বাংলাদেশকে ছোট করার আগে পরিসংখ্যান দেখুন আফ্রিদি...
>আরব আমিরাতে চলছে পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। এই সিরিজে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রেখেছে পাকিস্তান। সিরিজের আগে এই বিষয়ে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদিকে সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করেছিলেন। উত্তরে বোর্ডের সমালোচনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশকেও হেয় করেছেন। প্রশ্ন হলো, আফ্রিদি কি আদৌ সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সাম্প্রতিককালে নিজ দেশের রেকর্ড সম্পর্কে ধারণা রাখেন?
‘দেখুন, সিরিজটা যদি বাংলাদেশ বা জিম্বাবুয়ের মতো র্যাঙ্কিংয়ের ষষ্ঠ-সপ্তম বা অষ্টম দলের সঙ্গে হতো, তাহলে নাহয় বোঝা যেত যে বিশ্বকাপের আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেওয়ার যৌক্তিকতা আছে। কিন্তু সিরিজটা অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী এক দলের সঙ্গে। বিশ্বকাপের আগে এমন শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেললে ওই সব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের কারণেই হয়তো আমরা বেশ কিছু ম্যাচ জিততাম, যেটা বিশ্বকাপের আগ দিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিত। আমার মনে হয় তারা দলের সঙ্গে থাকলেই ভালো হতো। এমন তো না যে তারা ১৫-২০ বছর ক্রিকেট খেলেছে, তারাও তো কয়েক দিন আগে থেকেই খেলা শুরু করেছে। তাই তাদের দলে রাখলেই বোধ হয় ভালো হতো।’
ওপরের কথাগুলো শহীদ আফ্রিদির। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক। তাঁর কথায় ঝরেছে বাংলাদেশের প্রতি তীব্র অবজ্ঞা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এখন আরব আমিরাতে আছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে এ সিরিজে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছে পাকিস্তান। দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ, নেই বাবর আজম ও ফখর জামানের মতো ব্যাটসম্যান। হাসান আলীর মতো বোলারকেও দলে রাখেনি তারা। তাদের দলে না রাখা কি ঠিক হয়েছে কি না, সিরিজের আগে এই ব্যাপারে এক সংবাদ সম্মেলনে আফ্রিদিকে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি এভাবেই বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে আসেন। কিন্তু কথা শুনে মনে হতেই পারে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজ দেশ পাকিস্তানের রেকর্ড সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা তাঁর নেই।
নিজে যখন ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ ছিল নিতান্তই শিশু। সে সময়ে বাংলাদেশের যে পারফরম্যান্স ছিল, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচগুলোর যে ফল ছিল, আফ্রিদি বাংলাদেশকে এখনো ঠিক তেমনটিই দেখেন। অথচ, তাঁর হয়তো মনে নেই গত চার বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফেবারিট অবস্থানেই আছে বাংলাদেশ।
২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ আর পাকিস্তান ক্রিকেটের তিন সংস্করণে মুখোমুখি হয়েছে নয়বার। আফ্রিদি বোধ হয় জানেন না, সেই নয় ম্যাচের মধ্যে ছয়বারই হেরে মুখ কালো করে মাঠ ছেড়েছেন পাকিস্তানিরা। নয় ম্যাচে দুই দল খেলেছে তিনটি টি-টোয়েন্টি, চারটি ওয়ানডে আর দুটি টেস্ট। দুটি টেস্টের একটি ড্র ও একটিতে জিতলেও ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পাচ্ছে না পাকিস্তান। তিন টি-টোয়েন্টির দুটিতেই হেরেছে, হেরেছে চারটি ওয়ানডের প্রত্যেকটিতে।
ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান ছয়ে, বাংলাদেশ সাতে। ওয়ানডেতে তাই বাংলাদেশকে এভাবে তুচ্ছ করার আগে দুই দলের সাম্প্রতিক মুখোমুখি পরিসংখ্যানটা দেখলেই হয়তো ভালো করতেন, আফ্রিদি!