বাংলাদেশকে হারানো মেয়ার্স আইসিসির স্বীকৃতির অপেক্ষায়
বাংলাদেশকে চমকে দিয়েছিলেন কাইল মেয়ার্স। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিলেন অভিষেকে অনবদ্য এক ডাবল সেঞ্চুরিতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ–বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজে তাঁর সেই ডাবল সেঞ্চুরিই ছিল ক্যারিবীয়দের বড় প্রেরণা। সেই ডাবল সেঞ্চুরি নিশ্চিত হারের মুখে দাঁড়িয়েও চট্টগ্রাম টেস্ট তো জিতিয়ে ছিলই, ঢাকাতেও দ্বিতীয় টেস্ট জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে করে তুলেছিল আত্মবিশ্বাসী।
সেই মেয়ার্সই ফেব্রুয়ারিতে আইসিসির মাস–সেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি এ সম্মানের জন্য লড়বেন ইংল্যান্ডের জো রুট, ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিনদের বিপক্ষে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন অনলাইনে বেছে নেবেন ফেব্রুয়ারির সেরা ক্রিকেটারকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করে মেয়ার্স নিজেকে চিনিয়েছিলেন। চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ৪০ করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশি বোলারদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করেই দলকে জিতিয়েছেন। ৩৯৫ রানের বড় লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ সহজে পেরিয়ে যেতে পেরেছিল তাঁর ডাবল সেঞ্চুরিতেই।
সেই ডাবল সেঞ্চুরির মহিমা ছিল অন্য মাত্রার। অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি করা কেবল ষষ্ঠ ক্রিকেটার তিনি। ইতিহাসে নিজেকে অমরত্ব দিতে এতটুকুই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু মেয়ার্স ডাবল সেঞ্চুরিটি টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে করে পরিসংখ্যানে নিজেকে অনন্য করে রেখেছেন।
ভোটের হিসাবে ৯০ শতাংশ ভার বা গুরুত্ব থাকবে এই ভোটিং প্যানেলের ভোটের। বাকি ১০ শতাংশ ভার দর্শক ভোটের। তবে এ জন্য আইসিসির ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ভোটারদের।
টেস্টের চার নম্বর ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ড যে নেই আর কারোরই। অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি প্রথম এসেছিল ১১৮ বছর আগে। মেয়ার্সের ডাবল তাই যেকোনো হিসাবেই মেয়ার্সকে ফেব্রুয়ারি মাসের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেয়।
মেয়ার্স, রুট, অশ্বিনদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে মাঠের পারফরম্যান্স বিচার করে। রুট, অশ্বিনদের সঙ্গে মেয়ার্সের জোর লড়াই হবে, সন্দেহ নেই। তবে চূড়ান্ত বিজয়ী নির্বাচিত হবেন আইসিসির স্বাধীন ভোটিং প্যানেল ও সারা দুনিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীদের ভোটের ভিত্তিতে। আইসিসির এই ভোটিং প্যানেলে আছে বিখ্যাত ক্রিকেট লিখিয়েরা, আছে সাবেক ক্রিকেটার আর টেলিভিশন সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান। আইসিসির হল অব ফেমে স্থান পাওয়া তারকাদের কয়েকজনও মাসের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচনে ভোট দেবেন।
ই–মেইলের মাধ্যমে ভোট দেবেন ভোটিং প্যানেলের সদস্যরা। ভোটের হিসাবে ৯০ শতাংশ ভার বা গুরুত্ব থাকবে এই ভোটিং প্যানেলের ভোটের। বাকি ১০ শতাংশ ভার দর্শক ভোটের। তবে এ জন্য আইসিসির ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ভোটারদের। আইসিসির বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা করা হবে বিজয়ীর নাম।
অভিষেক সিরিজ খেলার পরপরই আইসিসির এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত মেয়ার্স, ‘এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে খুব ভালো লাগছে। বিশেষ করে ক্রিকেটের কয়েকজন দুর্দান্ত তারকার সঙ্গে এতে মনোনীত হওয়াটা দারুণ ব্যাপার। বাংলাদেশে গিয়ে নিজের প্রথম টেস্টটা খেলার সময় আমার মাথায় ডাবল সেঞ্চুরির চিন্তাও ছিল না। আমার মাথায় ছিল দলের চিন্তা। যে কেউই যখন নিজ দেশের হয়ে প্রথমবারের মতো মাঠে নামে, তখন সে দুর্দান্ত কিছুই করতে চায়। আমি চেয়েছিলাম একটা সেঞ্চুরি করে দলকে জেতাতে। দলের জয়ই ছিল আমার মূল ভাবনা।’