২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের 'সুপারম্যান' - একটা ক্যাচ হবে, ক্যাচ?

বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
বিশ্বকাপে আজ নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান এ ম্যাচে ব্যাটে-বলে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে তো সোনায় সোহাগা। তবে শুধু একটি ক্যাচ নিলেই কিংবদন্তি অলরাউন্ডারদের অভিজাত এক তালিকায় নাম লেখাবেন বর্তমান ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানীয় এ অলরাউন্ডার

সুপারম্যান? তা ছাড়া আর কী! সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ডিসি কমিকসের সুপারহিরোর মিলটাও বেশ। শহরের মানুষ বিপদে পড়লে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন ক্রিপটন গ্রহের সুপারহিরো। সাকিবও তেমনি বুক চিতিয়ে লড়েন খেলার মাঠে বাংলাদেশ বিপদে পড়লে। এবার বিশ্বকাপে তা যেন পূর্ণতা পাওয়ার পথে। প্রায় সব ম্যাচেই সাকিব ভীষণ ধারাবাহিক। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকতে না পারলেও যতটুকু এসেছে তাতে সাকিবের অবদানই বেশি। সাকিব তাহলে বাংলাদেশের সুপারহিরো নয় তো আর কী!

তাও যেনতেন সুপারহিরো নন রীতিমতো সব্যসাচী সুপারহিরো। ব্যাট-বল হাতে যাঁর দুটি হাতই সমানে চলে। ফিল্ডার হিসেবেও থাকবেন সেরাদের কাতারে। আজ ব্যাটে-বলে পারফর্ম করতে পারলে তো সোনায় সোহাগা, পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করার জ্বালানি পাবে বাংলাদেশ। তবে ‘ল অব অ্যাভারেজ’ বলেও তো একটা কথা আছে! ক্রিকেটারেরা তো আর ফ্যানের সুইচ নন যে টিপলেন পারফর্ম করতে শুরু করল! মানে, সব ম্যাচেই প্রচুর রান করা কিংবা ৪-৫টা করে উইকেট নেওয়া আসলে অসম্ভব। এর চেয়ে সব ম্যাচে অন্তত একটি হলেও ক্যাচ নেওয়ার সুযোগটা বেশি। আজ কি সাকিবের ভাগ্যে ক্যাচের শিকে ছিঁড়বে? অন্তত একটা ক্যাচ!

লর্ডসে আজ পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে পড়ায় বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হওয়ায় ব্যাটে-বলে সাকিবের পারফর্ম করার যেমন ভালো সম্ভাবনা আছে তেমনি ক্যাচ নেওয়ার সম্ভাবনাও একেবারে কম নেই। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিবের ক্যাচ ভাগ্য বেশ ভালোই। ৬টি ক্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের হয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ। এবার আসা যাক আসল কথায়। ক্যাচ নিয়ে এই কচকচানির হেতু—ওয়ানডে পরিসংখ্যানের খাতা খুলে মনে মনে একটা তালিকা তৈরি করুন। ন্যূনতম ৫০০০ রান, ২৫০ উইকেট আর ৫০টি ক্যাচ। অলরাউন্ডারদের বেশ অভিজাত তালিকা, তাই না?

শুধু অভিজাত নয় বেশ চ্যালেঞ্জিং-ও। নইলে ওয়ানডের এই ৪৭ বছরের ইতিহাসে তালিকাটিতে মাত্র তিনজন অলরাউন্ডার জায়গা করে নিতে পারতেন না। আরও বেশি অলরাউন্ডারের উঠে আসার কথা। বোঝাই যাচ্ছে এ তালিকায় নাম লেখানো চাট্টিখানি কথা নয়। নামগুলো একবার দেখুন—সনৎ জয়াসুরিয়া (১৩৪৩০ রান, ৩২৩ উইকেট, ১২৩ ক্যাচ), জ্যাক ক্যালিস (১১৫৭৯ রান, ২৭৩ উইকেট, ১৩১ ক্যাচ) ও শহীদ আফ্রিদি (৮০৬৪ রান, ৩৯৫ উইকেট, ১২৭ ক্যাচ)।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই তিন কিংবদন্তির ক্যারিয়ার মোটামুটি দুই দশক করে। স্বাভাবিকভাবেই রান, উইকেট আর ক্যাচসংখ্যায় তাঁদের পরিসংখ্যান এমন সমৃদ্ধই হওয়ার কথা। কিন্তু এ তিনজনের পরই রয়েছে বেশ বড় একটা শূন্যতা। তালিকার চতুর্থ ক্রিকেটারটির ওয়ানডে ক্যারিয়ার ১৩ বছর চলছে। রানসংখ্যা ৬ হাজার ২৫৯, উইকেটসংখ্যা ২৬০ আর ক্যাচসংখ্যা ৪৯। তিনি সাকিব আল হাসান। আর মাত্র একটি ক্যাচ নিতে পারলেই ন্যূনতম ৫০০০ রান, ২৫০ উইকেট আর ৫০টি ক্যাচ নেওয়া অলরাউন্ডারদের অভিজাত তালিকায় সাকিব নাম লেখাবেন চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে।

এখানে ক্যাচসংখ্যা কিংবা রানসংখ্যায় পিছিয়ে সাকিবের পেছনে রয়েছেন অনেক কিংবদন্তি। আশ্চর্যের ব্যাপার, তাঁরা সবাই সাবেক ক্রিকেটার। বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে কেউ এখানে সাকিবের ধারে কাছেও নেই!

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের সাত ম্যাচের সাকিবকেই দেখতে চাইবেন সমর্থকেরা। আজও তাঁর চওড়া ব্যাট আর বিষমাখা বোলিংয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটলে বাংলাদেশের লাভই সবচেয়ে বেশি। এর পাশাপাশি সমর্থকেরা নিশ্চয়ই প্রার্থনা করবেন—সাকিবের হাতে যেন অন্তত একটি ক্যাচ আসে। সে সম্ভাবনা অবশ্য এমনিতেও কম নয়। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান তো ৫০০-৫৫০ রান করতে চেয়েছে। এই রান করতে গেলে শুধু মাটি কামড়ানো শটে হবে না, তুলেই মারতে হবে বেশি। সাকিব প্রস্তুত থাকবেন, আজ ক্যাচ আসার দিন, রেকর্ড-মুকুটে আরেকটি পালক যোগের দিন!

  খেলোয়াড়

ম্যাচ

  রান

উইকেট

ক্যাচ

সনা্থ জয়াসুরিয়া

৪৪৫

১৩৪৫০

৩২৩

১২৩

জ্যাক ক্যালিস

৩২৮

১১৫৭৯

২৭৩

১৩১

শহীদ আফ্রিদি

৩৯৮

৮০৬৪

৩৯৫

১২৭

সাকিব আল হাসান

২০৫

৬২৫৯

২৬০

৪৯