এ ম্যাচের আগেই বলেছিলাম, বিশ্বকাপে এখন ব্যক্তিগত কিছু অর্জন লক্ষ্য হওয়া উচিত। তবে সেটার জন্য কোনো প্রচেষ্টা দেখলাম না। ইংল্যান্ড পরিষ্কার একটা লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। এ ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের কোনো অর্জন দেখি না।
ওপেনিং নিয়ে শুরু থেকেই একটা দুর্ভোগ যাচ্ছে। লিটনের মতো এমন সুযোগ পৃথিবীর কোনো ব্যাটসম্যান পায় কি না, জানি না। এ দিনও দুটি চারের ঝলকের পর বাস্তবতাটা আগের মতোই দুঃখজনক। এটাই বলে দেয় দলের অবস্থাটা কী। একজন খেলোয়াড়ের এতবার ব্যর্থ হওয়ার পরও যখন প্রথম একাদশে জায়গা নিশ্চিত হয়, দল তার কাছ থেকে ভালো শুরু আশা করে, তখন দলের ছবিটাই ফুটে ওঠে। সাকিব ওপরের দিকে রান না পেলে কী হয়, সেটা এ ম্যাচেও দেখতে পেলাম। শুরুতে বা শেষে দ্রুত রান তোলার তাগাদাও দেখলাম না বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের। বোলাররাও গড়পড়তা বোলিং করে গেল। খুবই দুর্ভাগ্যজনক, শুধুই নিয়মরক্ষার ম্যাচ মনে হলো এটাকে।
প্রথম তিন ম্যাচে দুই ফিফটি করে নাঈম ইঙ্গিত দিয়েছিল টুর্নামেন্টে ছন্দে থাকার। তবে আমার মনে হয়, শুধু শট খেলার সামর্থ্যটাই সব নয়। ইনিংস গঠনের পরিকল্পনা করতে হয়। উইকেট যাওয়ার পর ইনিংসের গতিতে পরিবর্তন আনার ব্যাপারটা বা সব মিলিয়ে কতটা ঝুঁকি নেওয়া যায়—এসবের বোধ ও এর প্রতিফলন থাকাটা জরুরি।
মুশফিককে নিয়ে আবারও বলতে হয়—উইকেটের সামনের দিকেও যে রান করা যায়, সেটা তার আরেকটু ভাবা দরকার। তার মতো ব্যাটসম্যানের সব সময় রিভার্স সুইপ বা স্কুপ করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভবিষ্যতে কে কত দিন বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলবে বা সুযোগ পাবে—আমি জানি না। এ টুর্নামেন্টটা তাই উপভোগ করা উচিত। মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, আফিফের কাছ থেকে কিছু স্মরণীয় ইনিংস চাই। কিছু একটা, যেটা নিয়ে গর্ব করা যায়। কিছু পারফরম্যান্স দিয়ে অন্তত বিশ্বকে দেখানো, আমাদের পারফর্ম করার মতো কিছু খেলোয়াড় আছে। বিশ্বকাপ থেকে আমরা ছিটকে গেছি। বাংলাদেশ সামনের ম্যাচগুলোতে দল হিসেবে কতটা কার্যকর হতে পারবে, সেটা নিয়ে সংশয় আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ হয়তো ফিরে আসবে, আমাদের জন্য সেটা অনেক কঠিন। বাজেভাবে ছিটকে গেলাম এমন একটা মঞ্চ থেকে।
সাইফউদ্দিনের চোটটা ভাবনায় ফেলে দিল এর আগে। শুরু থেকেই চোটপ্রবণ সে। এ বিশ্বকাপে দেখতে চাচ্ছিলাম সাইফউদ্দিন পুরো টুর্নামেন্টে নিজের ফিটনেসটা ধরে রাখতে পারে কি না। এখন আমার মনে হচ্ছে, তাকে ব্যাটিং অলরাউন্ডারে পরিণত করার দিকে নজর দেওয়া উচিত বাংলাদেশের।
টানা বোলিংয়ের ধকল তার শরীর নিতে পারবে কি না, সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্তে আসা উচিত। তার ব্যাটিংয়ের সামর্থ্য আছে, সেটা কাজে লাগানো যায়। দলের সঙ্গে একজন রিজার্ভ হিসেবে ছিল, তাকেই নেওয়া হলো। জানি না এরপর বিসিবির পরিকল্পনা কী। সামনে আরও অন্তত তিনটা ম্যাচ আছে, রিজার্ভ জায়গাটা শূন্যই রেখে দেওয়া হবে নাকি? কারণ, দেশে এখন দীর্ঘ সংস্করণের ঘরোয়া লিগ হচ্ছে, সেখানে টি-টোয়েন্টির জন্য প্রস্তুত কাকে পাওয়া যাবে, নিশ্চিত নয়। আবার এখন তো জৈব সুরক্ষা বলয়ের জটিলতাও আছে।