলে এ পর্যায়ে ব্যাটিং করা খুব কঠিন। এটাই মূল কারণ। তাড়াতাড়ি কেটে গেলে ভালো করবে। দেখে মনে হচ্ছে বেশ কিছু বিষয় ঠিক হয়েছে, ব্যাটে-বলে ভালো হচ্ছে। আমার মনে হয় সামনে অনেক ভালো করবে।’
শুধু যে কৌশলগত সমস্যার সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে, তা কিন্তু নয়; মুমিনুলকে অধিনায়কত্বের চাপও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তবে সেই চাপ থেকে বেরিয়ে আসার দায়িত্বটাও যে মুমিনুলেরই। ‘মুমিনুল রান করলে অধিনায়কত্ব নিয়ে এত কিছু বলতাম না। যেহেতু ভালো করছে না, এটা নিয়ে চাপ হচ্ছে—এমন কথা উঠবেই। সে প্রশ্নের উত্তর তাকে দিতে হচ্ছে। একটু চাপ তো থাকবেই,’ বলেছেন নাজমুল আবেদীন।